অ্যাগনেস গনহ্যাজ বোজাহিও তাঁর জন্মভূমি যুগোস্লাভিয়ার স্কপজি শহর ছেড়ে ১৯২৮ সালে কলকাতায় আসেন। আসা মাত্র নিবেদিতার মতোই ভালোবেসে ফেলেন কলকাতার মানুষজনকে। স্থির করলেন সন্ন্যাসিনী হয়ে গরিব-দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, আর্তের সেবা করবেন।
বিশ্ববাসীর মাঝে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে চান সুলতা মিত্র সরকার। এমনই অভিপ্রায় নিয়ে সম্প্রতি কাম্বোডিয়ার মন্দির নগরী আঙ্করভাটে একটি বুদ্ধমূর্তি তিনি স্থাপন করেছেন। বুদ্ধ পূর্ণিমার পুণ্যতিথিতে মূর্তি স্থাপনের কথায় কমলিনী চক্রবর্তী।
পরামর্শে ঘোষ দস্তিদার ইনস্টিটিউট ফর ফার্টিলিটি রিসার্চের কর্ণধার ডাঃ সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার।
আগামীকাল ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন। দিনটি আন্তর্জাতিক নার্স ডে হিসেবে পালন করা হয় গোটা বিশ্বে।
এক পেশাতে কাজ করছেন স্বামী স্ত্রী। পেশাদারিত্ব বজায় রেখেই ঠিক রাখুন সম্পর্ক। পরামর্শ দিলেন সাইকিয়াট্রিস্ট ডঃ রীমা মুখোপাধ্যায়
যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
প্রেমের ঠাকুর রামকৃষ্ণ নটী বিনোদিনীর শ্রীচৈতন্যলীলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং নটী বিনোদিনী ধন্য হয়েছিলেন ঠাকুরের আশীর্বাদ পেয়ে। একইভাবে ধন্য হয়েছিলেন এই বাংলারই আর এক নটী নীরদা সুন্দরী। তাঁর অভিনয় দেখে মা সারদা তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
নীরদা সুন্দরীর জন্ম হয়েছিল উত্তর কলকাতার কুখ্যাত অন্ধকারাচ্ছন্ন বস্তিতে ১৮৮৯ সালে। মাত্র ৯ বছর বয়সে ক্লাসিক থিয়েটার ‘দোল লীলায়’ সখীর দলে নাচের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর অভিনয় জীবন। তারপর ১৮৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর অমরেন্দ্রনাথ দত্ত রচিত ‘নির্মলা’ নাটকে বাঁশরীর ভূমিকায় অভিনয় করেন। পরে গিরিশচন্দ্র রচিত ‘প্রফুল্ল’ নাটকে নীরদা ‘যাদবের’ ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯০১ সালের ৩১ আগস্ট অমরেন্দ্রনাথ রচিত ক্লাসিক থিয়েটারে ‘গুপ্তকথা’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। সেখানে তিনি অধিরার ভূমিকায় অভিনয় করেন। তাঁর বয়স যখন ১৭ তখন নীরদাকে কিছুকালের জন্য দৈনিক চার টাকা পারিশ্রমিকে একটি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়। এই থিয়েটারের দলের সঙ্গে নীরদাকে নানাস্থানে ঘুরে বেড়াতে হতো। ১৯১১ সালে গিরিশ ঘোষ যখন মির্নাভা থিয়েটারে একই সঙ্গে নট ও নাট্যকার, নাট্য শিক্ষক ও ম্যানেজার, তখন তিনি মিনার্ভায় অভিনেত্রীর চাকরি পান।
১৯১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গিরিশ ঘোষ মারা যান। তাঁর শেষ নাটক ‘গৃহলক্ষ্মী’-তে (যার পঞ্চম অঙ্ক রচনা করেন দেবেন্দ্রনাথ বসু) কুলির ভূমিকায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন নীরদা সুন্দরী। এরপর অপরেশচন্দ্রের ‘রামানুজ’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। নীরদা ওই নাটকে কলহপরায়ণা লক্ষ্মণের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই সময় তাঁর জীবনে ঘটে এক অমূল্য প্রাপ্তি।
অপরেশচন্দ্র ছিলেন মা সারদার পরম ভক্ত। অপরেশচন্দ্রের মনের বাসনা পূর্ণ করতে মা সারদা এলেন ‘রামানুজ’ নাটক দেখতে। মায়ের পদধূলিতে মিনার্ভা হল ধন্য। প্রথম তিন অঙ্কে রামানুজের ভূমিকায় অভিনয় করতেন নাট্য সম্রাজ্ঞী তারাসুন্দরী। ৪র্থ ও ৫ম অঙ্কে ‘রামানুজের’ অভিনয় করতেন হাঁদুবাবু। দীক্ষা দান কালে তারাসুন্দরীর ভাবের অপূর্ব প্রকাশ দেখে মা সেদিন মুগ্ধ হয়েছিলেন। অভিভূত হয়েছিলেন সবার অভিনয় দেখেই। তবে যঁার অভিনয় মা সারদাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করেছিল তিনি নীরদা সুন্দরী।
অভিনয় শেষ হতেই মা অপরেশচন্দ্রকে বললেন নীরদা সুন্দরীর সঙ্গে দেখা করবেন। অপরেশচন্দ্র হন্তদন্ত হয়ে নীরদাকে জানালেন মা এসেছেন। নীরদা বিস্ময়ের প্রশ্ন করে বসলেন, কোন মা? অপরেশবাবু অবাক হয়ে বললেন ‘তুই মাকে জানিস না! ঠাকুর শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের সহধর্মিণী ‘মা সারদা’।’ তারিখটি ছিল ১৯১৬ সালের ১৫ জুলাই। অপরেশচন্দ্রের কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নীরদা ছুটলেন ওপর তলায়। মায়ের সাক্ষাৎ পেতে। নীরদাকে দেখে সস্নেহে মা সারদা দেবী বললেন, ‘এস মা এস।’
নীরদা মাকে প্রণাম করলেন। মা তাকে টেনে নিলেন কোলে, সারা মুখে চুম্বন করলেন। মায়ের আশীর্বাদ বর্ষিত হল নীরদার সারা শরীরে। ধন্য হল নীরদার নটী জীবন। তখন নীরদার দু’চোখে অশ্রুধারা।
সুপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়
