পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
গতবছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমেরিকাতে এই ছবির শ্যুটিং শুরু হয়। গত জুলাই মাসে আমেরিকাতেই ছবির প্রিমিয়ারও হয়। ছবিতে অভিনয় করেছেন দেবস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অস্মিতা ভাদুড়ী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, গীতশ্রী রায়, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, ঋষি কৌশিক প্রমুখ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রূপক তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচালকের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেন। এই নিয়েই বৃহস্পতিবার আমেরিকা থেকে ফোনে রূপক অভিযোগ করেন, ‘অনেক আশা করে ছবিটা তৈরি করেছিলাম। পরিচালকের সঙ্গে আমার চুক্তি হয়েছিল, তিনি এই ছবির রিলিজ এবং ডিস্ট্রিবিউশনের বিষয়টা দেখবেন। আমি এনআরআই। দেশে গিয়ে ওই কাজ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি কাউকে চিনিও না। কিন্তু এখন পরিচালকের তরফ থেকে আর কোনও উদ্যোগ দেখছি না। যতবার ওঁকে বলছি, আজ জানাচ্ছি, কাল জানাচ্ছি বলছেন।’
যদিও এই ছবি মুক্তি এবং ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যাপারে পরিচালক এবং প্রযোজকের মধ্যে কোনও লিখিত চুক্তি ছিল না। ‘সবটাই মৌখিক ছিল। ওঁরা ক্যাশে টাকা নিয়েছে। আমি ঠেকে শিখলাম। এই ছবি বাবদ এখনও পর্যন্ত আমার দেড় কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। পরিচালক আমাকে এসে বলেছিলেন, আমার একটা আই প্যাড হলে ভালো হয়। আমি দিয়েছিলাম। উনি আমাকে আরও বলেন, পরের বার যখন আসব একটা আই ফোন নিয়ে রাখবেন, কিছু টাকা আমি দিয়ে দেব’, যোগ করলেন রূপক। এর পরে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই আবার একটা নতুন ছবি ‘প্রতিবিম্ব’র কথা শুরু হয়। প্রথমে এই ছবির জন্য সম্মতি দিতে চাননি রূপক। ‘আমি জানতে চাই ট্রেলার কখন আসবে। গত ডিসেম্বর থেকেই মনে হচ্ছিল কাজটা ঠিকভাবে হচ্ছে না। আমার মনে হল, প্রথম ছবি রিলিজ হল না কিন্তু দ্বিতীয় ছবির গল্প তৈরি হয়ে গেল। ঘটনা কী? আমাকে বোঝানো হল, দু’টো ছবি যদি নেটফ্লিক্স বা অ্যামাজনে রিলিজ করা যায় তাহলে বেশি লাভ হবে। কিন্তু এখন দেখছি আমার প্রথম ছবিই মুক্তি পেল না’, বললেন রূপক। প্রযোজকের আরও অভিযোগ, প্রথম ছবির হার্ডডিস্ক এখনও তাঁর কাছে নেই। ‘উনি আমাকে বলেছিলেন, কলকাতায় ছবি মুক্তি পাওয়ার জন্য কয়েকটা কাজ আছে। সেই কাজগুলোর জন্য হার্ডডিস্ক তাঁর কাছে রাখতে হবে। কিন্তু প্রিমিয়ার হয়ে যাওয়ার পরেও এরকম কেন?’, প্রশ্ন তুলছেন রূপক। কিন্তু ডিসেম্বর থেকেই যখন সন্দেহের সূত্রপাত তাহলে আবার নতুন ছবির জন্য টাকা দিলেন কেন তিনি? রূপকের যুক্তি, তিনি