পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাগান করার ক্ষেত্রে যে ক’টি বিষয়ে নজর রাখতে হবে, সেগুলি হল-এমন গাছ নির্বাচন করতে হবে, যেগুলি সহজেই বেড়ে ওঠে এবং অল্প পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। ছায়া কিংবা আংশিক ছায়ায় গাছ বেঁচে থাকবে। আলোক তীব্রতা সহনশীল হবে। যেহেতু ফ্ল্যাটের ব্যালকনি, বাড়ির বারান্দা বা ছাদে কিংবা উঠোনে বাগান করা হবে, সুতরাং এমন গাছ বাছাই করতে হবে, যেগুলি কম বিস্তার যুক্ত ঘন সন্নিবিষ্ট। মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের টেকনোলজি ম্যানেজার চন্দা সাহা জানিয়েছেন, ফার্ন জাতীয় গাছের মধ্যে মেউডেন হেয়ার ফার্ন, রিবন ফার্ন, বার্ডস নেস্ট ফার্ন, বস্টন ফার্ন, সিলভার ফার্ন লাগানো যেতে পারে। যদি কেউ পাম জাতীয় গাছ লাগাতে চান, তাঁরা অ্যারেকা পাম, ক্যারিওটা পাম, ফোনিক্স পাম, লিভস্টোনিয়া পাম, কেন্টিয়া পাম জাতীয় গাছ বাছাই করতে পারেন। বাহারি পাতাবাহার যাঁদের পছন্দ, তাঁরা ডাইফেনবেকিয়া, ক্রোটোন, ফক্সটেল, অ্যালপিনিয়া, ক্যালানথিয়াম, হেলিকোর্নিয়া, বার্ড অফ প্যারাডাইস জাতীয় গাছ লাগাতে পারেন। যাঁরা টবে বাগান করবেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে টবে যে পরিমাণ মাটি দেওয়া হবে, তার দু’ভাগ মাটি, একভাগ গোবরসার বা কেঁচোসার ও একভাগ পাতাপচা সার ব্যবহার করতে হবে। ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি দিয়ে মাটি শোধন করে নেওয়া যেতে পারে। টবের নীচে ছোট নুড়ি, পাথর ও বালির অল্পস্তর তৈরি করতে পারলে জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো হয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মাটির পরিবর্তে টবে কিংবা বাঁশের খোলের ভিতর কোকোপিট (নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো) দিয়েও তাতে গাছ বসানো যেতে পারে।
ছাদের বাগানের ক্ষেত্রে লন, ফ্লাওয়ার বেড তৈরি করতে হলে মোটা প্লাস্টিক বিছিয়ে দিতে হবে। ছাদে উপযুক্ত জলনিকাশি ব্যবস্থা থাকতে হবে। চাষ করা জমির পলি দোঁয়াশ মাটি ও জৈব পদার্থ মিশিয়ে বেড তৈরি করতে হবে। ছাদের বাগানে ঝরনা, লন, ফুলের বেড, টবে পাতাবাহার, বনসাই, গুল্ম, লতানো গাছ রাখা যেতে পারে। লন তৈরি করতে হলে দু’ভাগ পলি মাটি, এক ভাগ পাতা পচাসার, এক ভাগ কেঁচোসার, এক ভাগ বালি মিশিয়ে৩-৫ সেমি পুরু বেড বানাতে হবে। বেডের নীচে অবশ্যই প্লাস্টিকের চাদর পেতে নিতে হবে। এর পর ১০-১৫ সেমি দূরত্বে ছোট ছোট গর্ত করে জাপানি ঘাস লাগাতে হবে।
টব যদি ছায়ায় কিংবা আংশিক ছায়ায় থাকে, তা হলে জলের প্রয়োজন কম হয়। নতুন বসানো গাছে শিকড়ের বৃদ্ধি কম হয়। ফলে জল কম দিতে হয়। কিন্তু পুরনো গাছে তুলনামূলক বেশি জল দিতে হবে। গাছের প্রকৃতির উপর জলের পরিমাণ নির্ভর করে। প্লাস্টিকের টবে তুলনামূলক জল কম লাগে। গাছগুলিতে পনেরো দিন অন্তর জৈবসার বা রাসায়নিক সার দিতে হবে। পাতায় উজ্জ্বলতা আনার জন্য অ্যামোনিয়াম কার্বনেট বা নাইট্রোজেন ঘটিত সার স্প্রে করা যেতে পারে। বন্ধ ঘরে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে বিশুদ্ধ বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। সৌন্দর্য্য বজায় রাখতে গাছের পাতা সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে ঈষদুষ্ণ গরম জলে অল্প পরিমাণ ভিনিগার বা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে তা দিয়ে গাছের পাতা পরিষ্কার করা যেতে পারে।
জলের মাত্রা বেশি হলে কিংবা মাটিতে অম্লত্বর পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে পাতা ঝরা বা পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে জল দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সঙ্গে জিপসাম দিতে হবে। জলের তারতম্য কিংবা খাবারের অভাব ঘটলে গাছের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন তরল এনপিকে ১৮: ১৮: ১৮ প্রয়োগ করতে হবে। টবে বেশি জল দেওয়া হলে কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ ঘটলে গাছ শুকিয়ে যায় অথবা গাছ ঢলে পড়ে। এমন ঘটনা ঘটলে জল দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং প্রয়োজনে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, গাছের পাতার রং পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে পাতাবাহার গাছের ক্ষেত্রে পাতার রং ও নকশার পরিবর্তন হয়ে থাকে। তেমন হলে জল দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং কৃত্রিম আলোর ব্যবস্থা করতে হবে। অতিরিক্ত জলসেচে শিকড় পচা রোগ দেখা দেয়। প্রতিকার হিসেবে জল দেওয়া বন্ধ করতে হবে এবং কার্বেন্ডাজিম ও ম্যাঙ্কোজেবের মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারলে ভালো।