Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ভাসানের পরে
মৃত্তিকা মাইতি

 অশ্রু বসে আছে দুর্গা ঠাকুরের পায়ের কাছে। ফুল-মালাগুলো গুছিয়ে কাঁড়ি করা। পুজো শেষ। আজ ভাসান। একটু পরেই বরণ শুরু হবে। পাড়ার বউরা বরণডালা হাতে অপেক্ষা করছে রুম্পাদের উঠোনে। এটা তাদেরই বাড়ির পুজো। রুম্পার মা আর কাকির বরণ সারা হলে তবেই বাকিরা করতে পারবে।
ঢাক বাজছে, ডুংডু ডুডুং ডুডুং ডুং। সেই আওয়াজ ছাপিয়েও ঢং... ঢং... ঢং শব্দটা আসছে কানে। রুম্পাদের ঘণ্টাঘড়ির শব্দ। এত বড় ঘড়ি গ্রামে কারও বাড়িতেই নেই। রুম্পাদের ঘরে আরও অনেক জিনিসই আছে যা শহর থেকে আসে। জামা-কাপড়ে কত সুন্দর সুন্দর ফুল, নকশা। সেরকম জামা অশ্রু কখনও পরেইনি। রুম্পার কাকা মাঝে মাঝে কলকাতায় যায় পান নিয়ে। বিক্রি করতে। তখন আনে। ওরা বড়লোক। দু-দুটো পান বরজ, ধানকাটার মেশিন আছে। পাকা ঘর, পুকুরের ঘাটটা অবধি বাঁধানো। মাইতিপাড়ায় ওদের বাড়িতে হুটহাট কেউ ঢুকতে পারে না।
পুজোর দিনগুলো যদিও আলাদা। যে যখন খুশি এসে ঠাকুর দেখেছে, প্রসাদ খেয়েছে। আজ আরও বেশি লোক ভাসান বলে। প্রতিমার চালা থেকে কে কী নেবে, আগে থেকে দেখে রাখছে।
পুজো হয়েছে রাস্তার ধারে মাটির একচালাটায়। খড় দিয়ে ছাওয়া। প্রতিবছর এখানেই হয়। পুজোর মুখে মুখে গোবর আর এঁটেল মাটি দিয়ে লেপে-পুছে চাল বাটা দিয়ে আলপনা।
পুজোর ক’দিন এখানে বসেই কেটেছে অশ্রুর। বসে বসে সব দেখেছে সে। খড়ের ভূতে মাটি পড়ল, সেই মাটি রোদে শুকিয়ে ঠাকুরের গায়ে ফাটল হল। তাতে আবারও মাটি দিয়ে ফাটল বুজিয়ে তারপর রং। সাজ-সজ্জা। চক্ষুদান।
সেই সুন্দর প্রতিমার মুখটা এখন কেমন দেখাচ্ছে! যেন বাড়ির বউ পরপর রাত জেগে মুখ শুকিয়ে ফেলেছে। চোখের তলায় কালি। তবু কেউ তাকে ছাড়ছে না। ঢাক বাজছে, উলু পড়ছে। পাড়ার বউদি, কাকিরা এখন ঠাকুরের মুখে পানপাতা বুলিয়ে মিষ্টি দিচ্ছে। তার সিঁথির সিঁদুর নিয়ে পরছে। একে অপরকে পরাচ্ছে।
অশ্রু ভেবে পায় না সবেতেই ওদের আনন্দ কীসের! মা আসবে তাতেও, চলে যাবে তাতেও? ভাবতে গিয়ে মনে হল, ওদের আসল মা তো কাছেই আছে। মাটির মা নাই বা রইল। তাকে ঘিরে শুধু আনন্দই নেওয়ার। কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই! কিন্তু অশ্রুর তো তা নয়। মায়ের মুখটা চোখে ভেসে উঠল। থাকলে আজ মা-ও বরণ করত। সিঁদুর খেলত।
অশ্রুর মনে পড়ে, পুজোর সময় মা তেল মাখিয়ে চুল বেঁধে দিত, জামা পরিয়ে দিত সুন্দর করে। তারপর মায়ের হাত ধরেই পুজো দেখতে বেরিয়ে পড়া।
