বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্ম ১২ মে। তাঁর জন্মদিন প্রতি বছর ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্স ডে’ হিসেবে উদ্যাপিত হয়।
ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ছিলেন আধুনিক নার্সিংয়ের অগ্রদূত। বাবা উইলিয়াম এডওয়ার্ড নাইটিঙ্গেল এবং মা ফ্রান্সিস নাইটিঙ্গেলের অভিজাত পরিবারে ১৮২০ সালের ১২ মে জন্মগ্রহণ করেন ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল।
ক্রিমিয়ার যুদ্ধে, যখন ব্রিটেনে যুদ্ধাহতদের করুণ অবস্থার বিবরণ আসে, তখন এটি ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের চিন্তার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। ১৮৫৪ সালে তিনি এবং তাঁর কাছেই প্রশিক্ষিত ৩৮ জন সেবিকা সিডনি হারবার্টের তত্ত্বাবধানে অটোমান সাম্ররাজ্যে যান। নাইটিঙ্গেল ১৮৫৪ সালের নভেম্বরের শুরুর দিকে স্কুটারির (বর্তমান ইস্তানবুল) ব্যারাকে উপস্থিত হন। সেখানে নি ও তাঁর দল দেখে মেডিকেল টিম যুদ্ধাহতদের ভালো যত্ন নিতে পারছিল না। তখন তিনি সদলবলে সেনাদের সেবা শুশ্রূষা করেন। রাতে ঘুরে ঘুরে রোগীদের দেখভাল করতেন সেই সূত্রে তাঁর নাম হয়েছিল ‘দ্য লেডি ইউথ দ্যা ল্যাম্প’।
তাঁর জীবদ্দশায় তিনি ১৮৫৩ সাল থেকে ১৮৫৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনের ‘কেয়ার অফ সিক জেন্টলওমেন’ ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেছিলেন। ১৮৫৫ সালে তিনি নার্সিং প্রশিক্ষণের জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজ শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ভারতবর্ষের গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর গবেষণা করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি রয়্যাল স্ট্যাটিসটিক্যাল সোসাইটির প্রথম সারির সদস্য নির্বাচিত হন। লন্ডনের সেন্ট টমাস হাসপাতালে নার্সিংকে সম্পূর্ণ পেশারূপে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ১৮৬০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন নাইটিঙ্গেল ট্রেনিং স্কুল, বর্তমানে যা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল স্কুল অব নার্সিং নামে বিখ্যাত।
অসংখ্য পদক আর উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন তিনি। ১৮৮৩ সালে রানি ভিক্টোরিয়া তাকে ‘রয়্যাল রেডক্রস’ পদক প্রদান করেন। প্রথম নারী হিসেবে ‘অর্ডার অব মেরিট’ খেতাব লাভ করেন তিনি ১৯০৭ সালে। ১৯০৮ সালে লাভ করেন লন্ডন নগরীর অনারারি ফ্রিডম উপাধি।
তাঁর অবদান স্মরণ রাখতে ১৮৫৫ সালের ২৯ নভেম্বর ক্রিমিয়ার সেবিকাদের প্রশিক্ষণের জন্য নাইটিঙ্গেল ফান্ড গঠন করা হয়। নাইটিঙ্গেলকে মেডিক্যাল ট্যুরিজমের অগ্রদূত ভাবা হয়।
১৯৭৪ সাল থেকে তাঁর জন্মদিন ১২ মে পালিত হয়ে আসছে ‘ইন্টারন্যাশনাল নার্স ডে’ হিসেবে। যার মাধ্যমে সম্মান জানানো হয় এক নারীকে যিনি তাঁর কর্মের মাধ্যমে নার্সিংকে পেশার ঊর্ধ্বে নিয়ে গিয়ে তাকে সেবাধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মনোজিৎ দাস