রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
কারণ, নিড়ানি দিলে কন্দ কেটে যাওয়ার ভয় থাকে। কন্দ লাগানোর ৪৫ দিন ও ৯০ দিন পর নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করা যেতে পারে। দক্ষিণ দিনাজপুরের উদ্যানপালন আধিকারিক ড. সমরেন্দ্রনাথ খাঁড়া জানিয়েছেন, একাঙ্গী চাষে জমির আর্দ্রতা বুঝে ১৫-২০ দিন পর পর চারবার সেচ দিতে হবে। জমি তৈরির সময় শেষ চাষের আগে বিঘায় ৪-৬ গোরুর গাড়ি গোবর সার দিতে হবে। রাসায়নিক সার দিতে হবে দু’বার। কন্দ বসানোর ৪৫দিন পর প্রথমবার ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি ইউরিয়া, কন্দ বসানোর ৯০ দিন পর ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি ইউরিয়া দিতে হবে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে শুকিয়ে এলে সরু কোদাল দিয়ে একাঙ্গী তুলতে হয়। তোলার পর শুকনো পাতা ছড়িয়ে জলে মাটি ধুয়ে নিতে হবে। তার পর গোল গোল করে কেটে মেঝেয় ফেলে চারদিন শুকাতে হবে। চতুর্থদিনে কন্দগুলি জড়ো করে সারারাত রেখে দিতে হবে। পরদিন আবার সেগুলি ছড়িয়ে দিয়ে শুকাতে হবে। তার পর ঠাণ্ডা জায়গায় একাঙ্গী মজুত রাখতে হবে। বিঘায় ২ হাজার কেজি কাঁচা কন্দ পাওয়া যায়। শুকালে ওজন দাঁড়ায় ৬৬০ কেজি। বীজ ও মাটি বাহিত ছত্রাক দ্বারা একাঙ্গী গাছ আক্রান্ত হতে পারে। এতে গাছ হলুদ হয়ে শুকিয়ে যায়। কন্দের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। গাছ মারা যায়। একাঙ্গীর ধসা রোধে প্রতি লিটার জলে কার্বেন্ডাজিম ১২ শতাংশ, ম্যানকোজেব ৬৩ শতাংশ ডব্লুপি ২ গ্রাম গুলে স্প্রে করতে হবে। ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে গাছের গোড়ায় ও পাতায় জল বসা দাগ দেখা যায়। গাছ হলুদ হয়ে শুকিয়ে মারা যায়।
আক্রান্ত জায়গা থেকে কন্দের টুকরো কেটে কাচের গ্লাসে জলে ভিজিয়ে রাখলে কিছুক্ষণ পর জল ঘোলাটে হয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে স্ট্রেপটোমাইসিন ৯১.৪ শতাংশ, টেট্রাসাইক্লিন ৪ শতাংশ এসপি ২০ লিটার জলে ২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। একাঙ্গী চাষে কীটনাশকের তেমন কোনও খরচ নেই। তবে জমি ভেজানোর দিনে ২-৩ কেজি কার্বেন্ডাজিম ৩ জি প্রয়োগ করলে ভালো। এতে কাটুই পোকা দমন করা যায়। মুর্শিদাবাদের রানিনগর দু’নম্বর ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহা জানিয়েছেন, সীমান্ত লাগায়া অঞ্চলে বেশি উচ্চতার ফসল পাট, ভুট্টা চাষ করতে দেয় না সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কারণ, তাতে তাদের প্রহরায় সমস্যা হয়। এইসব এলাকায় চাষিরা অনায়াসেই একাঙ্গী চাষ করতে পারেন। পাটের তুলনায় একাঙ্গীর উৎপাদন হার ভালো। তবে যে জমিতে একাঙ্গী চাষ করা হবে, তাতে যেন জৈববস্তুর পরিমাণ বেশি থাকে। একাঙ্গীর সঙ্গে মুগ, অড়হর ডাল ও মাচায় পটল চাষ করা যেতে পারে। একাঙ্গী চাষে মোটামুটি আট থেকে দশমাস সময় লাগে। রানিনগরে প্রায় হাজার তিনেক কৃষক একাঙ্গী চাষের সঙ্গে যুক্ত। ৮০০ হেক্টর এলাকায় এর চাষ হচ্ছে।
তবে কৃষকদের অনেকেই একাঙ্গীর চাষ করলেও সেভাবে যত্ন নেন না। ঠিকমতো চাষ করলে এক বিঘা একাঙ্গী চাষ করে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। এই চাষে খরচ খুবই কম। বিক্রির সমস্যাও নেই। কলকাতার বড়বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যান। তার পর তাঁরা রপ্তানি করে থাকেন।