গত বছর এই সময়েই মাকে দাদা, বাবা আর পাড়ার কয়েকজন কাকা মিলে খাটিয়ায় শুইয়ে কাঁধে চাপিয়ে নিয়ে গিয়েছিল শ্মশানে। বাবা অশ্রুকে কোলে টেনে নিয়ে ধরা গলায় বলেছিল, ‘পুজোটাও কাটল না, তোর মায়ের ভাসান হয়ে গেল রে!’
মায়ের কী অসুখ করেছিল অশ্রুকে কেউ বলেনি। তবে সে দেখেছে, মাঝেমাঝে মুখ দিয়ে রক্ত বেরত। রোগা আর কালো হয়ে যাচ্ছিল মা। বাবার হাত ধরে দাঁড়িয়ে দেখেছিল, মোটা মোটা কাঠগুলি দাউ দাউ করে জ্বলছে। ভেতরে শুয়ে আছে মা। কাঠের সঙ্গে মিশে পুড়ে যাচ্ছে। হুহু করে উঠল বুকটা। কান্না এসে চেপে ধরল।
এই সময় পিঠে টোকা পেয়ে চমকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে, পিয়ালি। পাশের বাড়ির জেঠুর মেয়ে।
‘তোর বউদি ডাকছে। বলল তাড়াতাড়ি যেতে।’
একটু পরেই ঠাকুর উঠবে কাঁধে। পাড়ার পুরুষ মানুষগুলো খালি গায়ে লুঙ্গির ওপর গামছা এঁটে তৈরি। মিষ্টির হাঁড়ি এনে রুম্পাকে ধরতে দিল তার মা। অশ্রুর কৃষ্ণাকাকি। এ হল ঝিউড়ি ছাড়ার মিষ্টি। মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ডেকে আনলে সেই ঝিউড়ি যখন ফেরে তখন মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে ছাড়তে যেতে হয়। দুর্গার বেলাতেও তাই। তবে দুর্গা যখন ফেরে, মিষ্টির হাঁড়ি যায় পুকুরপাড়ে। যারা ভাসানে যায়, পায়।
ঘরে যেতে ইচ্ছে করছিল না অশ্রুর, কিন্তু না গেলে বউদি আবার মুখ করবে। উঠে পড়ল। চট করে শুনে আসবে।
রুম্পাদের বাড়ির কিছুটা পিছনেই তাদের ঘর। গিয়ে দেখে, বাবা তখনও মাঠ থেকে ফেরেনি। সকালে বিছানা ছেড়েই মুখ ধুয়ে বেরিয়ে যায় দা আর ঝুড়ি নিয়ে। সব খেতই এখন সবুজ। রোয়া হয়ে গেছে মাস তিনেক আগেই। এখন ধান বেরনোর মুখে। তাদের চাষের জমিন ঘুরে ঘুরে দেখতে যায় বাবা! পোকা লাগল কি না, মাঠে জল কতটা আছে। ফেরার সময় গোরু দুটোর জন্য ঘাস কেটে আনে। এ সময় গোরু বাইরে যায় না। আলের ঘাস এনে তাদের খাওয়াতে হয়।
বউদি মাঠে যেতে পারে না। ছেলে দু’বছরের। দাদা বাইরে খেটে টাকা রোজগার করে। চাষের কাজ সে করবে না। আলাদা হওয়ার পরেও একা বাবাকেই সব করতে হয়। দাদা কিছু দেখে না।
মা মরে যাওয়ার পরে পরেই দাদা কেমন বদলে গেল। রোজই ঝগড়া করত। একদিন তো পাড়ার লোকজন ডেকে বলেই দিল, ‘এতগুলো পেট আমি টানতে পারব না। আজ থেকে যার যার হাঁড়ি আলাদা।’ সেদিন থেকেই অশ্রু আর তার বাবা আলাদা খায়। মা না থাকায় অশ্রুকেই এখন বাবার খেয়াল রাখতে হয়। চানের আগে তেল, গামছা এগিয়ে দেয়। স্কুলে যাওয়ার আগে ভাতে ভাত বসায়। বাবা করে তরকারি। রাতে বিছানা পাতে অশ্রুই।
