পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
ক্যাপসিকামের বীজ মাটির ২ সেমি গভীরে পুঁতে উপরে ঝুরো মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তার পর হাল্কা জল স্প্রে করে খড় দিয়ে ঢেকে দিতে পারলে ভালো। এক সপ্তাহ পর চারা বেরতে দেখা যাবে। চারা বেরনোর পর খড় সরিয়ে মশারি দিয়ে ঢেকে দিতে পারলে ভালো। চারার গোড়া যাতে পচে না যায়, সেজন্য ব্যাভিস্টিন বা ডাইথেন ব্যাভিস্টিন মিশ্রণ ১ গ্রাম প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে হবে। চারার বয়স ১৬ দিন হলে ইমিডাক্লোপ্রিড ১ মিলি প্রতি লিটার জলে মিশিয়ে আঠা সহযোগে স্প্রে করতে হবে। এতে সাদামাছির আক্রমণ প্রতিহত করা যায়। ফলে ভাইরাস ঘটিত পাতা কোঁকড়ানো রোগের আশঙ্কা কমে। ক্যাপসিকামের এটিই অন্যতম রোগ। গাছের সমস্ত পাতা লঙ্কার মতো কুঁকড়ে যায়। সাদা মাটি ওই ভাইরাসের বাহক। একবার এই রোগের আক্রমণ হলে তখন আর কিছু করার থাকে না। ফলে আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-গবেষক দীপক ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁরা ক্যাপসিকামের বিভিন্ন জাতের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটাচ্ছেন। এতে ক্যাপসিকামের রং ও আকার আরও ভালো হচ্ছে। বাগান বিলাসিরা টবেও ক্যাপসিকাম ফলাতে পারেন। তবে সাদা মাছির আক্রমণ রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। ক্যাপসিকামের চারার বয়স ১৫ দিন হলে মোনো অ্যামোনিয়াম ফসফেট ৩ গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে পারলে শিকড় ও গাছের স্বাস্থ্য ভালো হয়। একমাস বয়সের চারা ৩-৪টি পাতা হলে তখন ওই চারা মূল জমিতে বসানো উচিত। হলুদ রঙের ক্যাপসিকামের উন্নত জাতগুলি হল, অ্যাঞ্জেল, গোল্ডেন ইয়েলো, অর্কা গৌরব, ইয়েলো ওয়ান্ডার। লাল রঙের ক্যাপসিকামের উন্নত জাত, অদিতি, আশা, ক্যালিফোর্নিয়া ওয়ান্ডার। কমলা রঙের ক্যাপসিকামের উন্নত জাত, কালার-৮, আইএসপি-৭। বেগুনি রঙের ক্যাপসিকামের জাত নিকিতা। কালো রঙের ক্যাপসিকামের জাত স্পিনাজ। সাদা রঙের ক্যাপসিকামের জাত কালার-৬, কালার-৭।
পলিহাউসের ভিতরে প্রথমে বেড তৈরি করতে হবে। বেডে মাটি ফরমালিন দিয়ে শোধন করে নেওয়া উচিত। ১ লিটার জলে ৪০ মিলি ফরমালিন মেশাতে হবে। মাটি শোধনের পর পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। মাটি থেকে ১৫ সেমি উঁচু হতে হবে বেড। চওড়া হবে ১০০ সেমি। প্রয়োজনমতো লম্বা করা যেতে পারে বেড। একটি বেড থেকে অন্য বেডের দূরত্ব হবে ৪৫ সেমি। একই বেডে দু’টি গাছের মধ্যে দূরত্ব হবে ৫০ সেমি। ড্রিপ ইরিগেশনের ব্যবস্থা থাকলে ভালো। চারা বসানোর সময় সামান্য ঠাণ্ডার প্রয়োজন। সেকারণে অক্টোবরের মাঝামাঝি চারা বসাতে পারলে সবথেকে ভালো। চারা লাগানোর সময় গাছ প্রতি ১০ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫ গ্রাম সিঙ্গল সুপার ফসফেট ও ২০ গ্রাম মিউরিয়েট অফ পটাশ দিতে হবে।
একমাস পর একইমাত্রায় প্রথম চাপান দিতে হবে। ৮০ দিন পর গাছ প্রতি ১০ গ্রাম ইউরিয়া দিতে হবে দ্বিতীয় চাপান হিসেবে। চারার গোড়ার দিকের কিছু পাতা ফেলে দিতে হবে। প্লানোফিক্স প্রয়োগে গাছে প্রচুর ফুল আসে এবং ফল ধরতে সাহায্য করে। ফুল ঝরা ঠেকাতে দু’সপ্তাহ অন্তর দু’বার ২৫ পিপিএম জিএ বা ৫০ পিপিএম এনএএ হরমোন প্রয়োগ করা যেতে পারে। রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে একটি ক্যাপসিকামের ওজন ৩০০-৩৫০ গ্রাম হতে পারে। খোলা জমিতে বিঘা প্রতি ১০-১২ কুইন্টাল ফলন পাওয়া যায়।
কিন্তু পলিহাউসে প্রায় ৩০ কুইন্টাল ফলন মিলতে পারে। চারা রোপণের পর ল্যাদাপোকার আক্রমণ হতে পারে। এই পোকা পাতা খেয়ে নেয়। কেরোসিন মেশানো ছাই গাছের গোড়ায় দিতে হবে। কার্বারিল ২ গ্রাম, প্রতি লিটার জলে গুলে স্প্রে করলে সুফল মিলবে। সাদা মাছির আক্রমণ রুখতে চারা রোপণের তিন দিন আগে ইমিডাক্লোপ্রিড ১ মিলি, ৩ লিটার জলে গুলে স্প্রে করতে হবে।
রোপণের ১০ দিন পর ১ মিলি ইমিডাক্লোপ্রিড, ১ লিটার জলে গুলে বা ১ মিলি ফিপ্রোনিল ১ লিটার জলে গুলে স্প্রে করা যেতে পারে। আঠা লাগানো রঙিন বোর্ড পলিহাউসের ভিতরে ঝুলিয়ে রাখলে জাবপোকা বা সাদামাছির আক্রমণ কিছুটা রোধ করা যায়।