Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

মাঠরাখা
হামিরউদ্দিন মিদ্যা 

আলোটা ভাসতে ভাসতে আঁকড়গোড়ে, ভাড়ালগোড়ে, জিওল নালার মাঠ ঘুরে চক্কর দিয়ে মাঝের-দাঁড়ার মাঠে এসে মিলিয়ে গেল। মেঘগুলোকে নীচে ফেলে চাঁদটা অনেকটা ওপরে উঠে এসেছিল। এখন আবার চাপা পড়েছে। কুঁড়ের বাঁ-পাশে লেউল ঘোষের বিঘে চারেক বিয়েন ধানের খেত থেকে পাঁইশে রঙা শিয়াল দুটো বেরিয়ে নাসেরের পানে মুখ তুলে তাকালো, টর্চটা আবার জ্বালতেই শিয়াল দুটো লাড়াবাড়ির ওপর মশ্ মশ্ শব্দ তুলে ভিং ভিং দৌড় দিল।
এ বছর মাঝের-দাঁড়ার মাঠে কুঁড়ে বেঁধেছে নাসের। আগের বারে মোষমরার জমিতে ছিল। সব থেকে সুবিধা এখান থেকে। মাঝ মাঠ। দাঁড়ার পগারের ওপর দাঁড়ালে গোটা মাঠটা নজর রাখা যায়। এখনও সব ধান মাঠ থেকে ওঠেনি। যারা মেশিনে কাটিয়েছে, তারা নতুন চালের ভাত খেতে কখন শুরু করে দিয়েছে। মাঠগুলো এখন বুক চিৎ করে শুয়ে আছে। আবছা আলো-আঁধারে ধানের গাদাগুলো দলমার হাতির মতো দাঁড়িয়ে। সব ধান মাঠ থেকে চাষিদের খামারে উঠে গেলেই নাসেরের ছুটি। ছুটি বলতে রাখাগিরির।
নাসেরের বাপ জমির আলি ছিল ভূমিহীন। সারাজীবন মাঠের পাহারাদারের কাজ করেছে। শরীরে তাকত ছিল খুব। মাঠের আলের ওপর দাঁড়িয়ে পোঁ পোঁ করে লাঠি এমন ঘোরাত, ছেলেপুলের দল শীষ কুড়োতে নামতেও ভয় পেত—চুরি তো দূরের কথা। সেই লাঠি এখন নাসেরের হাতে। চুরিচাপটা এখন খুব কমে গেছে। ক্লাবের ছেলেদের ভয়। ফিস্টি করার জন্য দু-এক গাদা তুলে নিলেই চাষির মাথায় হাত। তাই গ্রাম ষোলোয়ানার তরফ থেকে সইসাবুদ দিয়ে মাঠে পাহারাদার রাখতে হয়। বিঘে প্রতি ছয় আঁটি ধান লাগে। কাটা থেকে খামারে তোলা পর্যন্ত চাষি নিশ্চিত বোধ করে।
এবছর নাসেরের বরাত খুব খারাপ। অন্য বারে মাঠ পাহারা দিয়ে চার-পাঁচটা বড় বড় ধানের গাদা হয়। এবারে অর্ধেক ধান মাঠ থেকে খামারে উঠে গেল, অথচ দুটো ধানের গাদাও ভর্তি হয়নি। মেশিনে ধান কাটার হিড়িক লেগেছে। বড় বড় চাষিরা গোরু-মোষের খাবার খড়ের জন্য কম সম কাস্তেয় কাটিয়ে, মেশিন নামাচ্ছে মাঠে।
যেসব চাষি মেশিনে ধান কাটিয়েছে, নাসের তাদের কাছেও গেছিল। বলেছিল— গোটা মাঠটা আমি পাহারা দিই, আর তুমরা সব সুবিধা বুঝে মেশিনে কাটিয়ে নিচ্ছ। তাইলে আমার পাওনাটার কী হবেক?
সবার একটাই বক্তব্য, ধান কাটার আগে তো মাঠরাখার দায়িত্ব নয়, তখন মাঠে দৌরাত্ম্য নাই কুনু। কীসের তুর পাওনা শুনি?
—কেনে,আমি যে মাঠরাখা। গোটা মাঠটা পাহারা দিই। আমার পাওনা লাগবেনি?