বাবার জন্য খুব কষ্ট হয় অশ্রুর। অষ্টমীর দিন তাকে বলেছিল, ‘রোজ রোজ ওদের বাড়িতে যাস না মা। সবাই নতুন জামা পরে আর তুই পুরনো ছেঁড়াটা পরে ঘুরিস, ভালো দেখায় না।’
অশ্রু বলেছিল, ‘আমি কারও সঙ্গে খেলি না, চুপ করে এক জায়গায় বসে থাকি।’ তারপর জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তুমি কেন একদিনও ঠাকুর দেখতে গেলে না বাবা?’
নব মেয়েকে কাছে টেনে নিল। ‘মা আমার জামার অভাবে কোথাও ঘুরতে যেতে পারল না, আমার দেখে কী হবে?’ তবে অশ্রু জানে, বাবা সব সময় ঘরের জায়গাজমি দেখাশোনা করে। না হলে ভাগের চাল জুটবে না। নগদ টাকা নেই, তাই তাকে জামা কিনে দিতে পারেনি।
মা থাকতে আনন্দ ছিল। কী সুন্দর ভেড়ু পলুয়া রান্না করত। সেই ঢ্যাঁড়শের চচ্চড়ি দিয়ে একথালা ভাত খাওয়া হয়ে যায়। মাছের ডিমের টকও করত তেমন! পিঠের সময় পিঠে। মা যেখানেই যেত, রুম্পাকে সঙ্গে নিত। একবার যাত্রা দেখতে গিয়ে কী কাণ্ড! রুম্পার সামনে একটা ঢ্যাঙা লোক বসেছিল। সে কিছু দেখতে পাচ্ছিল না। মা সমানে লোকটার সঙ্গে মুখ চালিয়ে তাকে উঠিয়ে ছাড়ল।
ঘরে সবাইকে সামলে রাখত মা। তার কথা সকলকে শুনতে হতো। কিন্তু এখন বউদির আইনই চলে।
তপতী ঠাকুরের আসনে বরণডালা রাখছিল। অশ্রু সামনে গিয়ে দাঁড়াতে বলল, ‘শোন, এ বছর দুর্গা ঠাকুরের কাপড়টা ভালো দিয়েছে রুম্পার বাপ। জলে নেমে ওটা নেওয়ার চেষ্টা করবি। তোকে তো আবার বলে না দিলে কিছু করতে পারিস না।’
মায়ের লালপেড়ে কাপড়টা এখনও ছাড়েনি বউদি। মুখটা সিঁদুরে মাখামাখি। ধূপ, ধুনো, প্রদীপের গন্ধ মিশে বউদির গা থেকেই ঠাকুরপুজোর গন্ধ পাচ্ছে অশ্রু। অথচ তার কথাগুলো বুকের মধ্যে গিয়ে কষ্ট দিচ্ছে খুব।
‘দাদা তো আনবেই কিছু না কিছু।’ এইটুকুই বলতে পারল অশ্রু। তারপরেই তপতী হুঙ্কার দিয়ে উঠল, ‘দাদা আনে বলে তোকে আনতে নেই? পিয়ালি আর তার ভাইগুলোকে দেখ তো? ওদের বাপ তো নেয়ই, তারাও যা পারে নিয়ে যায়। ওইটুকু-টুকু দশ-বারো বছরের বাচ্চাগুলো কী চালাক!’
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল অশ্রু। ওদের ছোট বলছে বউদি। অশ্রুও যে তাদেরই বয়েসি তা কি ভুলে গিয়েছে!
‘দাঁড়িয়ে রইলি যে? সবার সব কিছু নেওয়া হয়ে গেলে তারপর যাবি? যা। একেবারে খালি হাতে ফিরিস না। কিছু না পারিস, ডাব বসানো ঘটটা নিয়ে আসিস। ওতে করে খাওয়ার জল বইতে পারবি কল থেকে।’
