চার্লস ডারউইন যাকে ‘যোগ্যতমের উদবর্তন’ বলতেন, দৈনন্দিন জীবনচর্যায় তাকেই ‘টিকে থাকা’ বলা হয়। যোগ্যতম ছাড়া বাকিদেরও টিকে থাকতে হয়। অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষার জালবন্দি অতীত, পলায়নমুখী বর্তমান এবং সমাধান প্রত্যাশী ভবিষ্যৎ, সকলেই টিকে থাকে।
শান্তিনিকেতন ও ব্রাহ্ম সমাজের গণ্ডির বাইরে রবীন্দ্রসঙ্গীত সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় শুভ গুহ ঠাকুরতা ১৯৪৮ সালে দক্ষিণ কলকাতায় তৈরি করেন ‘দক্ষিণী’ নামক প্রতিষ্ঠানটি। শুধুমাত্র গান শেখানোর জন্য নয় রবীন্দ্রনাথের ভাবধারা, মনন ও শুদ্ধ রবীন্দ্রগান পরিবেশনার শিক্ষা দেশে বিদেশে পৌঁছে দিতেই সৃষ্টি করেন এই প্রতিষ্ঠান।
এক নপুংসক, এক রমণী ও এক বাঘিনী— তিন স্তন্যপায়ী প্রাণীর বেদনাক্লিষ্ট যাপনের আখ্যান নিয়ে তৈরি ‘স্তন্যপায়ী’ নাটকটি। বিনোদ ঘোষালের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত এই নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনার দায়িত্বে রয়েছেন রাকেশ ঘোষ।
বর্তমান সময়ের একজন প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পী আরফিন রানা। সঙ্গীতচর্চা করেছেন ছোট থেকেই। এখন গান তাঁর পেশা। ২০১২ সালে জি বাংলার ‘সা রে গা মা পা’তে অংশগ্রহণ করেন তিনি। তারপর একাধিক প্লেব্যাক করেছেন শিল্পী।
শাস্ত্রীয় নৃত্যের মাধ্যমে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচার এবং সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি গিরিশ মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ‘ভাবতরঙ্গ ৩ শাস্ত্রীয় নৃত্য উৎসব’। ‘পুনশ্চ নৃত্যকলা কেন্দ্র’র আয়োজনে এই শাস্ত্রীয় নৃত্যানুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল ইনফোসিস ফাউন্ডেশন (বেঙ্গালুরু), ভারতীয় বিদ্যাভবন (কলকাতা)।
বিশ্বকবিতা দিবসে উপলক্ষ্যে সম্প্রতি রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের শিবানন্দ হলে ব্রততী পরম্পরা একটি কবিতাসন্ধ্যার আয়োজন করেছিল। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘পোয়েট্রি বিয়ন্ড বর্ডারস’।
‘নাট্যিক কোলকাতা’ নাট্যগোষ্ঠী সম্প্রতি এক মনোজ্ঞ সান্ধ্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সাম্প্রতিক সময়ের কথা মাথায় রেখে আয়োজিত হয় সেমিনার ও একটি নাটক। বর্তমান সময়ে নতুন প্রজন্মের কাছে সুস্থ নাট্যচর্চার জন্য কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন— এই বিষয়কে কেন্দ্র করে আলোচনা হয় সেমিনারে।
‘নাদ’। এমন এক অভিনব শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর যেখানে শ্রোতারা বিরল যুগলবন্দির সুর-তাল-ছন্দে নিজেদের ভরিয়ে তুলতে পারেন। জি ডি বিড়লা সভাঘরে সদ্য সমাপ্ত তিনদিনব্যাপী ‘নাদ’ উৎসবে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও শ্রোতারা একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন।
কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ। মহাভারতের এক অন্যতম অধ্যায়। এই যুদ্ধের পিছনে ছিল রাজনৈতিক অভিসন্ধি। রাজ্যপাট নিজের দখলে রাখতে কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে নিজের মতো আইন তৈরি করে নিয়েছিলেন সত্যবতী।
বারুইপাড়া নৃত্যলোক পরিবেশিত ‘বীরাঙ্গনা’ নৃত্যনাট্য সম্প্রতি মঞ্চস্থ হল সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস ও রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই নৃত্যনাট্যে পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারতের ছয় নারী শকুন্তলা,
গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের নৃত্যধারার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে সম্প্রতি আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘গুরু স্মরণম ২০২৪’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। রাজীব ভট্টাচার্যের দক্ষ নির্দেশনায় ‘সৃজন ছন্দ’-এর উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে ওড়িশি নৃত্যের জগতে গুরুজির প্রভাবকে সম্মান জানানো হয়।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় শান্তিনিকেতনে প্রবর্তিত বসন্ত উৎসবের আমেজ পাওয়া গেল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি প্রাঙ্গণে সোসাইটির সদস্যদের পরিচালনায় মহা সমারোহে পালিত হল ঋতুরাজ বসন্ত আবাহন উৎসব।
ইচ্ছেডানা আয়োজিত পলাশ পরব ২০২৪ সম্প্রতি বাঙুর ‘কলকাকলি’ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হল। সম্মানীয় অতিথিবৃন্দকে স্মারক প্রদান ও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন ইচ্ছেডানার কর্ণধার অর্পিতা বরাট।
বসন্তোৎসব ও শান্তিনিকেতন কালক্রমে যেন একে অপরের পরিপূরক। তা উদযাপন করার জন্য ‘পূরবী’ প্রতি বছরের মতো আয়োজন করেছিল বসন্ত বন্দনার ‘বসন্তোৎসব সেকাল ও একাল’।
কর্ম বা গৃহক্ষেত্রে অশান্তি মনঃকষ্ট হতে পারে। পেশাদারী কর্মে সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
গানে, কথায়, আবৃত্তি, অনুভবে অনন্য একটি সন্ধ্যা। যে সন্ধ্যার সারথী চার কন্যা — সোমা সেন চন্দ্র, রোমি সেন, বর্ণালী সরকার ও সুদেষ্ণা ভট্টাচার্য। সম্প্রতি পি সি চন্দ্র গার্ডেনের ম্যাপলে চার শিল্পীর চতুর্দোলায় চড়ে মুগ্ধতার সফর সারলেন হল ভর্তি শ্রোতা দর্শক। প্রাধ্যান্যে গান। তাই অনুষ্ঠান শীর্ষকেও সেই সঙ্গতি, ‘এ শুধু গানের দিন’। শুরুতে আসন্ন উৎসবের উৎস মুখে নিয়ে গেলেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ছাত্রী রোমি সেন, আগমনী (যাও গিরিরাজ) শুনিয়ে। সেই রেশ ধরে রাখলেন পরের নিবেদনেও (বেঁধেছি বীণা)। রোমির অনিন্দ্য নান্দীমুখের পর বাচিক শিল্পী বর্ণালী সরকার ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন শৈশব। যে হারিয়ে যাওয়া শৈশব হাতছানি দেয় আসন্ন পুজোর ছুটিতে ‘হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা’র দিনগুলিকে। তাই নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘ছুটির মজা’, কিংবা শুভ দাশগুপ্তর ‘মেঘ বলল’ মনকে বড় স্মৃতিমেদুর করে তোলে। সেই মুগ্ধতাকে কন্ঠে, সুরে, ভাবে, পরিবেশনে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে গেলেন আশৈশব রবীন্দ্র-নজরুল-অতুলপ্রসাদের গানে-কবিতায় লালিত সোমা সেন চন্দ্র। ‘এ শুধু গানের দিন’-এ তাই রবীন্দ্রনাথকে কণ্ঠে নিয়েই (মহা বিশ্বে মহাকাশে, ও যে মানে না মানা) সুর-সফর শুরু করেন মনোজ মুরলী নায়ারের এই ছাত্রী। বর্তমানে মৌসুমী মুখোপাধ্যায়ের ছাত্রী সোমা তালিমপ্রাপ্ত গলার পরিচয় দিলেন নজরুলগীতিতে (গোঠে রাখাল), অতুলপ্রসাদীতে (তুমি গাও)। দ্বিতীয় পর্বে শিল্পী শোনালেন জনপ্রিয় আধুনিক বাংলা গান। এ পর্বে আশা, লতা, আরতি, জটিলেশ্বর ও সন্ধ্যার কালজয়ী গানগুলি সোমা শোনালেন অনায়াস দক্ষতায়। সেই একই সাবলীলতায় রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে আধুনিক, নানা রঙের গানে নিজের সুনামের প্রতি সুবিচার করলেন অনুষ্ঠানের শেষ শিল্পী সুদেষ্ণা ভট্টাচার্যও।
প্রিয়ব্রত দত্ত
ছবি: ভাস্কর মুখোপাধ্যায়
ছবি: ভাস্কর মুখোপাধ্যায়