কথাটা শুনে গ্রামের বড় চাষি সাবের আলি, লোহার পাড়ার অবনী রেগে হিশ্ হিশ্ করে ওঠে, কানের গোড়ায় ফ্যাচর ফ্যাচর করিস না দিনি! আমাদের কাছে ল্যাং ল্যাং না করে যারা কাস্তেয় কাটছে তাদের কাছে যা না!
বানে ভেসে যাওয়া কুটোর মতো নাসেরের অবস্থা। ওদের কথাতেও যুক্তি আছে। তা বললে নাসেরের চলবে কী করে? এবছর কত স্বপ্ন দেখেছিল। একটা বড় খড়ের পালুই বাঁধবে। বউয়ের শখ দুটো বাছুর পালার। ঘরে গোরু থাকলে ঘুঁটে হবে, খড়গুলো পোড়াতে হবে না তাহলে। সেই স্বপ্ন ঝুরঝুর করে ভেঙে অঘ্রাণের শিশির হয়ে ঝরে পড়ছে মাঠে।
সবে মাস চারেক বিয়ে হয়েছে নাসেরের। এই সিজনটা রাখাগিরি করতে মন সায় দেয়নি। নতুন বউকে ছেড়ে মাঠে শুতে কার ইচ্ছা জাগে? সংসারের কথা চিন্তা করে এবং গ্রাম ষোলোয়ানার চুক্তি অনুযায়ী নাসের তার ইচ্ছাকে জলাঞ্জলি দেয়। একমাসের মতো বউয়ের পাশ খালি রেখে কুঁড়েতে শুতে হচ্ছে নাসেরকে।
কুঁড়ের ভেতরে হ্যারিকেনের শিখাটা টিম টিম করে জ্বলছে। বাইরে কাঠ-কুটোর বোঝা। সেখান থেকে কতগুলো কাঠিখোঁচা বের করে নাসের আগুন জ্বালাল। খোলা আকাশের নীচে শীতটা তিরের ফলা হয়ে গায়ে বিঁধছে। হাত পা-গুলো আঁচে সেঁকতে বসে। জমির আলির যখন ইন্তেকাল হয়েছিল,তখন গ্রাম ষোলোয়ানায় মিটিং ডাকা হয়।
—আমাদের মাঠরাখা তো মরি গেল গো! এবার কাকে রাকবে?
কাজটা খুব দায়িত্বপূর্ণ। এখনকার ছেলেছোকরারা ওসব কাজ করতে চায় না। ভিড়ের মধ্যে কে যেন চেঁচিয়ে উঠল, কেনে গো, কেনে। জমির আলির তো একটা জোয়ান ব্যাটা আছে। বাপের কাজটা ছেড়ে দিবেক কি?
সম্মিলিত জনতা সায় দেয়, হ্যাঁ হ্যাঁ। তুমি ঠিক কথাই বলেছ বাপু। নাসেরকে একবার যাচিয়ে নিয়া দরকার।
নাসেরের মন ছিল না। মা তাকে বুঝিয়ে ছিল, তুই অমত হোস না খোকা। তুর বাপ মাঠ পাহারা দিয়ে ভাতের, মুড়ির চাল কুনুদিন কিনেনি। জমি জায়গা তো আমাদের নাই বাপ। মিলের চালের ভাত খেয়ে গায়ে লাগবেনি। যতই হোক, ঘরের চালের ভাত খাবি, মুড়ি খাবি—তার স্বোয়াদ কত!
মায়ের কথাটা মনে ধরে নাসেরের। তাছাড়া বাপ জমির আলির গ্রামে অনেক সুনাম ছিল। গ্রামের মানুষের সামান্য এ আবদার না রাখলে বাপকেই অসম্মান করা। তাই রাজি হয়ে যায়।
বাপ তাকে প্রায় বলত, বড় হয়ে তুই কী হবি খোকা? আমার মতো মাঠরাখা?
—না, হব নাই। যে জমির আমরা মালিক নই, সে জমি পাহারা দিব কেনে?
কথাটা শুনে বাপ হেসেছিল খ্যাক খ্যাক করে।—ধুর খ্যাপা! জমির মালিক হয়ে কী হবেক রে! গোটা মাঠটার মালিক হয়ে যাবি। আলের ওপর লাঠি হাতে যখন দাঁড়াবি, সেই মাঠটা তোর। কেউ এক আঁটি ধান তোর সামনে চুরি করতে সাহস পাবেনি।