তপতীর ঝাঁঝানি মেখে আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে এল অশ্রু। আগে কখনও ভাসানের সময় জলে নামেনি সে। মা বারণ করত। বলত, ‘হুড়োহুড়িতে ডুবে গেলে কে বাঁচাবে!’ বউদিও তখন কিছু বলতে পারত না। আজ বলছে।
মণ্ডপে গিয়ে অশ্রু দেখল, বরণ শেষ। সব ঠাকুরের ঠোঁটের ওপরেই দলা দলা মিষ্টি উঁচু হয়ে রয়েছে। যে যেমন পেরেছে ঠুসে দিয়েছে। উঠোনে ভিড়। অশ্রুর বন্ধুরা ছুটাছুটি করছে। খুব হুড়ি হচ্ছে। কাঁধে উঠছে গোটা একচালা। ‘বলো দুর্গা মাঈ কী— জয়।’
পুকুরের দিকে চলল সবাই। উঠোন পেরিয়ে রুম্পাদের বাগান। বাঁধাকপি, ফুলকপি, টম্যাটো, গাঁঠিকচু আরও কত কী। পাশ দিয়ে সরু রাস্তা পুকুর ছুঁয়েছে।
কষ্ট হচ্ছে দাদা-কাকাদের। যে পুজোই হোক, গ্রামে ভাসান দিনের বেলায়। একে মাথার ওপর সূর্যের তাপ তার ওপর সব ঠাকুরই এক কাঠামোয়। বইতে ঘাম ঝরে যাচ্ছে ওদের। পুকুরপাড়ে পৌঁছল সবাই। চারপাশে নারকেল আর খেজুর গাছ। একপাশে ঘাট।
রুম্পার দাদা অরূপ ঘট মাথায় করে এনেছে। নামিয়ে রাখল। ওই ঘটটাই নিতে বলে দিয়েছে বউদি। রুম্পা মিষ্টির হাঁড়িটা তার দাদুর হাতে ধরিয়ে দিল। সেও জলে নামবে। প্রতিমা পড়ার আগেই অশ্রুর বন্ধুরা এদিক-ওদিক দিয়ে হড়কে নেমে পড়েছে কোমরজলে।
বড়রা কিছুক্ষণ হাঁফ নিয়ে তারপর ঠাকুর তুলল। ঘাট বেয়ে আস্তে আস্তে নামল। পাড়ে ঢাক, কাঁসর, উলুধ্বনি। ঠাকুমা, কাকিমা আরও একবার ঠাকুরের পা ছুঁয়ে প্রণাম সেরে নিচ্ছে। ‘ছেলেপুলে সঙ্গে নিয়ে আসছে বছর আবার এসো মা।’
এখন ঠাকুর জলে ফেলে ঠেলতে ঠেলতে মাঝপুকুরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একটু পরেই সকলের পা মাটি ছাড়া হয়ে গেল। মানুষগুলোও মাছেদের মতো জল কাটছে।
ঠাকুর চিত হয়ে ছিল। উল্টে দেওয়ার আগেই সকলে ঝাঁপিয়ে পড়ল তার ওপর। যে যা পাচ্ছে, সেটা ধরেই টান মারছে। পাড়েও হইচই হচ্ছে খুব। এ বলছে ওটা নে, ও বলছে সেটা।
জলে হাপড়াতে হাপড়াতে এর ওর ফাঁক গলে অশ্রু ঠাকুরের কাছে পৌঁছতে পৌঁছতেই বড়রা যা নেওয়ার নিয়ে নিয়েছে। টানাটানিতে শোলার সাজ কুচি কুচি হয়ে নানা দিকে ভেসে যাচ্ছে।
গুঁতাগুঁতিতে তার মাথাটা গিয়ে ধাক্কা খেল ঠাকুরের গায়ে। তখনই কীসের যেন গন্ধ এসে ঢুকল নাকে। ঝাপুস ঝুপুস জল চলকে নাকে-মুখে ঢুকছে তার। জল ঘুলিয়ে ওঠায় পাঁকের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
