বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
এমবিএ কোর্সের মধ্যে রয়েছে মার্কেটিং, সেলস, ফাইন্যান্স, হিউম্যান রিসোর্স, ইনফরমেশন টেকনোলজি সহ অনেকগুলি বিষয়। দু’বছরের এমবিএ পড়ার সময় শিক্ষার্থীকে ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে বিশদে জানাতে এবং দক্ষ পেশাদার করে তুলতে কারিকুলামকে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। এর জন্য প্রথম বছর ম্যানেজমেন্টের পাঠক্রম থাকে। এবং দ্বিতীয় বছর শিক্ষার্থীকে চয়েস করে নিতে হয় কোনও একটি বিষয়। সঠিক বিষয় সিলেকশন করাটাই এসময় গুরুত্বপূর্ণ। এই স্পেশালাইজেশন একজন শিক্ষার্থীকে সুপ্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে।
স্পেশালাইজেশন করা যায় এমন ১০টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে-
১) এমবিএ ইন ফিন্যান্স- এই বিষয়টির মধ্যে থাকে কস্টিং, বাজেটিং, ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স, ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট।
২) এমবিএ ইন মার্কেটিং– বিজনেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন বিষয় মার্কেটিং। যেকোন পণ্যের চাহিদা বাড়াতে বা পণ্যটি সম্পর্কে ধারনা দেওয়া অথবা পণ্যের বিজ্ঞাপন কেমন হতে পারে সব দিকে লক্ষ্য রাখে মার্কেটিং। ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র বা বড় মাপের পণ্যরই মার্কেটিং করতে হয়। সেক্ষেত্রে এই বিষয়টি এমবিএ-এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৩) এমবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স – যেকোন কোম্পানীতে মানব সম্পদ এক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। বিশেষ স্কিল না থাকলে এই সম্পদকে ব্যবহার করা যায় না। এর জন্য এগিয়ে আসে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট। পুরোপুরি ইন্ডাস্ট্রি বেসড এই কোর্স । এইচআর ম্যানেজার, এইচআর এক্সিকিউটিভ, পার্সোনেল ম্যানেজার বা ম্যানেজমেন্ট ট্রেনি হিসাবে কাজ মেলে।
৪) এমবিএ ইন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস – মার্কেটিং, ফিন্যান্স, অর্গানাইজেশনাল ক্যাপিটাল নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে যে লেনদেন হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করে এই বিষয়টি।
৫) এমবিএ ইন অপারেশন – প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বা শপ ফ্লোর ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা দিয়ে থাকে এই বিষয়টি। ভেন্ডার এবং ইন্টার ডিপার্টমেন্টাল কাজের প্রকৃতি, প্রোডাকশনের ফ্লো ঠিক রাখা এইগুলি কীভাবে মেন্টেন করা যাবে এমবিএ ইন অপারেশন সেটা দেখে। বিই বা বি-টেক ইঞ্জিনিয়ারদের এই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ থাকে।
৬) এমবিএ ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি – ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং কমিউনিকেশন টেকনোলজি কাজের বাজের গতি আনতে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকে। আর এই ব্যবস্থাকে ব্যবসা বানিজ্যের মধ্যে প্রয়োগ করার জন্য পড়ে নেওয়া যায় এমবিএ ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি।
৭) এমবিএ ইন সাপ্লাই অ্যান্ড চেন ম্যানেজমেন্ট - বর্তমানে চাহিদার স্পেশালাইজেশন সাপ্লাই অ্যান্ড চেন ম্যানেজমেন্ট। পণ্য বিক্রয়স্থল থেকে ক্রেতার হাত পর্যন্ত পৌছানোর পুরো কাজটি করার যে প্রক্রিয়া সেটাই এই বিষয়ের অন্তর্গত।
৮) এমবিএ ইন রুরাল ম্যানেজমেন্ট - রুরাল এরিয়াতে বিজনেস করার বা মার্কেট ধরার বড় সুযোগ রয়েছে। এসব জায়গায় কাজ করার জন্য প্রয়োজন হয় সুদক্ষ পেশাদারের। এর জন্য ভালো মতো ফিল্ড ওয়ার্ক করার প্রয়োজন থাকে। আবার দরকার সঠিক জ্ঞানের। এগুলিই দেখে রুরাল ম্যানেজমেন্ট।
৯) এমবিএ ইন এগ্রি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট – কৃষিজাত পণ্য কীভাবে বাজারজাত করা যায়। তার জন্য কেমন প্ল্যানিং হওয়া প্রয়োজন, কোন কোম্পানী মারফৎ বাজারজাত করা যায়, আবার কৃষিকাজে ব্যবহৃত মেশিন বিক্রির জন্য মার্কেটিং করা সব কিছু সম্পর্কে ধারনা তৈরি করে দেয় এগ্রি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট।