ছোট থেকেই বাপের মুখে কথাটা শুনে এসেছে নাসের। কিন্তু বাপ তাকে এটা বলেনি, রাতের মালিক মাঠরাখা। দিনের আলো ফুটতে ফুটতেই মালিকানা বদলে যায়। চাষিরা গাড়ি বোঝাই করে ধান তুলে নেয়। তখন বাপের মুখে শোনা কথাটা রূপকথার গল্পের মতো লাগে।
আগুন পোহাতে পোহাতেই নাসের টর্চটা জ্বেলে মাঠের চারিদিকে ঘোরালো। তাতেই টের পেয়ে যাবে মাঠরাখা জেগে আছে। রাখাদের ঘুমালে চলে না। চোখগুলো বুজলেও কানগুলো খোলা রাখতে হয়।
একটা বিড়ি ধরাল নাসের। আগুনের আঁচ কমে গেছে। চাঁদটা মেঘের পেটফুঁড়ে বেরিয়ে পড়েছে। জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে মাঠ। চারিদিকেই অনেক দূরে দূরে গ্রাম। পশ্চিম পানে তাকালো নাসের। গাছপালায় ঘেরা মিশকালো অন্ধকার রেখার মতো পড়ে আছে গ্রামটা। ইলেক্ট্রনিক পোলে বাল্ব জ্বলছে মিটমিট করে। যেন আকাশ থেকে দু-একটি তারা খসে গিয়ে গাছের ডালে আটকে গেছে। নাজমা কি এখন ঘুমিয়ে পড়বে? নাকি বিছানায় ছটফট করছে? বউয়ের কথা মনে পড়তেই নাসেরের বুকে কোথা থেকে এক ঝাপট উষ্ণ বাতাস এসে ধাক্কা মারল। বাতাস, নাকি নাজমার শ্বাস প্রশ্বাস!
কুঁড়ের ভেতরে ঢুকল নাসের। খড়ের ওপর খেজুর পাতা বিছানো। একটা মোটা কম্বল এনে রেখেছে। ভেতরে ঢুকে গেলে ঘুমের আবেশে তলিয়ে যায়। শুলেও টর্চ জ্বেলে মাঠগুলো চক্কর দিয়ে আসতে হয়।
ছেলেবেলায় বাপের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কুঁড়েতে শুতে আসত নাসের। বাপ তাকে মাঠপরীর কথা শুনিয়েছিল। জ্যোৎস্নার রাতে নাকি আসমান থেকে ডানা মেলে পরী নেমে আসে মাঠে। সাদা ধবধবে গায়ের রং। দুই ডানায় জ্যোৎস্না ঝরাতে ঝরাতে এ মাঠ থেকে সে মাঠ নেচে নেচে বেড়ায়। মাঠের মধ্যে কেউ কোনও অন্যায় কাজ করলে, মাঠপরী ছলনা করে কাছে ডেকে আনে। পিঠে চাপিয়ে উড়িয়ে নিয়ে যায় ভাড়ালগোড়ের বিলে। বিলে নেমে পানি ছিটিয়ে খেলা করে। একসময় গলা ধরে ডুবিয়ে মেরে ফেলে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই আবার উড়াল দেয় আসমানে। বাপের মুখে কথাটা শুনে ছোট্ট নাসের কতবার ভয়ে ভয়ে মাঠের পানে তাকিয়েছে। কোনওদিন সেই আশ্চর্য আলোর দেখা মিলেনি।