ঝোঁট দিয়ে বানানো ঠাকুরের পরচুলা খুলে গেছে। পাটের কোঁকড়ানো সেই কালো চুল এলো হয়ে মুখ ঢেকে ফেলেছে। সেগুলো সরাতে সরাতে অশ্রুর মনে হল এ তো সাবুর গন্ধ! চুল বসানোর সময় সাবু জ্বাল দিয়ে সেটাই আঠা বানিয়েছিল কারিগর। জল পেয়ে টাটকা হয়ে গিয়েছে। মায়ের গায়ের রং থেকেও কী যেন তেলের গন্ধ বেরচ্ছে। বেলপাতা, ফুল, নতুন কাপড়, শোলার গয়না— আরও যে কত রকমের গন্ধ আসছে, বুঝতে পারছে না অশ্রু। সব আলাদা আালদা। আবার সব যেন মিশেও রয়েছে। বুক ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে, মাথা ঘুরছে।
আর ভাসতে না পেরে ডুব দিয়ে দিয়ে ধারে গিয়ে ঠেকল অশ্রু। তারপর হাঁফাতে হাঁফাতে ঘাটে। পাড়ে এখন মিষ্টি নিয়ে কাড়াকাড়ি। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গিয়ে দেখে পায়ে নরম পাঁক লেগে আছে। ধোয়ার জন্য ঘুরে দাঁড়াল। তার বন্ধুরাও উঠে আসছিল। কেউ পেয়েছে কার্তিকের মাথার শোলার মুকুট, কেউ কলাবউয়ের কাপড়, টিনের তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়েছে অনেকে। অন্য কিছু না পেয়ে কয়েকজন পরে নিয়েছে ঠাকুরের গলার শুকিয়ে যাওয়া ফুলের মালা। ভিজে চুপচুপে মালা থেকে টপ টপ করে জল পড়ছে। এখান থেকে অশ্রু ফিরে যাবে খালি হাতেই?
একজন তার গায়ে ঠেলা দিয়ে জানতে চাইল, ‘কী রে, ঘর যাবি না?’
সে বলল, ‘তোরা যা, আমি যাচ্ছি।’
ঘরে তো ফিরতেই হবে তাকে। মাঠ থেকে বাবা খেতে আসবে। মাটিতে চাটা পেতে ভাত বেড়ে দিতে হবে। পাশে রাখবে জলের গেলাস। বাবা বলবে, আয় মা, তুইও বোস। এখন সে বাবার মা হয়ে গিয়েছে।
মাঝপুকুরে তাকাল অশ্রু। সেখানে প্রতিমার মুখ উল্টোদিকে ঘুরে জলে ডুবে গিয়েছে। উঁচু হয়ে আছে পিছনের কাঠামোটা। দেখা যাচ্ছে কাঠ, দড়ি আর খড়। কিছুদিন পর ঠাকুরের মাটি ঝরে পুরো খড় বেরিয়ে পড়বে।
পরের বছর আবার মাটি মেখে সেজে উঠবে দুর্গা। অশ্রুর মায়ের যদি এরকম কাঠামো হতো নতুন করে পাওয়া যেত মাকে! কিন্তু আসল মায়ের তো তা হয় না।
পা ধোয়ার সময় মাথা নামিয়ে জলের ওপর ঝুঁকে পড়তেই নিজেকে দেখতে পেল অশ্রু। চুলগুলো ভিজে। পাকানো দড়ির মতো কাঁধের দু’পাশে ঝুলছে। কপালে কালো টিপ। গলার নীচে কণ্ঠার হাড় দুটো ঠেলে বেরিয়ে রয়েছে। তার কাঠামো এটা। হালকা ঢেউ এসে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। জল স্থির হওয়ার অপেক্ষায় একদৃষ্টে চেয়ে রইল সে।
আবার ঝুঁকতেই আঁইধাই করে উঠল বুকটা। মায়ের মুখটা না? জলে কাঁপছে! হ্যাঁ, ছোট্ট মুখে জ্বল জ্বল করছে সিঁদুরের টিপ, ঘোমটা দেওয়া। জলে ঝিলিক দিয়ে উঠল রোদ। ভেসে যাওয়ার আগেই এবার সে আরও ঝুঁকে ছোট্ট দু’হাতের আঁজলা ভরে তুলে নিল তার মায়ের মুখ।
14th  April, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

