বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
কাণ্ডের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বনসাই-এর প্রকারভেদগুলি হল, (১) বিধিবদ্ধ সোজা বা খাড়া। এ ধরনের বনসাইয়ে একটিমাত্র সোজা কাণ্ড থাকবে। (২) অনিয়মিত কাণ্ড। এ ধরনের বনসাইয়ে কাণ্ডটি উপরের দিকে বাড়লেও বাঁকানো বা অনিয়মিত আকারের হয়ে থাকে। (৩) তির্যক বা হেলানো। এক্ষেত্রে কাণ্ড সহ গাছটিকে বাঁদিকে বা ডানদিকে বেঁকে বৃদ্ধি পায়। তবে শাখাগুলি দু’দিকেই থাকে। (৪) ঝরনার মতো বনসাইয়ের ক্ষেত্রে কাণ্ড সহ শাখা বৃদ্ধি পেয়ে নীচের দিকে ঝুঁকে যায়। এছাড়াও মূল বা শিকড়, কাণ্ডের সংখ্যা, শাখার আকৃতি প্রভৃতির উপর নির্ভর করেও বনসাইয়ের প্রকারভেদ রয়েছে।
কৃষি দপ্তরের জিয়াগঞ্জের ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার চন্দা সাহা জানিয়েছেন, বনসাই গাছ নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে, একটু শক্ত প্রকৃতির। প্রতিকূল অবস্থা সহনশীল গাছ, যা কাণ্ড ও শিকড় ছাঁটা বা কাটা সহ্য করতে পারে, এমনই গাছ বনসাইয়ের উপযুক্ত। এজন্য পরিচিত গাছগুলি হল, বটলব্রাশ, বট, সপ্তপর্ণী, ডালিম, নিম, আম, লেবু, অশ্বত্থ, বাবলা, টগর, কুল, তেঁতুল, দেবদারু, রঙ্গন, কামিনী প্রভৃতি।
কীভাবে বনসাই করতে হবে? চন্দাদেবী জানিয়েছেন, অগভীর এক বা একাধিক ছিদ্রযুক্ত পছন্দমাফিক টবে প্রথমে দোঁয়াশ মাটি ভরে নিতে হবে। নদীর বালি ও পাতাপচা সার দিতে হবে। মাটি যাতে খুব বেশি সার বা উদ্ভিদ খাদ্যোপদান সমৃদ্ধ না হয়। টবের ঠিক মাঝে গাছ লাগাতে হবে। এর পর ছায়ায় ৭-৮দিন রেখে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যেসব গাছ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়, সেই গাছগুলির টব প্রতিবছর পরিবর্তন করতে হবে। ধীরে বৃদ্ধি পায়, এমন গাছের ক্ষেত্রে ২-৩ বছর পর টব পরিবর্তন করা যেতে পারে। টব পরিবর্তনের সময় ধীরে ধীরে গাছটিকে তুলে শিকড়ের সঙ্গে লেগে থাকা মাটি ছাড়িয়ে দিতে হবে। এমনভাবে শিকড় কাটতে হবে যেন নতুন টবের দেওয়াল ও গাছের শিকড়ের মধ্যে যেন ২-৩ সেমি জায়গা থাকে।
টব পরিবর্তনের ৬ মাস পর পর্যন্ত কোনও ডাল ছাঁটাই বা কাটার কাজ করা চলবে না। বনসাইয়ের নির্দিষ্ট আকার দিতে হলে ছাঁটাই বা কাটাইয়ের থেকে নির্ভরযোগ্য উপাদান হল, তামার তার ব্যবহার করে হেলান বা ঠেকা দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে কোনও একটি ডাল বা শাখাকে নির্দিষ্ট দিকে বাঁকাতে হলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বাঁধন না দিয়ে তামার তারটিকে প্রথমে কুণ্ডলির মতো গাছের নির্দিষ্ট অংশে বাঁধতে হবে। তার পর খুঁটি বা অবলম্বনের সঙ্গে বাঁধতে হবে। মনে রাখতে হবে, এজন্য গাছের বিশ্রামের প্রয়োজন। সেকারণে এই কাজের পর বনসাইটিকে ছায়ায় রাখতে হবে। গাছের বৃদ্ধি রোধের জন্য পাতা বা শাখা ছাঁটা জরুরি। এর ফলে গাছের বৃদ্ধি কম হবে। পাতা ছাঁটা বা মুকুল ভেঙে দেওয়ার পর কম পরিমাণে জল দিতে হবে। সূর্যের আলোয় রাখার প্রয়োজন রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরমের দিনে একবার হাল্কা জল দিতে হবে। শীতকালে সপ্তাহে একবার জল দিলেই চলবে। বেশিমাত্রায় জল প্রয়োগ করা ক্ষতিকর। বর্ষার সময় কিংবা বসন্তকালে ২ চামচ করে বাদাম বা সর্ষের খোল গুঁড়ো করে দিতে হবে। তবে গাছের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে সার প্রয়োগের মাত্রা পরিবর্তন করা যেতে পারে। রোগপোকার আক্রমণ হলে প্রয়োজনভিত্তিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।