আজ শুলেও চোখে ঘুমের বন্যা নামল না। বরঞ্চ ভাটা জেগেছে বুকে। সেই চোরা স্রোতে নাসেরের মন পৌঁছে যায় নাজমার পাশের বালিশে। নাসের উঠে বসল। হ্যারিকেনের সলতেটা বাড়িয়ে দিয়ে কুঁড়ের বাইরে বাঁশের খোঁচাতে ঝুলিয়ে দিল। বেশ কয়েকদিন ধরেই ফন্দিটা মাথায় খেলছে, কিন্তু কাজে লাগাতে সাহস পায়নি। আজ উটকো নেশাটা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নাসেরকে। কিছুতেই স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না।
কয়েকটা মাঠ পেরিয়েই নাসের থমকে দাঁড়াল। কে যেন পিছু নিয়েছে মনে হচ্ছে। মাঠপরী নয়তো? নাকি বাপ জমির আলি! জমির আলি তো এখন গোরস্থানে শ্যাওড়া গাছের তলে অন্ধকার কবরের ভেতর চিরঘুমে ডুব দিয়েছে। ছেলে বিপথে হাঁটছে, তাই বোধহয় বাপটা গোঁসা করে বেরিয়ে এসেছে। পিছন ফিরে তাকাল নাসের। কেউ নেই। শুধু কুঁড়ের বাইরে টাঙানো হ্যারিকেনের হলুদ শিখাটা দুলছে। যেন বলছে,যা,যা। ভয় কি! আমি তো আছি।
মাঠ শেষ হতেই ডুমুরজলার দিঘি। দিঘির পাড়ে কাদু শেখের বাঁশঝাড়। পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে নাসের তাহের শেখের খামারবাড়িতে পৌঁছে যায়। এখন গ্রামের কারও চোখে পড়ে গেলে, ফাঁকিবাজির শাস্তি গ্রাম ষোলোয়ানার তরফ থেকেই আচ্ছা করে দিয়ে দেবে। মুখ পোড়া কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করতে করতে উঠে এল। চেনা মানুষের গন্ধ পেতেই চুপ করে শুয়ে পড়ল। খামারের পেছনেই নাসেরের বাড়ি।
মাটির দু-কুঠুরি ঘর। উত্তরের মেঝেটাই নাসেরের মা ঘুমচ্ছে। আর রান্নাশাল লাগোয়া মেঝেতে নাজমা। এতক্ষণ খেয়ালই হয়নি নাসেরের, যে ভেতর থেকে হুড়কো তুলে দেবে। নিজের বাড়ির দরজা ঠেলতেও চোর চোর লাগছে। বার দুই দরজায় টোকা দিল নাসের। কোনও সাড়াশব্দ নেই। এবার সুড়ুৎ করে বসে দরজার নীচের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারল। কচি লাউয়ের মতো নাজমার দুটো পা লেপের বাইরে বেরিয়ে পড়েছে। ফিসফিস করে ডাকল, বউ, ও বউ।
সামান্য নড়ে উঠল নাজমা। নাসেরের সম্বিত ফিরে এল। পাশের ঘরে মা ঘুমচ্ছে। উঠে পড়লে লজ্জায় কান কাটা যাবে।
উঠোনে নেমে এদিক ওদিক খুঁজতেই মুরগি তাড়ানোর লম্বা কঞ্চিটা চোখে পড়ে। হাতে তুলে নিল নাসের। মাথায় এক অন্য বুদ্ধি খেলে যায়। দরজার নীচের ফাঁক দিয়ে গলিয়ে নাজমার পায়ে খোঁচাতে লাগল। হঠাৎ পায়ে সুড়সুড়ি লাগতেই ‘কে?’ বলে তড়াক করে উঠে পড়ল নাজমা। নাসের কঞ্চিটা বের না করেই এক লাফে উঠোনে নেমে আসে। খুট শব্দ করে কে যেন দরজা খুলল। কেলেঙ্কারির আর শেষ নেই! নাজমার চিৎকার শুনে মা নিশ্চয় উঠে পড়েছে! নাসের রান্নাশালের দেওয়ালের আড়ালে গা মিশিয়ে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। দরদর ঘামছে। এবার টর্চের ফোকাস ফেলে একটা নারী মূর্তি নেমে এসেছে উঠোনে। তাকাবার সাহস পেল না নাসের। যদি মা হয়,আর ঘাড় ঘোরাতে গেলেই দেখে ফেলে! মূর্তিটা এবার গট গট করে কাছে এসে ভূত দেখার মতো চমকে গেল। সঙ্গে সঙ্গে নাসেরের মুখে আলো ফেলল। নাসের দাঁত ফেঁড়ে হাসল।
