বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
জেলা কৃষি দপ্তরের অধীন বর্ধমান সদর, কাটোয়া ও কালনা মহকুমা রয়েছে। বর্ধমান সদরের অধীন বর্ধমান-১ ও ২, মেমারি-১ ও ২, জামালপুর, গলসি-১ ও ২ ব্লকে আলুচাষে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি কালনা মহকুমার কালনা-১ ও ২, পূর্বস্থলী-১ ও ২ এবং মন্তেশ্বর ব্লকে ৪৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৬৩টি মৌজার ১১হাজার ৪৩০হেক্টর আলুজমি ক্ষতিগ্রস্ত। কালনা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় পেঁয়াজ চাষ হয়। বৃষ্টিতে পেঁয়াজ চাষেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মেমারি-২ ব্লকের সাতগাছিয়া-১ ও ২, বিজুর-২, বোহার-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বহু আলুজমি জলের তলায়। জল বের করার সুযোগ নেই। এই অবস্থায় আলু পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় চাষিদের চিন্তার শেষ নেই। কালনা মহকুমায় ১৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছিল। বেশিরভাগ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত। ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩৫০হেক্টর। ধাত্রীগ্রামের পেঁয়াজ চাষি মধু ঘোষ বলেন, এবার পেঁয়াজের বাজার নিম্নমুখী। তার উপর বৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হতে বসেছে। আমার মতো প্রচুর চাষি মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়তে চলছেন। কালনার সহ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) পার্থ ঘোষ বলেন, মহকুমার প্রায় সব আলু ও পেঁয়াজ জমিতে জল জমেছে। আমরা রিপোর্ট জেলায় পাঠিয়ে দিয়েছি।
বুধবার গলসি-২ ব্লকের মসজিদপুরে দেখা যায়, সেখানকার চাষিরা পাম্প চালিয়ে মাঠ থেকে জল বের করার চেষ্টা করছেন। জমি থেকে আলু তোলার দিন দশেক আগে শিলার ঘায়ে আলুতে দাগ পড়েছে। বর্ধমান-১ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা কুড়মুন-১ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। জমিতে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। কুড়মুন-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বলাই বাউড়ি বলেন, বৃষ্টিতে আলু চাষে ক্ষতির বিষয়ে চাষিরা আমাকে জানিয়েছেন। জমি ঘুরে ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা খতিয়ে দেখেছি। চাষিদের নাম ও জমির পরিমাণের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বর্ধমান-২ ব্লকের অবস্থাও একইরকম। ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জমিতে জল জমে গিয়েছে। খাঁড়গ্রাম, নবস্থা এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা সৌমেন ঘোষ বলেন, বর্ধমান-২ ব্লকে ৩ হাজার ৫১৫হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়েছে। বেশকিছু এলাকায় আলু জমিতে জল জমে গিয়েছে। চাষিদের জমি থেকে জল বের করে দেওযার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই অবস্থা গলসি-২ ব্লকেও। সেখানকার মসজিদপুর পঞ্চায়েতের তেঁতুলমুড়ির বাসিন্দা কাঞ্চন মল্লিক বলেন, আলু উঠতে আর কয়েকদিন বাকি। তার আগে বৃষ্টিতে সব শেষ করে দিয়েছে। মাটি সরে গিয়ে আলু জমির উপরে বেরিয়ে এসেছে। জল জমে যাওয়ায় আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সমবায় ও মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম। সরকার পাশে না থাকলে সমস্যায় পড়তে হবে।
কৃষি দপ্তরের উপ অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, কাটোয়া মহকুমা থেকে এখনও ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট আসেনি। তবে, বর্ধমান সদর এবং কালনা মহকুমা এলাকায় ২৫ হাজার হেক্টর আলুজমিতে জল জমেছে। তাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে।