রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
শুধু যদি মনের পরস্তাৎ একটা শ্রেষ্ঠতর চেতনা থাকে আর সেই চেতনা আমাদের প্রাপ্তব্য হয়, তবেই আমরা চরম সত্যকে জানিতে পারি, তাহার মধ্যে প্রবেশ করিতে পারি। একটা মহত্তর চেতনা আছে কি নাই এ সম্বন্ধে বুদ্ধির অনুমান কি ন্যায়শাস্ত্রানুমোদিত যুক্তি আমাদিগকে বহুদূর লইয়া যাইতে পারে না। আমাদের যাহা আবশ্যক তাহা হইল এই চেতনার অনুভূতি লাভের, এই চেতনাতে উপনীত হইবার, ইহাতে প্রবেশ করিবার, ইহাতে বাস করিবার উপায়। ইহা যদি আমরা প্রাপ্ত হইতে পারি, তাহা হইলে বুদ্ধির যুক্তি ও অনুমান আপন হইতেই গৌণ বিষয় হইয়া দাঁড়াইবে, আর তাহার কোন প্রয়োজনই থাকিবে না। দর্শন শাস্ত্র ও পরম সত্যের বুদ্ধিগত অভিব্যক্তি থাকিতে পারে কিন্তু প্রধানতঃ এই মহত্তর আবিষ্কারকে এবং তাহার উপাদান সমূহের যতটা মনের ভাষায় ব্যক্ত করা সম্ভব ততটাকে, প্রকাশ করিবার নিমিত্ত সেইসব লোকের জন্য যাহারা এখনও মনোবুদ্ধিতে বাস করিতেছে।
ব্রাডলী প্রভৃতি পাশ্চাত্য ভাবুকদের কথা তুমি যাহা জিজ্ঞাসা করিয়াছ, তাহার উত্তর তুমি পাইলে, দেখিতেছ ত—যে ভাবুকগণ ‘‘চিন্তার অতীত সেই অপর তত্ত্বের’’ ধারণাতে বুদ্ধিগত চিন্তার দ্বারা পৌঁছিয়াছেন, অথবা ব্রাডলীর মত আপন সিদ্ধান্তরাজিকে এমন ভাষায় ব্যক্ত করিতে চেষ্টা করিয়াছেন যাহা ‘‘আর্য্য’’ পত্রিকার ভাষা মনে করাইয়া দেয়। এই ধারণা ত নূতন নয়, ইহা বেদের মতই পুরাতন। নানা বিভিন্ন রূপে ইহা বার বার ব্যক্ত হইয়াছিল, বৌদ্ধদর্শনে, সুফী-দর্শনে, খৃষ্টীয় সূক্ষ্ম অতিমানস অনুভুতিতে। মূলতঃ বুদ্ধির অনুমানের দ্বারা ইহা আবিষ্কৃত হয় নাই, হইয়াছিল আন্তর আধ্যাত্মিক সাধনা রত সাধকদিগের দ্বারা। যখন খৃষ্টপূর্ব্ব সপ্তম হইতে পঞ্চম শতাব্দী আন্দাজ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের জনগণ জ্ঞানকে বুদ্ধিগত করিয়া লইতে আরম্ভ করিল, তখন এই দিব্য সত্য প্রাচ্যদেশে বাঁচিয়া রহিল: পাশ্চাত্যে, যেখানে মানুষ বুদ্ধিকে সত্যানুসন্ধানের একমাত্র বা প্রধান যন্ত্র বলিয়া গ্রহণ করিতে আরম্ভ করিল সেখানে এই সত্য লোপ পাইতে বসিল।
ঋষি অরবিন্দের ‘এই বিশ্বের প্রহেলিকা’ থেকে