নারী মূর্তিটা এবার ঝাঁঝিয়ে উঠল, ভীমরতি ধরেছে তুমার? এত রেতে কী মনে করে?
—চুপ, চুপ। এতো টুঁটি ফাঁড়ছিস কেনে?
নাজমা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। নাসের কাছে গিয়ে দাঁড়াল। ফিস ফিস করে বলল, চল বউ ঘরের ভেতর যাই।
—নাঃ। তা হয় না। বলে নাসেরকে ঠেলে সরিয়ে দিল নাজমা—তুমি ফাঁকি মেরে মাঝ রেতে বউ সোহাগ করতে আইছ! সুড়সুড় করে মাঠে যাও বলে দিচ্ছি! মা উঠে পড়বেক এখুনি!
উঠোন থেকে সরে এসে তাহের শেখের খামারে দাঁড়াল দু’জন। নাসের বলল,আমি সে ব্যবস্থা করে আইছি বউ। হ্যারিকেনটা জ্বেলে বাইরে ঝুলিয়ে দিইছি। সবাই ভাববেক জমির আলির ব্যাটা জেগে আছে। মাঠ পাহারা দিচ্ছে।
—জমির আলিরর ব্যাটা মাঠ পাহারা দিচ্ছে, তো তুমি কে?
নাসের নাজমার চিবুকটা হাতে করে তুলে ধরে, কেনে, আমি তোর স্বোয়ামী।
—খুব হইছে, যাও। স্বোয়ামী তো লুকিয়ে ছুপিয়ে কেনে এসেছ? এখন মাঠের লক্ষ্মীকে পাহারা দেওয়া তোমার কাজ। কেউ দেখে ফেললে কী হবেক বলো তো?
নাসের আর কোনও কথা বলল না। খামারের বেড়ার একপাশে কুকুরটা শুয়ে শুয়েই মুখ তুলে দেখল, দুটো নারী-পুরুষ এতকাছে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে একে ওপরের মুখে মুখ লাগিয়ে মিলিয়ে গেল। খানিক বাদেই পুরুষটা হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে, নারীটা তখনও দাঁড়িয়ে।
ডুমুরজলার দিঘির পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ কী মনে করে নাসের পেছন ফিরে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। নাজমা এখনও দাঁড়িয়ে আছে! হলুদ শাড়ির ওপর চাঁদের আলো পড়ে সারা গা থেকে জ্যোৎস্না ঝরছে। অমন আলো দেখে নাসেরের গা-হাত শির শির করে উঠল। মনে পড়ল ছেলেবেলায় বাপের মুখে শোনা গল্পটা। তাহের শেখের খামারবাড়িতে দাঁড়িয়ে মেয়ে মানুষটি যেন নাসেরের বউ নয়। আকাশ থেকে ডানা মেলে নেমে এসেছে কোনও পরী। কাছেই তো ডুমুরজলার দিঘি। নাসের আর পেছন ফিরে তাকাবার সাহস পেল না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে মাঠে ফিরে যেতে হবে।
অলংকরণ : সোমনাথ পাল 
20th  January, 2019
অথ দাম্পত্যচরিতম
সোমজা দাস