১১

‘নিশীথ রাক্ষসীর কাহিনী’— সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত এক কাহিনী। এই লেখাটি তিনি শেষ করে যেতে পারেননি। লেখাটি শুরু করে বেশ কিছুটা এগবার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।  
বিশদ

12th  May, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় 

চিন্তাপূর্ণী দেবী, পর্ব-১১

গাড়োয়াল হিমালয় ও সংলগ্ন হিমাচল প্রদেশে চিন্তাপূর্ণী দেবীর মান্যতা খুব। কেননা ইনিও নয় দেবীর এক অন্যতমা মহাদেবী। জ্বালামুখী ও কাংড়ার খুব কাছেই চিন্তাপূর্ণী দেবীর স্থান। নগরকোট কাংড়া থেকে চিন্তাপূর্ণীর দূরত্ব ৫০ কিমির মতো।  
বিশদ

12th  May, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই 
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

১০
ফেরার পথে আর হেঁটে নয়, গাড়িতে করেই বাড়ি ফিরে এলেন দুই বন্ধু। তারপর নিস্তেজ নার্ভকে সতেজ করার জন্য দু কাপ গরম পানীয় নিয়ে তাঁরা মুখোমুখি বসলেন। তখনও তাঁদের ঘোর পুরোপুরি কাটেনি।  
বিশদ

05th  May, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

জ্বালামুখী, পর্ব-১০

হিঙ্গুলায়া মহাস্থানং জ্বালা মুখ্যাস্তথৈব চ। একান্ন সতীপীঠের অন্তর্গত এই জ্বালামুখীতে আমি প্রথম গিয়েছিলাম তেইশ বছর বয়সে। তারপর তো বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার।
এ যাত্রায় কাংড়া দুর্গ দেখার পর এখানে রাত্রিবাস না করে বাসস্ট্যান্ডে এসে পঁচিশ কিমি দূরে জ্বালামুখীতে পৌঁছলাম।
বিশদ

05th  May, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই 
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়


পরবর্তী ডাকেই শিশিরকুমার তাঁর প্রাণাধিক প্রিয় পুত্র পয়সকান্তির ছবি বন্ধুকে পাঠিয়ে দিলেন। সেই ছবির সঙ্গে তিনি একটা চিঠিও পাঠালেন। তিনি তাঁর বন্ধুকে লিখেছিলেন, আপনার কথামতো আমি ছবিটা পাঠালাম। 
বিশদ

28th  April, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় 

নগরকোট কাংড়া, পর্ব-৯
চামুণ্ডা নন্দীকেশ্বর থেকে এবারের দর্শন নগরকোট কাংড়ায়। পথের দূরত্ব মাত্র পঁচিশ কিমি। এ পথে আমি বেশ কয়েকবার এসেছি। প্রথম এসেছি ১৯৬৪ সালে। আমার রাত্রিবাসের স্থল আরও পঁচিশ কিমি দূরে জ্বালামুখীতে। 
বিশদ

28th  April, 2019
 ডেডলাইন
সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়

একটা অজানা-অচেনা স্টেশনে নেমে পড়ে এইভাবে একটা চায়ের দোকানে ঢুকে পড়া কতটা ঠিক হল কে জানে। ঐত্রেয়ী অন্তত সেই কথাই ভাবছে। এইখানে চিনি ছাড়া লাল চা পাওয়ার জাস্ট কোনও চান্স নেই। সুতরাং একটা দুধ চা-ই বলেছে। দোকানি দিদি আঁচল দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে জিজ্ঞেস করে গেছেন আর কিছু সে খাবে কিনা।
বিশদ

21st  April, 2019
পূণ্য ভূমির পূণ্য ধূলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

জম্মুতে দু’ একটা দিন বিশ্রাম নেওয়ার পর হাতে যদি সময় থাকে তাহলে কলকাতায় না ফিরে আরও এক দেবীতীর্থে অনায়াসেই যাওয়া যেতে পারে। সেই তীর্থভূমি হল চামুণ্ডা ক্ষেত্র। ইনিও হিমালয়ের নয় দেবীর এক অন্যতমা দেবী।
বিশদ

