বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
কৃষি দপ্তর রিপোর্ট না আসার কথা বললেও ফালাকাটার ছোট শালকুমার, ময়রারডাঙা, ধনীরামপুর-২, জটেশ্বর-২ ও গুয়াবরনগর পঞ্চায়েত থেকে বিক্ষিপ্তভাবে আলুতে নাবি ধসা ছড়ানোর খবর পাওয়া গিয়েছে। মহামারির আকার না নিলেও বিক্ষিপ্তভাবে ছড়াতেই কৃষকেরা চিন্তিত পড়ে গিয়েছেন।
জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা(প্রশাসন) হরিশ চন্দ্র রায় বলেন, তাপমাত্রা পড়ে গেলে এবং কুয়াশাচ্ছন্ন ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় জমিতে ছত্রাকের বংশবৃদ্ধির কারণেই এই সময়টাতে আলু গাছে নাবি ধসার হানাদারি ঘটে। ফালাকাটায় সেটাই হয়েছে কিনা তা দ্রুত খতিয়ে দেখতে ব্লক থেকে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আমরা সতর্কই আছি। এই নাবি ধসার মড়ক যাতে না ঘটে তা নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে আলু চাষিদের পরামর্শ দিতে মিটিং করা হচ্ছে। ফালাকাটা ব্লক কৃষি আধিকারিক সুদেষ্ণা দাস অবশ্য বলেন, একবার নাবি ধসা শুরু হলে মুহুর্তে মহামারী মতো তা বিঘার পর বিঘা জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা সতর্কই আছি। নাবি ধসা দেখা দিলে প্রয়োজনে কৃষি দপ্তরের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে চাষিদের।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় গড়ে প্রতি বছর ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হলেও কৃষি দপ্তর জেলায় আলু চাষের এলাকা কমানোর পক্ষে। আলুর বদলে কৃষি দপ্তর চাষিদের বহুমুখী চাষের উপরে জোর দিতে বলেছে। তবে জেলা কৃষি দপ্তর মনে করছে এবার জেলায় এক হাজার আলু চাষের এলাকা কমতে পারে।
বর্তমানে জেলায় আলু গাছের বয়স কোথাও ২০ দিন আবার কোথাও ২৫ দিন। কোথাও আবার একমাস। জেলার সিংহভাগ আলু চাষ হয় আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকে। স্থানীয় স্তরে কৃষকরা জানিয়েছে, ব্যাপক আকারে না হলেও বিক্ষিপ্তভাবে আলু গাছে নাবি ধসার হানাদারি শুরু হয়েছে ফালাকাটায়।
ব্লকের ছোট শালকুমার পঞ্চায়েতের ঢুমাপাড়ার দুই কৃষক মানিক কার্জি ও সুজিত কার্জি বলেন, তাদের দু’জনেরই লাগানো আলুতে বিক্ষিপ্তভাবে নাবি ধসার প্রকোপ শুরু হয়েছে। খুবই চিন্তায় আছি। নাবি ধসা মড়ক নিলে কিছু করার থাকবে না। আক্রান্ত পঞ্চায়েতগুলির কয়েকজন চাষি জানিয়েছে, ব্যাপক আকারে না হলেও বিক্ষিপ্তভাবে নাবি ধসা ছড়াচ্ছে। নাবি ধসা রোগে আলু গাছের পাতায় প্রথমে ছোট ছোট বাদামি দাগ হয়। পরে দাগের আকার আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। পাতা নৌকার মতো গুটিয়ে গিয়ে রিংয়ের আকার ধারণ করে। এরপর আলু গাছ পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। কৃষিদপ্তর জানিয়েছে, প্রতিকার হিসাবে আক্রান্ত আলুতে বাজার চলতি কপার হাইড্রোক্সাইড অথবা কপার অক্সিক্লোরাইডের মতো ওষুধ এক লিটার জলে চার গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
জেলা আলু চাষি সংগ্রাম কমিটির সংগঠন তরণী রায় বলেন, কৃষি দপ্তর কী বলছে জানি না। তবে জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে আলুতে অল্প বিস্তর নাবি ধসা ছড়ানো শুরু হয়েছে। কৃষি দপ্তরের কাছে আমাদের দাবি, এই নাবি ধসা ঠেকাতে এখনই প্রতিটি পঞ্চায়েতে বিশেষজ্ঞদের পাঠিয়ে আলু চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হোক। ফালাকাটার বাসিন্দা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কিষাণ ক্ষেতমজুর সংঠনের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকায় আলুতে নাবি ধসা ছড়ানোর খবর এসেছে আমাদের কাছেও। চাষিদের এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সংগঠনগতভাবে এই ধসা ঠেকাতে ও সাবধানতা নিতে পরামর্শের জন্য কৃষি দপ্তরে যেতে বলা হয়েছে।