যে লোকটা ফুলকুল্লি স্টেশনের লাগোয়া বিন্তিমাসির চায়ের দোকানে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল আর শুক্কুরবার বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা অবধি বসে থাকে, ওই যে যার মাথায় খড়খড়ে মরচে রঙের চুল, গালে চটামটা লালচে দাড়ি, উদাস চোখ, তার কথা বলছি। সে-ই দশানন দাস।    বিশদ

07th  April, 2024
ছোট গল্প: বন্ধনহীন গ্রন্থি
বিতস্তা ঘোষাল

—অনেকদিন তোমার পোস্ট আমার অ্যাকাউন্টে দেখাচ্ছে না। আজ একজন বললেন, তোমার হ্যাজব্যান্ড চলে গেলেন। তিনি তোমার পেজ শেয়ারও করলেন। আমি জানতাম না অনিকেত তোমার স্বামী। ওঁর সঙ্গে বহুদিন আগে আমার দেখা হয়েছিল। বিশদ

31st  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দারা শিকোহের গ্রন্থাগার
সমৃদ্ধ দত্ত

রামায়ণকে বুঝতে হলে, হিন্দু শাস্ত্রের অন্তর্নিহিত দর্শনকে আত্মস্থ করতে হলে, যোগ বশিষ্ট পাঠ করা দরকার। আর শুধু পাঠ করা নয়, প্রজাদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহকে একথা বলেছিলেন দরবারের অন্যতম হিন্দু পণ্ডিত চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ। বিশদ

31st  March, 2024
অতীতের আয়না: হারিয়ে যাওয়া হাড়গিলে পাখি
অমিতাভ পুরকায়স্থ

নিউ মার্কেটের পূর্ব ও পশ্চিম গেটের একটু উপরের দিকে সবুজ বৃত্তাকার জায়গাটার দিকে কখনও নজর করেছেন? খেয়াল করলে দেখবেন একটি এমব্লেম বা প্রতীক। কলকাতা পৌরসংস্থার এই মোহরচিহ্ন শহরের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। বিশদ

31st  March, 2024
সম্পর্ক
অর্পিতা সরকার

 

ওদের তিনতলা বাড়ি, বাবা সরকারি চাকুরে। সুস্মিতা ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপরেও বাবার সাধারণ জীবনযাত্রার কারণেই স্কুল-কলেজে কখনও সেভাবে গর্ব করতে পারেনি সুস্মিতা। ওর বাবার মুখে একটাই কথা, ‘নিজে ইনকাম করো, তারপর বুঝবে রোজগার করতে কত কষ্ট করতে হয়। বিশদ

24th  March, 2024
তবু যেতে হয়

—কাজটা তালে ছেড়েই দিলি সুবি!
সুবি উত্তর দেয় না। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে সে। লাঙলপোতা গ্রামের ছোট্ট বাড়ির মাটির বারান্দার এক কোণে দাঁড়িয়ে পায়ের উপর পা ঘষে সুবিনয়। এ তার দীর্ঘ দিনের অভ্যেস। ঘরের ভিতরে তার শয্যাশায়ী মা অলকা। শুয়ে শুয়েই সান্ত্বনা দেন।
বিশদ

17th  March, 2024
গুরুদ্বার সিস গঞ্জ

দিল্লি দেখতে এসে চাঁদনী চক যাওয়া হবে না? তা কীভাবে হয়? অতএব দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের অত্যন্ত প্রিয় ভ্রমণস্থল চাঁদনী চক।
বিশদ