21st  April, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

মৃত ভাইয়ের আত্মার সঙ্গে কথা বলে শিশিরকুমারের বিক্ষুব্ধ মন কিছুটা হলেও শান্ত হয়েছিল এবং এইসময় থেকেই তিনি আরও প্রবল ভাবে মেতে উঠলেন প্রেতচর্চা ও ঈশ্বরের উপাসনায়। আর তখনকার পরিবেশ এবং পরিস্থিতি ছিল প্রেতচর্চার পক্ষে খুবই অনুকূল।
বিশদ

21st  April, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধূলোয়
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়

এবারে যাওয়া যাক মাতা বৈষ্ণোদেবীর দরবারে। ইনি হলেন হিমালয়ের প্রসিদ্ধ নয় দেবীর অন্যতমা। হাওড়া শিয়ালদহ বা কলকাতা স্টেশন থেকে জম্মু যাওয়ার ট্রেনের অভাব নেই। জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস বা হিমগিরি এক্সপ্রেস অনেকেরই খুব পছন্দের ট্রেন। বিশদ

14th  April, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

 মহাত্মা শিশিরকুমার ঘোষ। ১৮৪০ সালে যশোর জেলার মাগুরা (অমৃতবাজার) গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা কলুটোলা ব্রাঞ্চ স্কুল (বর্তমান হেয়ার স্কুল) থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কিছুকাল প্রেসিডেন্সি কলেজেও পড়াশুনা করেন। এরপর তিনি আবার ফিরে যান নিজের গ্রাম পুলুয়ামাগুরায়।
বিশদ

14th  April, 2019
বীরবল
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

 বাদশাহের মর্জিতেই তাকে নামানো হয়েছে লড়াইতে, কিন্তু তাকে কিছুতেই বাগ মানাতে পারছে না তার পিলবান। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে প্রতিদ্বন্দ্বী হাতিকে ছেড়ে তাড়া করল এক জওয়ান লেড়কা দর্শককে, সেই লেড়কা দ্রুত পালিয়ে ঢুকে গেল আম-আদমির ভিড়ের মধ্যে। হাতিটা তখন দূর থেকে দেখছে বীরবরের লাল বেনিয়ান পরা চেহারাটা।
বিশদ

07th  April, 2019
বন্ধুত্ব
তপনকুমার দাস

—গীতা তো আমার চেয়েও তোমার বেশি বন্ধু। স্কুটারের পিছনে বসিয়ে ব্যাঙ্কে নিয়ে যাও—
—গীতা বলেছে বুঝি? গোপন কথাটি গোপন না থাকায় ফুঁসে উঠেছিল দীনবন্ধু— স্ট্যান্ডে একটাও রিকশ ছিল না। নিজেই যেচে এসে দু’কাঁধ ধরে পিছনে ঝুলে পড়ল।  বিশদ

07th  April, 2019
মিষ্টান্ন বিভ্রাট
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

 একদিন কী মনে হল—লিপিকা রান্নাঘরে জমে থাকা রসগোল্লাগুলো একটা সাদা পলিথিনে ভরে বাজারের দিকে রওনা দিল। ভাবল রাস্তায় কোনও ভিখিরির দেখা পেলে মিষ্টিকটা দিয়ে দেবে।
বিশদ

31st  March, 2019
একনজরে
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: ভোট শেষ হয়ে গিয়েছে গত ৬ এপ্রিল। কিন্তু, এখনও হাওড়া জেলায় ভোটের চুলচেরা বিশ্লেষণ নিয়ে ব্যস্ত জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কোন বিধানসভা এলাকা থেকে কত লিড আসবে বা কোন বিধানসভা কেন্দ্রে ফল খারাপ হতে পারে, তা নিয়ে ব্লক ...

সংবাদদাতা, পূর্বস্থলী: তীব্র দাবদাহের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে পূর্বস্থলীর আম। বাগান থেকে জাগ ভাঙা আম ট্রাকবোঝাই করে বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। অন্যদিকে এবারও পূর্বস্থলীতে তিনদিন ধরে আম উৎসব ও মেলা হবে। পূর্বস্থলী থানার মাঠে আগামী ২ জুন রবিবার আম ...