১০) এমবিএ ইন হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্ট – হেলথ স্কেটরের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দিকে নজর দেওয়া, স্বাস্থ্য বীমা সংক্রান্ত বিষয় দেখা এবং ম্যানেজমেন্টের দিকটি ভালো মতো দেখার জন্য হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্টে স্পেশালাইজেশন করা যায়।
জেনারেল এমবিএ ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি স্পেশাল এমবিএ—
মাস্টার ইন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন – পাবলিক সিস্টেম
এই বিষয়টি পড়ার সময় স্পেশালাইজেশন করা যায় এনার্জি ম্যানেজমেন্ট, এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট, হেলথ কেয়ার অ্যান্ড হসপিটাল ম্যানিজমেন্ট বা ট্রান্সপোর্টেশন অ্যান্ড লজিস্টিক ম্যানেজমেন্টে। সামাজিক বিষয়গুলিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে এই ম্যানেজমেন্ট কোর্সটি গড়ে উঠেছে।
এই কোর্সে ভরতির জন্য ম্যাট, ক্যাট, সিম্যাট, জেইম্যাট, গেট, বা জিম্যাট এর মাধ্যমে ভরতি হতে হয়।
মাস্টার ইন হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড অর্গনাইজেশনাল ম্যানেজমেন্ট -
এই ম্যানেজমেন্ট কোর্সটিতে রয়েছে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে দুবছরের ফুল টাইম স্পেশালাইজেশন কোর্স করার সুবিধা। এই কোর্সে ভরতির জন্য আর্টস, সায়েন্স বা কমার্সে তিন বছরের অনার্স পাশ হতে হবে। আবার ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, মেডিকাল সায়েন্স বা প্রফেশনাল কোর্সে ব্যাচলর ডিগ্রি থাকতে হবে। ক্যাট, ম্যাট বা ন্যাশনাল লেভেলএর কোন টেস্টে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে।
এমবিএ ইন রিটেল ম্যানেজমেন্ট
রিটেলের দুনিয়াতে কাজের ক্ষেত্র অনেক বড়। এই মার্কেটে কাজ করতে চায়লে, ভালো আকাদেমিক এক্সেলেন্স থাকলে, অভিজ্ঞতা থাকলে এবং লিডারশিপ করার ক্ষমতা থাকলে এই কোর্সটি করা যায়। এই কোর্সে ভরতির জন্য কমার্স, আর্টস বা সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট বা কোন প্রফেশনাল কোর্সে গ্র্যাজুয়েট অথবা বি ই, বি-টেক, বিবিএ বা পাঁচ বছরের এলএলবি পাশ করলেও আবেদন করা যায়। ক্যাট এবং ম্যাট-এর স্কোরের উপর নির্ভর করে ভরতি নেওয়া হয়।
এমবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট
ছোট বা বড় প্রতিষ্ঠানে এইচআর ম্যানেজার বা হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজারদের রাখা হয়। মূলতঃ এদের কাজ হল প্রতিষ্ঠানের এমপ্লয়িদের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা প্রদান করা। এর জন্য বিভিন্ন পলিসি তৈরি করা সেটা প্রয়োগ করা। আবার সংস্থায় কোন হ্যারাসমেন্ট বা ডিস্ক্রিমিনেশন হচ্ছে কিনা সেটাও দেখা। আর এগুলিকে বাস্তবায়িত করার জন্য রিক্রুটমেন্ট, পারফর্ম্যান্স অ্যাপ্রাইজাল তৈরি করা সবই থাকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজারদের হাতে। এইচআর ম্যানেজার হওয়ার জন্য পড়ে নেওয়া যায় এমবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট। কোর্স ওয়ার্কের মধ্যে থাকে অ্যাকাউন্টিং, বিজনেস অ্যানালিসিস, ইকোনমিক্স, ফিন্যান্স ম্যানেজমেন্ট, অর্গনাইজেশনাল ডেভলপমেন্ট, মার্কেটিং প্রভৃতি।
আর্টস, সায়েন্স বা কমার্সে অনার্স গ্র্যাজুয়েট হলে এবং সিম্যাট বা ম্যাট পরীক্ষায় পাশ হলে ভরতির জন্য আবেদন করা যায়। এর পর গ্রুপ ডিসকারশন বা ভাইভা থাকে। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং –টেকনোলজি, মেডিসিন বা প্রফেশনাল কোর্স যারা করেছেন তারাঁও আবেদন করতে পারেন। এমবিএ ইন এইচআরএম পড়ে কেবলমাত্র এইচআর ম্যানেজার হওয়া যায় এমন নয়। অ্যাফার্মেটিভ অফিসার বা পেরোল ডিরেক্টার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানাভাবে এইচআরএম পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে থাকে।
এমবিএ ইন ট্যুরিজম
আকর্ষনীয় এমবিএ কোর্সগুলির মধ্যে অন্যতম এমবিএ ইন ট্যুরিজম। ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে এই কোর্সটি।
আর্টস, সায়েন্স, কমার্স বা যেকোন সোসাল সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট হলে, ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, ফার্মাসি, এগ্রিকালচার এ ৬০ শতাংশ নম্বর নিয়ে গ্র্যাজুয়েট হলে আবেদন করা যায়। ম্যাট স্কোর দেখে ভরতি নেওয়া হয়।