17th  March, 2024
দেখা যায় না, শোনা যায় পুতুল বাড়ি
 

আকর্ষণ, বিতর্ক, কৌতূহলের চিরন্তন কেন্দ্রবিন্দু অলৌকিক দুনিয়া। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী দুই শিবিরেরই এব্যাপারে আগ্রহ ষোলোআনা। তাই ভৌতিক সাহিত্য হোক বা সিনেমা, বাজারে কাটতি বরাবরই বেশি।
বিশদ

17th  March, 2024
প্রস্থান
দীপারুণ ভট্টাচার্য

শববাহী গাড়িটা গেটের ভিতর ঢুকতেই অরুণবাবু চারপাশটা দেখলেন। বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছে তার ছেলে নীলাঞ্জন আর বউমা সুতপা। নীলাঞ্জন বড় চাকরি করে। সে ফোন পেয়েছিল অফিসে যাওয়ার পর। সুতপাকে বলেছিল, ‘বেরতে একটু সময় লাগবে। বিশদ

10th  March, 2024
গুপ্ত রাজধানী: জাহান আরার সমাধি
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ পরব চলছে। আগ্রা জুড়ে উৎসবের উচ্ছ্বাস। এখন ১৬৪৪। বাদশাহ শাহজাহানের আগ্রা দুর্গে সবথেকে বেশি উজ্জ্বল আয়োজন। স্বাভাবিক। প্রতি বছর নভরোজের সময় আগ্রা দুর্গ এভাবেই সেজে ওঠে। সম্রাটের পুত্রকন্যারা এই সময়টায় পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হন। বিশদ

10th  March, 2024
অতীতের আয়না: বাঙালির সার্কাস
অমিতাভ পুরকায়স্থ

১৯২০ সালের ২০ মে। নিজের ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’ নিয়ে সিঙ্গাপুরে ট্যুরে গিয়ে জন্ডিস হয়ে মারা গেলেন প্রিয়নাথ বসু। শুধু উপমহাদেশের সার্কাসের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও উৎকর্ষের নতুন মানদণ্ড ছাড়াও, বিনোদন শিল্প হিসেবে সার্কাসকে দৃঢ় ভিত দিয়ে গেলেন তিনি। বিশদ

10th  March, 2024
ভোগ
শুচিস্মিতা  দেব

পুতুলকে সদ্যই নিমতিতা থেকে ‘রায়চৌধুরী ভিলা’তে এনেছে তার পিসি সবিতা। সবিতা এই পরিবারের বহু দিনের থাকা-খাওয়ার মাসি। টিভি সিরিয়ালের মতো প্রকাণ্ড বাড়িখানা দেখে পেরথমেই ভেবলেছে পুতুল। ফুটবল মাঠের মতো বৈঠকখানা। বিশদ

03rd  March, 2024
রুপোর চাকু

আলমারিটা খুলতেই দাদার চোখ চলে গিয়েছিল। উপরের তাকে জামা কাপড়ের পাশে খালি জায়গায় শোয়ানো ছিল। বাজপাখির চোখ দাদার।
বিশদ

25th  February, 2024
অপরাজিতা
মীনাক্ষী সিংহ

জুনিয়র ডাক্তার সুমন সান্যাল জানিয়ে গেল অপারেশন থিয়েটার রেডি, এবার ডাঃ মিত্রকে যেতে হবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠলেন সার্জেন মাধবিকা মিত্র। আজ একটা ক্রিটিক্যাল অপারেশন। বছর সতেরোর মেয়েটির মায়ের মুখ মনে পড়ল মাধবিকার। বিশদ

18th  February, 2024
একনজরে
নির্বাচনী কাজে চরম ব্যস্ততা রয়েছে পুলিসের। এছাড়া ভোট আবহে নিত্যদিন বিভিন্ন সভা থেকে মিছিলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা সহ নাকা চেকিংয়ে চরম ব্যস্ত পুলিস-প্রশাসন ...

