গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তখন গোপাল আর রাধা ভোগ নিবেদনের সময়। দুপুরের প্রজ্জলিত আলোয় ভোগ মুখে দিয়ে বিশ্রাম নিতে যাবেন সকলের প্রিয় কানাই আর তার প্রিয় রাধা। যুগ যুগ ধরে যাঁদের নিয়ে বাঁধা হয়েছে নানান গল্প। লৌকিক ব্যাখ্যায় তাঁরা কোথাও ‘হৃদয় প্রেমের শীর্ষ’ কোথাও বা অবৈধ সম্পর্কের আড়ালে নিষিদ্ধ পরকীয়া। সব ছাড়িয়ে তাঁরা তিন-যুগের প্রেমের সোপান, নিরবচ্ছিন্ন প্রেম-মন্দির। সেই রাধা কৃষ্ণ এবার নতুন ভাবে পর্দায়। স্টার ভারতের রাত নটার স্লটে এখন পরিচিত মুখ ‘কৃষ্ণ’ সুমেধ এবং ‘রাধা’ মল্লিকা। যাঁরা দেখেন তাঁরা জানেন এখানে কিন্তু তথাকথিত গল্পকে একটু অন্যভাবে দেখানো হয়েছে। রাধা কৃষ্ণের এই প্রেম আদৌ অবৈধ নাকি রাধার জীবনে আইকন হিসাবে উপস্থিত কৃষ্ণ? এই প্রশ্নের উত্তর আছে এই ধারাবাহিকে। লক্ষ্মী ও নারায়ণের শাপগ্রস্ত হয়ে মর্ত্যে জন্ম নেন। অভিশাপের বাণী এমনই ছিল যেখানে বলা হল লক্ষ্মী দেবী রাধা অবতারে জন্ম নেবেন আর তার ঠিক দশ বছর পরে জন্মাবে কৃষ্ণরূপী নারায়ণ। রাধা ভুলে যাবে তার ভালোবাসার কথা। আর কৃষ্ণ প্রতি মুহূর্তে বাঁশি বাজিয়ে রাধাকে মনে করিয়ে দেবে ‘রাধা তুমি আর কারও নও কেবল নারায়ণের’। স্টার ভারতের ‘রাধাকৃষ্ণ’ প্রায় এক বছর হয়ে গেল। একবছর পর আর এক জন্মাষ্টমী তারা পালন করল একটু অন্যভাবে। রাধা ও কৃষ্ণের লীলার সঙ্গে ছিল ননীর হাঁড়ি ভাঙা পর্বও। যে পর্বে কৃষ্ণ তার বন্ধুদের সঙ্গে করে ভাঁড়ার ঘরে রাখা ননীর হাঁড়ি ভেঙে তা থেকে আয়েশ করে ননী খায়।
রাধাকৃষ্ণ ধারাবাহিক প্রসঙ্গে কথা হল সুমেধ এবং মল্লিকার সঙ্গে। সুমেধ নিজে কৃষ্ণ ভক্ত। সারাদিন কৃষ্ণ সম্পর্কিত নানা বই পড়েন তিনি। মল্লিকা তুলনায় রাধা-কৃষ্ণ সম্পর্কে ধারাবাহিক শুরুর আগে বিশদে সেভাবে জানতেন না। পরে সুমেধের থেকে তিনি অনেক কিছুই জানতে পারেন। দু’জনের কাছেই রাধা এবং কৃষ্ণ চরিত্রে অভিনয় করা জীবনের একটা বড় পাওনা। ‘ডান্স মহারাষ্ট্র ডান্স’- এর সুমেধ এখানে যেমন পাচ্ছে অভিনয়ের সুযোগ তেমন নৃত্যের মাধ্যমে রাসলীলা কিংবা মিলনের দৃশ্যে একইভাবে নৃত্যকলাকে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু কোন দিকটা বেশি ভালো লাগে তার? অভিনয় নাকি নৃত্য? সুমেধের মোক্ষম জবাব, ‘আমার প্রিয় জিনিস হল শিল্প। আর আমি একজন শিল্পী।’ উত্তরের সঙ্গে মিষ্টি হাসি বুঝিয়ে দিল তিনি শুধু কৃষ্ণের অভিনয় ক্ষমতা রপ্ত করেছেন তাই নয়, কৃষ্ণের দুষ্টু বুদ্ধিও আয়ত্ত করেছেন। দু’জনের কাছেই আরও একটি অনিবার্য প্রশ্ন ছিল এতদিন ধরে এই চরিত্রে অভিনয় করার পর এখন কী নিজেকে কোথাও গিয়ে অন্যরকম লাগে? ‘জীবন পরিবর্তন হয়নি বরং জীবন অনেক পরিণত হয়েছে। রাধাকৃষ্ণের গল্প শুধু ভক্তিবৃদ্ধি করে না, শেখায়ও অনেক কিছু’, বললেন দুজনেই। ‘রাধাকৃষ্ণ’ ধারাবাহিকের চাহিদা যে তুঙ্গে সেটা বোঝা গেল কানপুর ইস্কন মন্দিরে সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে এবং শেষে সাধারণ মানুষের ঢল এবং তাদের সেলফি তোলার বহর দেখে। জন্মাষ্টমী পর্ব উপলক্ষ্যে ধারাবাহিকে ছিল রেখা চিন্নি প্রকাশের কোরিওগ্রাফ করা একটি বিশেষ গান।