বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
বর্তমানে সাইকোলজিস্টদের চাহিদা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনও বয়সের মানুষই মানসিক এবং আবেগজনিত সমস্যা থেকে ভুগতে পারেন। ‘ডিপ্রেশন’ বা হতাশা তো এখন ঘরে ঘরে থাবা বসিয়েছে। হিসেব বলছে, বর্তমানে ভারতীয়দের প্রায় ৪.৫ শতাংশ হতাশাজনিত রোগে ভুগছেন।
হতাশার সঙ্গে উদ্বেগ যুক্ত হয়ে তা এমন মারাত্মক চেহারা নিচ্ছে যে, অনেকে তার ফলে আত্মহত্যা করতেও বাধ্য হচ্ছেন। সমাজে মনোবিজ্ঞানীদের চাহিদা এমনভাবে বাড়ছে কেন, তা বুঝতে অবশ্য কোনও বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা সহ সব বিষয়ে সেরা হওয়ার জন্য বিপুল চাপ এসে পড়ছে শিশুদের উপর। নিজেদের মতো করে কাটাবার একটু সময়ের বড়ই অভাব তাদের কাছে। এইভাবে বড় হয়ে ওঠার পর আসছে কাজের জগতে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ, প্রতি মাসে টার্গেট বা লক্ষ্যপূরণ করার চাপ। শেষ পর্যন্ত এই চাপ নিতে না পেরে অনেকেই মনোবিজ্ঞানীদের চেম্বারে নাম লেখাতে বাধ্য হচ্ছেন।
সাইকোলজিস্টরা মূলত মানসিক, আবেগজনিত এবং আচরণ বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসা করেন। মানুষের মধ্যে প্রাণোচ্ছ্বলতা ফিরিয়ে আনতে, অন্তরের শক্তি আবিষ্কার করতে সাহায্য করেন তাঁরা। সাইকোলজিতে বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। তার মধ্যে কাউন্সেলিং এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি হল দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা যেমন শিশুদের সঙ্গে বড়দেরও মানসিক এবং আবেগজনিত সমস্যার চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকেন। তাঁরা শিশুদের ‘লার্নিং ডিস্যাবিলিটিজ’, অর্থাৎ শিক্ষার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেন, টিনএজার বা কিশোর-কিশোরী এবং যুবাদের আবেগজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকেন এবং বয়স্কদের বিভিন্ন মানসিক রোগ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেন। সিজোফ্রেনিয়া রোগ এবং ডিপ্রেশন বা হতাশা তাঁদের বিশেষ চিকিৎসার ক্ষেত্র। মনোবিজ্ঞানীদের মধ্যে যাঁরা কাউন্সেলিং বেছে নেন, তাঁদের জন্য আর দু’টি আকর্ষনীয় জায়গা হল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং এবং কর্পোরেট কাউন্সেলিং। অন্যদিকে, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের মূল কর্মক্ষেত্র হল কোনও সরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি ক্লিনিক। এর মধ্যে যাঁরা একটু উদ্যোগী, তারা আবার নিজের মতো করে চেম্বার করার কথাও ভাবতে পারেন।
তবে কাউন্সেলিং বা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বা অন্য যে কোনও ক্ষেত্রই পেশা হিসেবে বেছে নিন না কেন, সব মনোবিজ্ঞানীকেই আবশ্যিকভাবে রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (আরসিআই)-এর সঙ্গে রেজিস্টার করতে হবে। এছাড়া ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট হিসেবে প্র্যাকটিস করার জন্য মনোবিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর আরসিআই অনুমোদিত কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে এমফিল পর্যন্ত পড়াশোনা করতে হবে।
দেশের যেসব সেরা কলেজ মনোবিজ্ঞানে স্নাতক পাঠ দিচ্ছে তারা হল:-
ফার্গুসন কলেজ, পুনে
দিল্লি ইউনিভার্সিটি
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, নয়াদিল্লি
ক্রাইস্ট ইউনিভার্সিটি, বেঙ্গালুরু
অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটি, কলকাতা
এনএসএইচএম নলেজ ক্যাম্পাস, কলকাতা
লরেটো কলেজ, কলকাতা
আম্বেদকর ইউনিভার্সিটি, নয়াদিল্লি
আমেটি ইউনিভার্সিটি
ইউনিভার্সিটি অব মুম্বই
মনে রাখতে হবে, তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে শুধুমাত্র স্নাতক হওয়া যথেষ্টে নয়। ভালো চাকরি পেতে হলে স্নাতকোত্তর পাঠও জরুরি। তবে, মনোবিজ্ঞানীদের চাহিদা বর্তমানে বিরাট। তাই ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে এমফিল করে কোনও প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেলে শুরুতেই ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেতন মেলাটা স্বাভাবিক।
(ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার
এনএসএইচএম স্কুল অব হেলথ সায়েন্স, কলকাতা)