পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
ক্রমশ ওদের সম্পর্কটা ছুটে চলে মিউচুয়াল সেপারেশনের দিকে!
শৌনক আর অনুসূয়ার কথা আমরা জানতে পারি ঈশার কাছ থেকে। প্রশ্ন হল ঈশা কে? ঈশা একজন লেখিকা। তারই গল্পের চরিত্র শৌনক আর অনসূয়া। ঈশার গল্পের ঠিক এই ভাঙনের প্রাক্মুহূর্তে নতুন একটি চরিত্র প্রবেশ করায় তার স্বামী অগ্নিভ। হ্যামলিনের বাঁশিওলার মতো সেই চরিত্র ঢোকে শৌনকের ঘরে। তার নাম নেই। নেই আদি বা অন্ত! সে কে? এই চরিত্রটি পারবে ভাঙন আটকাতে?
সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ছবি ‘মুখোমুখি’।
ঈশার চরিত্রে রয়েছেন গার্গী রায়চৌধুরী। অগ্নিভ’র চরিত্রে রজতাভ দত্ত, শৌনকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যিশু সেনগুপ্ত এবং অনসূয়ার ভূমিকায় পায়েল সরকার। এছাড়াও রয়েছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, ঊষসী চক্রবর্তী, সাহেব ভট্টাচার্য এবং দর্শনা বণিক। নামহীন জাদুবাস্তবতায় ঘেরা চরিত্রে অঞ্জন দত্তকে নিয়ে একটা চমক দিয়েছেন পরিচালক!
গল্পের মধ্যে গল্প— এই ছাঁচে গড়া ‘মুখোমুখি’। তবে এই ছবির গল্প আসলে অনেকগুলো— একদিকে কৃষকমৃত্যু, কৃষক আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী দলের দেশ দখল, প্রান্তিক মানুষের বেঁচে থাকার সংঘাত, বাজার অর্থনীতি, মধ্যমেধার শিল্পের আকাট চিৎকার, তৈলমর্দন, বিজ্ঞাপনের শৃঙ্খলে বদ্ধ জীবন, শিল্পী মনের সংঘাত, প্রেম এবং অতি অবশ্যই নিজেকে খুঁড়ে দেখার আহ্বান।
আর সেখানেই মুশকিল হয়েছে। এতকিছু একসঙ্গে জড়িয়ে আছে এই ছবিতে যে কোনও একটা বিষয়ে মনোনিবেশ করার আগেই অন্য একটা বিষয় এসে হাজির হচ্ছে। এই বিষয় বৈচিত্রের জন্যই বুঝতে অসুবিধা হয়, পরিচালক কাদের কথা বা ঠিক কোন কথা বলতে চাইছেন এই ছবিতে?
সাংবাদিক? চিত্রকার? গায়ক? কবি? গীতিকার? ঔপন্যাসিক? বাজারি শিল্পী? সম্পর্কের কথা? নিজেকে চেনার কথা? নাকি মৌলিক কাজ করে শিল্পী হয়ে ওঠার পথে উত্তরণের গল্প?
সেই উত্তর পাওয়া না গেলেও ছবিতে ‘ফ্ল্যাশব্যাকে’র প্রচুর ব্যবহার মিলেছে। সঙ্গে ব্যবহার হয়েছে প্রচুর রূপক— আয়না, ট্রেড মিল, কনফেশন রুম, অঞ্জন দত্তের চরিত্র এবং অতি অবশ্যই প্রসেনিয়াম থিয়েটারের আদলে গড়ে তোলা ছবির সেট! বলে রাখা ভালো, গোটা সেটে কোনও দেওয়াল নেই। অথচ পুরোটাই সাংসারিক নিয়মানুবর্তিতার যে দমবদ্ধ আবহ— তা গড়ে তোলে! অঞ্জন দত্তর চরিত্রটি যে আসলে শৌনকের অলটার ইগো সেকথা বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয় দর্শকের! তারপরেও প্রশ্ন ওঠে—
গ্রিক ট্যাজেডির ধাঁচে শৌনক যখন শাস্তি পাচ্ছে, পস্তাচ্ছে এবং ‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু’ দেখতে পাচ্ছে তাতে আপামর জনসাধারণের ঠিক কোন লাভ হচ্ছে?