কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ইদানীং ছবিতে কী কী পরিবর্তন আপনার চোখে পড়ে?
আমাকে প্রায়ই এখন এই ধরনের প্রশ্ন শুনতে হয়। দেখুন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব জিনিসই অনেক বদলে যায়। এখন ডিজিটাল মিডিয়ার যুগ। মানুষের হাতে সময় কম। সেটে একটা জিনিস আমি লক্ষ করেছি। আগে সেটে সবাই এত প্রফেশনাল ছিলেন না। শ্যুটিংয়ের আগে সেটে বসেই অনেকে সংলাপ লিখতেন। এমনও হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে কারণ ডায়লগ রেডি নেই। আর এখন কলটাইম থেকে চিত্রনাট্য সবকিছুই হয় পরিকল্পনামাফিক। আমরা তো কাজ করতে করতেই শিখেছি। এখন যাঁরা অভিনয় করতে আসেন, তাঁরা প্রায় সকলেই বেশ তৈরি হয়ে আসছেন। অনেক সংখ্যক মেয়ে এখন কাজ করছেন। কোরিওগ্রাফার, টেকনিশিয়ান, পরিচালক ফিল্মের সব ডিপার্টমেন্টেই প্রচুর মহিলা সুযোগ পাচ্ছেন। এটাও একটা বড় পরিবর্তন।
নিজের কী কী পরিবর্তন আপনার নজরে পড়ল?
আমার কী বদল হয়েছে সেটা আমি ঠিক বলতে পারব না। আমার যেটা মনে হয়, জীবনে পথ চলতে চলতে মানুষ যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে সেটাই একজনকে অনেকটা বদলে দেয়। ছোট ছোট অভিজ্ঞতাই আপনাকে ম্যাচিওর্ড করে। একজন অভিনেতার এহেন পরিবর্তন তার পারফরম্যান্সেও ধরা পড়ে।
এখন তো আপনি পারিবারিক মানুষ। শ্যুটের সময় নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা দেন প্রযোজক বা পরিচালকদের?
অবশ্যই। পরিবারকে তো সময় দিতেই হবে। চেষ্টা করি সকাল ৯টার থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাজ শেষ করার। কিন্তু সবসময় সেটা হয়ে ওঠে না। শ্যুটিং শিডিউল সবসময় এই টাইম মেনে হয় না। আউটডোর শ্যুটিং হলেও এই সময় মেনে করা সম্ভব হয় না। সে ব্যাপারে আমি ফ্লেক্সিবেল।
টোটাল ধামাল ইউনিটের সঙ্গে বহুদিন পরে কাজ করলেন?
দারুণ অভিজ্ঞতা। পরিচালক ইন্দ্র কুমারের সঙ্গে আবার কাজ করলাম সেই ‘রাজা’ (১৯৯৫) র পর। অনিল কাপুরের সঙ্গে শেষ করেছিলাম ‘পুকার’। অবাক হয়ে যাই ওকে দেখে । কী অসাধারণভাবে ও নিজেকে শুধু ফিজিক্যালি মেনটেন করেনি, প্রফেশনাল কেরিয়ারটাও দারুণভাবে সাজিয়েছে। ‘বেটা’র সময় যে প্যাশন নিয়ে কাজ করত এখনও যেন সেইরকম। রীতেশ দেশমুখের সঙ্গে কখনও আগে কাজ না করলেও ওকে আমি চিনতাম। ‘হান্ড্রেড ডেজ’ ছবির পর আবার কাজ করলাম জাভেদ জাফরির সঙ্গে। আরশাদ ওয়ারসির সঙ্গে কার করলাম ‘দেড় ইশকিয়াঁ’ ছবির পর। অজয় দেবগণের সঙ্গে শেষ কাজ করেছিলাম ‘ইয়ে রাস্তে হ্যায় পেয়ার কে’ ছবিতে। টোটাল ধামাল ছবির সেট আমার জন্য একটা রি-ইউনিয়ন বলতে পারেন। সব পুরনো বন্ধুদের বহুদিন বাদে ফিরে পেলে যে অনুভূতি হয় সেরকমই হচ্ছে।
মুঙ্গড়া গানটার রিমিক্স করা হল অথচ আপনি সেই গানটায় পারফর্ম করতে পারলেন না। কষ্ট হচ্ছে নিশ্চয়ই?
একদমই না। সোনাক্ষী গানটার সঙ্গে দারুণ পারফর্ম করেছে। ওই নির্দিষ্ট চরিত্রর জন্যই তৈরি হয়েছে গানটা। ছবিটা দেখলেই সেটা বুঝতে পারবেন। ইদানীং প্রচুর গান রিমিক্স হচ্ছে। ‘পয়সা হি পয়সা’ গানটারও রিমিক্স হয়েছে। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় হিট গানের আর রিমিক্স হওয়া উচিত নয়। আর যদি করতেও হয় অরিজিনাল গানের মিষ্টতা যেন কিছুতেই নষ্ট না হয় সেটাও দেখা উচিত। এক্ষেত্রে অবশ্য গল্পের সঙ্গে গানটা ম্যাচ করেছে। দিস ফিল্ম ইজ অল অ্যাবাউট মানি। কীভাবে ৫০ কোটি টাকা পাবে তার গল্প। তাই এই ছবির ক্ষেত্রে গানটা বেশ উপযোগী। প্রযোজকরাও হয়তো সেটা মাথায় রেখেই গানটা রেখেছেন।
কিন্তু গানটা যে দর্শকদের পছন্দ হয়েছে এমন তো নয়...
