গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এবার কৃশানু দে-র জীবন কাহিনী নিয়ে ওয়েব সিরিজ হতে চলেছে। দেখা যাবে জি ফাইভে। প্রথম সিজনে মোট আটটি এপিসোড দেখানো হবে। ওয়েব সিরিজের নাম রাখা হয়েছে ‘কৃশানু কৃশানু’। সমগ্র ভাবনায় রয়েছে টিভিওয়ালা মিডিয়া নামক একটি সংস্থা এবং সিরিজটি প্রযোজনা করছে জ্যোতি প্রোডাকশন। টিভিওয়ালা মিডিয়ার তরফে অমিত গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের ১০০ বছর নিয়ে আমরা কিছু করতে চাইছিলাম। এই বিষয়ে ভাবতে গিয়ে আমাদের মনে হয়, শেষ বাঙালি ফুটবল হিরো কেউ যদি থাকেন, তাহলে তিনি কৃশানু দে। সেই জায়গা থেকেই প্রয়াত ফুটবলারের স্ত্রী শর্মিলা এবং ছেলে সোহমের সঙ্গে কথা বলা শুরু হয়। এছাড়া তাঁর সমসাময়িক অনেক ফুটবলারের সঙ্গেও কথা বলা হয়। দুই প্রধানের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই এগনো হয়েছে।’ একেবারে ছোটবেলা থেকে ফুটবলের সঙ্গে কীভাবে বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে কৃশানু দে-র ব্যক্তিগত জীবন, সবটাই দেখানো হবে এই সিরিজে। অন্য দেশের একটি মেয়ে কলকাতায় আসে কৃশানুকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি করতে, এভাবেই গল্পের শুরু। ওয়েব সিরিজটির সঙ্গীত পরিচালনা করবেন গৌরব চট্টোপাধ্যায় (গাবু)।
কৃশানুর চরিত্রে অভিনয় করছেন মধ্যপ্রদেশের ছেলে অনুরাগ উরহা। তিনি এফটিআইআইয়ের ছাত্র। এই মুহূর্তে অনুরাগ কলকাতাতে বাংলা বলা শিখছেন, ফুটবল খেলছেন। আগামী সোমবার থেকে সিরিজটির শ্যুটিং শুরু হওয়ার কথা। সিরিজটি পরিচালনা করবেন কোরক মুর্মু। পরিচালকের কথায়, ‘ওইরকম একজন ফুটবলারকে পর্দায় দেখানোটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কৃশানু দে-র হাঁটা-চলা থেকে শুরু করে তিনি কীভাবে তাকাতেন, কীভাবে খেলতেন সবটা নিয়েই ওয়ার্কশপ চলছে। বেশ ভয়ে ভয়েই কাজ করতে হচ্ছে। একটু ভুল হলে নিজেই নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না। এলেনা খাজান, জিত্ সুন্দর ছাড়াও আরও অনেকে অভিনয় করছেন।’ তবে, কৃশানুর সমসাময়িক বিকাশ পাঁজি, চিমা ওকেরি, সুব্রত ভট্টাচার্যর মতো খেলোয়াড়দের চরিত্রে কারা অভিনয় করছেন, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।
বায়োপিকের খবর কৃশানুর পরিবারের কাছে একেবারেই আকস্মিক ছিল। কৃশানুপুত্র সোহম বললেন, ‘আমি প্রথমেই ওঁদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, কৃশানু দে-কে নিয়ে আপনারা কেন ওয়েব সিরিজ তৈরি করছেন? ওঁরা বলেছিলেন, দেখুন, সবাইকে তো আর ভারতীয় ফুটবলের মারাদোনা বলা হয় না। কেন বলা হয় সেটাই আমরা দেখাতে চাই। বাবাকে নিয়ে এরকম একটা কাজ হচ্ছে, আমার কাছে খুবই গর্বের।’ প্রথম খবরটা পাওয়ার পরে চোখে জল এসে গিয়েছিল শর্মিলার। তিনি বললেন, ‘এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। যাঁকে ভারতের মারাদোনা বলা হয়, অথচ সেই মানুষটি অর্জুন পুরস্কার পাননি! মৃত্যুর ১৭ বছরের মাথায় এইরকম সম্মান সত্যিই অসাধারণ। শোনার পরেই আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। অর্জুন পুরস্কার না পাওয়ার যন্ত্রণা কিছুটা প্রশমিত হল। তবে সেই মানুষটাই দেখে যেতে পারল না। খুব চাপা স্বভাবের মানুষ ছিলেন। এই চরিত্রে যিনি অভিনয় করছেন আমি তাঁকে প্রথমবার দেখে অবাকই হয়ে গিয়েছিলাম। সত্যিই মানুষ এই রকম অবিকল হতে পারে!’ খবরটি শুনে কৃশানুর সতীর্থ প্রাক্তন ফুটবলার বিকাশ পাঁজির প্রতিক্রিয়া, ‘দারুণ ব্যাপার। কৃশানুর মতো মানুষ এবং খেলোয়াড় খুবই কম জন্মায়। আমি তো চুণী গোস্বামীর খেলা দেখিনি। আমার দেখা ভারতের শ্রেষ্ঠ স্ট্রাইকার। আমি আর ও অভিন্ন হৃদয় বন্ধু ছিলাম। খেলোয়াড় জীবনে কোনও দিন দু’জনে আলাদা টিমে খেলিনি। চাকরি একসঙ্গে। ওর থেকে আমি বয়সে একটু বড় ছিলাম। সম্পর্কটা ছিল দাদা-ভাইয়ের মতো। অন্য খেলোয়াড়দের কাছেও কৃশানু সহজে সম্ভ্রম আদায় করে নিত।’ আগস্ট মাস থেকে জি ফাইভে এই সিরিজ দেখা যাবে বলে খবর।