দেবপ্রতীমকে বিশ্বাস করেছিলেন এবং ফিল্মের বিষয়ে তাঁর কোনও ধারণা নেই। ‘গত তিন সপ্তাহ ধরে আমি রিলিজের জন্য বলেছি, কোনও উত্তর পাইনি। তখন আমি চিন্তা করলাম এবার লেখা দরকার’, বলছিলেন রূপক। পরের ছবি ‘প্রতিবিম্ব’র জন্য এখনও পর্যন্ত ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রূপকের একটাই প্রশ্ন, এত টাকা খরচ করার পরে তাঁর ছবি কলকাতায় কবে মুক্তি পাবে? ‘এর উত্তর দেবপ্রতীমের কাছে নেই। আমাকে যা বলেছিলেন, তা এখন সবটাই অস্বীকার করছেন’, অভিযোগ রূপকের।
তবে প্রযোজকের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দেবপ্রতীমের পাল্টা বক্তব্য, ‘আমি রিলিজ এবং ডিস্ট্রিবিউশনের কথা কখনওই অস্বীকার করিনি। এখনও করছি না। আমি বলেছিলাম, ২০ সেপ্টেম্বর খোঁজ নিয়ে জানাব। আমি দেশে ফিরি ১৪ আগস্ট। তারপর একটি দুর্ঘটনায় পড়ি। আমি ওঁকে বলেছিলাম, আপনিও খোঁজ নিন। তার আগেই এই পোস্ট।’ ওই পোস্টের পরে তাঁদের মধ্যে কথা হয়েছে। তবে অন্য অভিযোগ সম্বন্ধে দেবপ্রতীম বলছেন,‘আমি কোনও আইপ্যাড চাইনি। উনি যখন কলকাতায় এসেছিলেন আমি ওঁকে আইফোনের কথা বলেছিলাম। সেই আইফোনের দাম আমার পারিশ্রমিক থেকে কাটিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছিলাম। কিন্তু দাম শুনে পিছিয়ে আসি। আমি যখন শ্যুটিংয়ে গিয়েছিলাম সবার সামনে উনি আমাকে বলেছিলেন, আইপ্যাড ছাড়া পরিচালককে মানায়? বলে উনি আমায় ওটা দিয়েছিলেন।’ দেবপ্রতীমের দাবি, ‘উনি আমাকে পুজোর সময় রিলিজ করার কথা বলেছিলেন। আমি বলেছিলাম পুজোর মধ্যে এত ছবির মাঝখানে রিলিজ না করে পরে করলে ভালো। হল পেতে সমস্যা হবে।’
পরিচালকের আরও বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর কথা ভুল বুঝেছেন প্রযোজক। তিনি কখনই দায়িত্ব এড়িয়ে জাননি। ‘উনি বলেছিলেন বিরাট মাপে প্রচার করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে চাঁদের পাহাড় ছবির কথা বলেন। এরপর ডিস্ট্রিবিউশনের জন্য একটা বাজেট দিয়েছিলাম,’ বললেন দেবপ্রতীম। ছবির হার্ডডিস্ক প্রযোজককে না দেওয়া প্রসঙ্গে দেবপ্রতীমের জবাব, ‘হার্ডড্রাইভ দেওয়া হয়নি কারণ, ওদের দেশে বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লিখতে হয় না। আমাদের দেশে লিখতে হয়। এখানে সেন্সরে পাঠাতে গেলে তো আমার ওইগুলো যোগ করতে হবে। তার জন্য র ফাইল দরকার।’ তবে দেবপ্রতীম বলছেন, ‘আমার মাথা ঠান্ডা। কালকেই যদি ওঁর সঙ্গে আমার চা চক্রে বসতে হয়, আমার আপত্তি নেই। দিনের শেষে ছবি মুক্তি পাওয়া দরকার। বড় অংশের টাকা যে লগ্নি হয়েছে সে বিষয়ে তো সন্দেহ নেই। পরবর্তী কালে দেখা হলে সবার আগে আইপ্যাডটা দিয়ে দেব।’ এখন এই দ্বন্দ্ব কবে কীভাবে শেষের মুখ দেখে এবং যে ছবিটি নিয়ে এত সমস্যা সেটা শেষপর্যন্ত কবে মুক্তি পায় সেটাই দেখার।