এরাজ্যে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে প্রথম কারখানা খুলবে মাদার ডেয়ারি। তা থেকে সরাসরি কর্মসংস্থান হতে পারে প্রায় ৪০০। কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের ...

১৩ দিনে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে চারটি জনসভা ও  একটি রোড শো করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে সভা করে গিয়েছেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক ...

পিছনে লেগে রয়েছে ইডি। চীনা ভিসা দুর্নীতি মামলায় ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটও জমা পড়েছে আদালতে। রাহুল গান্ধী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস
১৮০৯: ইউরেশীয় কবি, যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ও শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিওর জন্ম
১৮৫৩: এশিয়ায় প্রথম ট্রেন চালু হয়
১৮৮৮: সাহিত্যিক হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্ম
১৯১৬: অভিনেত্রী ললিতা পাওয়ারের জন্ম
১৯৩০: ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নিয়ে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার দখল করে
১৯৫৫ - নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের মৃত্যু
১৯৫৮ - ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ম্যালকম মার্শালের জন্ম
১৯৬২: অভিনেত্রী পুনম ধিলনের জন্ম
১৯৬৩: ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ফিল সিমন্সের জন্ম
১৯৭১: কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন
১৯৮০: জিম্বাবুইয়ে স্বাধীনতা লাভ করে
১৯৮১: সুরকার, গীতিকার ও লোকগীতি শিল্পী তথা বাংলার লোকসঙ্গীতের প্রসারে ও প্রচারে যাঁর অবদান অসীম সেই নির্মলেন্দু চৌধুরীর মৃত্যু
১৯৮৬:  স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা, লোকসভার প্রাক্তন সদস্য অতুল্য ঘোষের মৃত্যু
১৯৯২: ক্রিকেটার কেএল রাহুলের জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.০৩ টাকা ৮৪.১২ টাকা
পাউন্ড ১০২.৫৫ টাকা ১০৫.১৬ টাকা
ইউরো ৮৭.৪৮ টাকা ৮৯.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
17th  April, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৪,৩৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৪,৭০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭১,০০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৪,১০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৪,২০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী ৩০/৩৫ অপরাহ্ন ৫/৩২। অশ্লেষা নক্ষত্র ৬/৩৮ দিবা ৭/৫৭। সূর্যোদয় ৫/১৭/৪৩। সূর্যাস্ত ৫/৫৪/১৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪৪ গতে ৩/১ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। বারবেলা ২/৪৫ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৩৫ গতে ১/০ মধ্যে। 
৫ বৈশাখ, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪। দশমী রাত্রি ৭/৫। অশ্লেষা নক্ষত্র দিবা ৯/৫২। সূর্যোদয় ৫/১৮, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ রাত্রি ১২/৪০ গতে ২/৫৩ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৬/৪৬ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে। কালবেলা ২/৪৬ গতে ৫/৫৬ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৩৭ গতে ১/২ মধ্যে। 
৮ শওয়াল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: ৭৮ রানে আউট সূর্যকুমার যাদব, মুম্বই ১৪৮/৩ (১৬.২ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

09:01:07 PM

আইপিএল: মুম্বই ১৩০/২ (১৫ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:50:14 PM

আইপিএল: ৩৬ রানে আউট রোহিত শর্মা, মুম্বই ৯৯/২ (১১.৪ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:44:46 PM

আইপিএল: ৩৪ বলে হাফসেঞ্চুরি সূর্যকুমার যাদবের, মুম্বই ৮৭/১ (১০.২ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:35:23 PM

আইপিএল: মুম্বই ৬৮/১ (৮ ওভার) (বিপক্ষ পাঞ্জাব)

08:22:14 PM

অসুস্থ মুকুল রায়, ভর্তি হাসপাতালে

08:10:57 PM