ওই যে বললাম। অনেকে আমার মতো হয়তো রিমিক্স পছন্দ করেন না। আবার এটাও ঠিক অনেকেই এমন আছেন যাদের রিমিক্স গান খুব পছন্দের। সব জিনিসের তো দু’রকম আবেদন থাকে (হাসি)।
দর্শক আবার আপনাকে খানেদের সঙ্গে পর্দায় দেখতে চায়।
সলমন খান, শাহরুখ খান, অক্ষয়কুমার, সঞ্জয় দত্ত, অনিল কাপুর এরা প্রত্যেকেই ভীষণ চার্মিং। প্রত্যেকর সঙ্গেই বারবার কাজ করতে চাই।
এতবছর পরেও অন্তত নাচে আপনার জায়গা কেউ নিতে পারলেন না।
আমি নাচ শিখছি সেই তিন বছর বয়স থেকে। কত্থক। পরে বলিউড নাচ শিখেছি যেটা একদমই আলাদা। মঞ্চে ডান্স পারফর্ম করার সময় শিল্পীকে দর্শকের সঙ্গে আই কনটাক্ট রাখতে হয়। আর সিনেমার ক্ষেত্রে আই কনটাক্ট করতে হয় ক্যামেরার সঙ্গে। এক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ থাকে। ‘তেজাব’ ছবিতে যখন আমি ‘এক দো তিন’ গানের সঙ্গে পারফর্ম করেছিলাম তখন কোরিওগ্রাফার সরোজজি (খান) আমাকে রিহার্সাল করতে বলেছিলেন। সেই প্রথম আমি কোনও নাচের জন্য রিহার্স করি। রিহার্সাল করে এবং শ্যুটিং করতে করতে আমি বুঝতে পারি যে ফিল্মি ডান্স কোথায় আলাদা। পরবর্তীকালে ‘কে সারা সারা’ করার সময় প্রভু দেবার থেকে শিখেছি। চিন্নি প্রকাশ বা জয় বোরাডের থেকেও টিপস নিয়েছি। পর্দায় একটা নাচকে সুন্দর দেখানোর জন্য ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলটা জানা খুব জরুরি। পরিচালক কীভাবে ভাবছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। এই সবকটা জিনিস ঠিকঠাক হলেই সিনেমায় আইকনিক গান তৈরি হয়।
বর্তমান অভিনেত্রীদের মধ্যে কার কার নাচ আপনার ভালো লাগে?
অনেকেই খুব ভালো নাচে। ক্যাটরিনা দুর্দান্ত ডান্সার। ও নিজের আইটেম নম্বরগুলোর জন্য অসম্ভব পরিশ্রম করে। অনেক শক্ত শক্ত স্টেপ তাই খুব সহজ মনে হয়। সোনাক্ষীও খুব এক্সপ্রেসিভ। দীপিকা পাড়ুকোনকেও ভালো লাগে। বিশেষ করে ওর ‘ঘুমর’ নাচটা আমার খুব প্রিয়।
ঘুমরের কথা যখন বললেন তখন জানতে চাই আপনি নিজে এরকম নতুন ডান্স ফর্ম শিখতে চান?
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই। ‘ক্রিমপিং স্টাইল’ ইদানীং খুব চলছে। ‘কে সারা সারা’ গানে প্রভু দেবার সঙ্গে আমি এই স্টাইল রপ্ত করতে কিছুটা চেষ্টা করেছিলাম। সেটা আরও ভালোবাবে আয়ত্ত করতে চাই।
অনেকেই আপনাকে মধুবালার সঙ্গে তুলনা করেন।
না না । মধুবালা ওঁর সময় একজন আইকনিক অ্যাকট্রেস। ওই সময়ের অসাধারণ এক শিল্পী। ওঁর সঙ্গে আমার তুলনা আমি উপভোগ করি। গর্ব হয়। কিন্তু আমি ওঁর ধারেকাছেও নেই। আমি সবসময় নানা ধরনের চরিত্র করার চেষ্টা করেছি। ‘পুকার’ ছবিতে যেমন আমার চরিত্রটায় গ্রে শেডস ছিল। গান বা নাচের ক্ষেত্রেও আমি এটা মনে রাখার চেষ্টা করেছি। আমার ছবির সংখ্যা প্রায় ৭৮। অসুস্থতা সত্ত্বেও মধুবালা প্রায় সমসংখ্যক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
নতুন কী ছবি করছেন?
করণ জোহরের ‘কলঙ্ক’ আসছে। নিজে একটা অনলাইন ডান্স স্কুল চালাই। একটা ছবি প্রযোজনাও করছি। মার্চ মাসের শেষে নেটফ্লিক্সে আসবে। বেশ কিছু চিত্রনাট্য নিয়ে নাড়াচাড়া করছি। তারমধ্যে কয়েকটা বেশ ইন্টারেস্টিং।