 নয়াদিল্লি, ১৪ মে (পিটিআই): জঙ্গি সংগঠন এলটিটিই-র উপর আরও পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে এই নির্দেশের কথা জানানো হয়েছে। বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (১৯৬৭)-এর ভিত্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ...

ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে যেসব সংস্থার শেয়ার গতকাল লেনদেন হয়েছে শুধু সেগুলির বাজার বন্ধকালীন দরই নীচে দেওয়া হল। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮১৭: ধর্মীয় সংস্কারক ও দার্শনিক দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম
১৮৫৯: নোবেলজয়ী ফরাসি পদার্থ বিজ্ঞানী পিয়ের কুরির জন্ম
১৯০৫: কবি ও লেখক অন্নদাশঙ্কর রায়ের জন্ম
১৯৬৭: অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিতের জন্ম 



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৯.৬৫ টাকা ৭১.৩৪ টাকা
পাউন্ড ৮৯.৭৪ টাকা ৯২.৯৯ টাকা
ইউরো ৭৭.৭৩ টাকা ৮০.৭২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩২,৮১৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩১,১৩৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩১,৬০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৩৭,২৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৩৭,৩৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৩১ বৈশাখ ১৪২৬, ১৫ মে ২০১৯, বুধবার, একাদশী ১৩/৫৮ দিবা ১০/৩৬। উত্তরফাল্গুনী ৫/৩৯ দিবা ৭/১৬। সূ উ ৫/০/৩৬, অ ৬/৫/১৮, অমৃতযোগ দিবা ৬/৪৫ মধ্যে পুনঃ ৯/১১ গতে ১১/৭ মধ্যে পুনঃ ৩/২৮ গতে ৫/১৩ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪৯ গতে ৯/০ মধ্যে পুনঃ ১/২২ গতে উদয়াবধি, বারবেলা ৮/১৬ গতে ৯/৫৫ মধ্যে পুনঃ ১১/৩৩ গতে ১/১১ মধ্যে, কালরাত্রি ২/১৬ গতে ৩/৩৮ মধ্যে।
৩১ বৈশাখ ১৪২৬, ১৫ মে ২০১৯, বুধবার, একাদশী ১০/৫১/২১ দিবা ৯/২১/২২। উত্তরফাল্গুনীনক্ষত্র ৩/২৩/৩৫ দিবা ৬/২২/১৬ পরে হস্তানক্ষত্র ৫৯/৫৮/৫১, সূ উ ৫/০/৫০, অ ৬/৬/৪২, অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৫ গতে ১১/৮ মধ্যে ও ১/৪৭ গতে ৫/২০ মধ্যে এবং রাত্রি ৯/৪৭ মধ্যে ও ১১/৫৬ গতে ১/২২ মধ্যে, বারবেলা ১১/৩৩/৪৬ গতে ১/১২/১ মধ্যে, কালবেলা ৮/১৭/১৮ গতে ৯/৫৫/৩২ মধ্যে, কালরাত্রি ২/২৭/১৮ গতে ৩/৩৯/৪ মধ্যে। 
৯ রমজান
এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল 
মেষ: সৎ পরামর্শ মতো চললে ভালো হবে। বৃষ: বুঝে শুনে বিনিয়োগ করলে ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
১৮১৭: ধর্মীয় সংস্কারক ও দার্শনিক দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম১৮৫৯: নোবেলজয়ী ফরাসি ...বিশদ

07:03:20 PM

বন্ধ হলদিয়া বন্দর 
শ্রমিক বিক্ষোভে স্তব্ধ হয়ে হলদিয়া বন্দর। বন্দর বন্ধ হওয়াতে অচলাবস্থা ...বিশদ

10:17:37 PM

এমন নির্বাচন কমিশন জম্মে দেখিনি: মমতা
বিজেপি যা বলছে নির্বাচন কমিশন তাই করছে। এমন নির্বাচন কমিশন ...বিশদ

09:22:00 PM

 অমিত শাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত: মমতা

09:17:27 PM

জরুরী সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী 

09:16:21 PM