হঠাৎ জেদ বা রাগের বশে কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া শ্রেয়। প্রেম-প্রীতির যোগ বর্তমান। প্রীতির বন্ধন ... বিশদ
কিন্তু এ বছর ১৪ই আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের দিন ট্যুইটারে সে দেশের এক নাগরিক তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কোনও ট্যুইট করেননি? এর জবাবে আদনান জানান, তিনি ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করবেন এবং সেদিনই ট্যুইট করবেন। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় পাক নেটিজেনদের কুরুচিপূর্ণ আক্রমণের মুখে পড়েন গায়ক। উড়ে আসতে থাকে একের পর এক অপ্রীতিকর প্রশ্ন। জন্মভূমির প্রতি তাঁর কোনও দায়বদ্ধতা নেই বলেও অনেকে আক্রমণ শানান। পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ছেড়ে ভারতের নাগরিক হওয়ায় কেউ আবার তাঁকে বিশ্বাসঘাতক বলে বসেন। পাকিস্তানের জনাকয়েক ব্যক্তি তাঁকে কটূক্তি করে বলেন তিনি তাঁর বাবার জন্মস্থানের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাতে পারেননি।
তবে এতকিছুর পরও মেজাজ না হারিয়ে শান্তভাবেই জবাব দেন আদনান। বাবার জন্মভূমি প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ‘১৯৪২ সালে আমার বাবা অবিভক্ত ভারতবর্ষে জন্মেছিলেন এবং ২০০৯ সালে ভারতের মাটিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।’ আদনানের বাবা আরসাদ সামি খান ছিলেন পাকিস্তান এয়ারফোর্সের পাইলট। পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশে তিনি পাক রাষ্ট্রদূত ছিলেন। কর্মজীবনে পেয়েছেন সেদেশের একাধিক সম্মান। মুম্বইয়ের হাসপাতালে মৃত্যুর পর ইসলামাবাদে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিলেন আরসাদ সামি খানের।
আর মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গে আদনান লিখেছেন, ‘আমি মোটেই বিশ্বাসঘাতক নই। যদি দায়বদ্ধতার প্রশ্নই ওঠে তাহলে জন্মভূমির (অবিভক্ত ভারত) প্রতি জিন্নার দায়বদ্ধতা কোথায় ছিল? আমায় যদি বিশ্বাঘাতকের তকমা দেন, তাহলে জিন্নাকে কী বলবেন?’ কাশ্মীর ইস্যু নিয়েও পাক ট্রোলারদের একহাত নেন তিনি। বলেন, ‘এটা ভারতের আভ্যন্তরীন বিষয়। বিষয়টি নিয়ে বহিরাগতদের নাক গলানোর প্রয়োজন নেই।’ তবে এইবার আদনান ট্রোলিংয়ের মুখে পড়লেন এমন নয়। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে বালাকোট এয়ারস্ট্রাইকের সময়ও ভারতের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। করেছিলেন ট্যুইটও। সেই সময়ও পাকিস্তানি নেটিজেনরা তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কটূক্তি করেন। কিন্তু তখনও প্রতিবাদ করতে ছাড়েননি আদনান। সুরেলা গলার জোরালো আওয়াজে মুখ বন্ধ হয়ে যায় নিন্দুকদের। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকবছর ধরে কর্মসূত্রে ভারতেই রয়েছেন আদনান সামি। বরাবরই বলে এসেছেন ভারতীয়দের কাছ থেকে যা ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন তা তাঁর কাছে অমূল্য। এরপর এদেশেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। আবেদন করেন ভারতীয় নাগরিকত্বের। অবশেষে ২০১৬ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে।