গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
ব্লকগুলির সকল পানচাষিদের এই ছায়াজাল পদ্বতিতে পানচাষ করাতে নাছোড়বান্দা জেলার উদ্যানপালন দপ্তর। সেজন্য মালদহ জেলার চাষিদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিতে হাওড়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও পাঠাতে রাজি হয়েছেন ওই দপ্তরের কর্তারা। জানা গিয়েছে, আগে প্রচার করা হলেও চাষিদের মধ্যে ছায়াজাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। তাই এবার সরাসরি মাঠে নেমে চাষিদের বোঝাতে চাইছে এই দপ্তর।
মালদহ জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের উপ অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু নন্দন বলেন, ছায়াজালের মাধ্যমে এখন রাজ্যের সর্বত্র পান চাষ হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে প্রাথমিকভাবে খরচ বেশি হয়। কিন্তু লাভও বেশি হয়। সেই খরচের অর্ধেক মেটানোর ব্যবস্থা করে দেবে আমাদের দপ্তর। তাই উদ্যানপালন দপ্তরের এই বিষয়ে বাড়তি আগ্রহ রয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও হাওড়ার অধিকাংশ জায়গায় এভাবেই পানচাষ হয়। আমরা এর আগে জেলার চাষিদের এই বিষয়ে বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা ওই পুরনো ধাঁচে পাটকাঠি দিয়েই পানচাষে বেশি আগ্রহী। কারও নতুন পদ্বতি সম্পর্কে আগ্রহ নেই। যার জন্য জেলার কোনও ব্লকেই আমরা এই নতুন পদ্বতি চালু করতে পারেনি। আমরা ইতিপূর্বে অনেক জায়গায় প্রচার করেছিলাম। ব্যর্থ হয়েছি। তবে আমরা হাল ছেড়ে দেব না। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, প্রতিটি ব্লক ধরে প্রচারে আরও জোর বাড়াব। সব ভালো করে বুঝিয়ে দেব পাওয়ার পয়েন্ট প্রদর্শনীর মাধ্যমে। এই চাষের জন্য কী কী করতে হবে সেসব তথ্য সরাসরি দেখানো হবে। এই চাষে খরচ একটু বেশি হয়। তিন কাঠা পানের বরজ করতে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে আমাদের দপ্তর থেকে খরচের অর্ধেক দিয়ে সাহায্য করা হবে। কিন্তু পাটকাঠির খরচ কম বলে সবাই ওই দিকেই ঝুঁকে রয়েছেন। আমরা যদি দু-চার জন আগ্রহী চাষিকেও পেয়ে যাই, তাহলেই মালদহ জেলায় এই চাষ শুরু করে দেব। সেই লক্ষ্য নিয়েই এবার মাঠে নামব। আগ্রহী চাষিদের দক্ষিণ ২৪ পরগানা ও হাওড়ায় প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে। বামনগোলার পানচাষিরা বলেন, এর আগে আমাদের এই চাষের বিষয়ে বলা হয়েছিল। কিন্ত এই পদ্ধতিতে চাষ করতে গেলে মোটা অঙ্কের মূলধন লাগে। ঋণ নিয়ে চাষ করতে হয়। উদ্যানপালন দপ্তর আর্থিক সহায়তা করার আশ্বাস দিলেও সেই টাকা কবে পাব তার ঠিক নেই। সরকারি টাকা দেরি করেই আসে। এসব ভেবেই আমরা আর এগিয়ে যাইনি। আমাদের বলা হয়েছিল বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। ফোন নম্বর উদ্যানপালন দপ্তরে দিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখনও ফোন আসেনি। আমরাও আর যোগাযোগ করিনি। যদি তাঁরা আবার প্রচার করতে আসেন, তবে আমরা ভেবে দেখব। মালদহ জেলায় সব চেয়ে বেশি পান চাষ হয় বামনগোলা, ভালুকা, চাঁচল ও হবিবপুরে। এই এলাকাগুলিতে সবচাষিরা পাটকাঠি দিয়েই পুরোনো ধাঁচেই পানচাষ করতে বেশি আগ্রহী। উদ্যানপালন দপ্তর অনেক দিন ধরেই ছায়াজালের মাধ্যমে চাষ করার পরামর্শ দিয়ে আসছে। কারণ প্রাথমিকভাবে খরচ বেশি হলেও, এই পদ্ধতিতে চাষ করলে পানচাষিরা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে বেশি লাভবান হবেন।