পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
২০১১ সালের আগে অর্থাৎ বাম জমানায় রাজ্যে অপুষ্টির হার ছিল ৩৪.৪৩ শতাংশ। এখন রাজ্যে অপুষ্টির হার ৮.১৯ শতাংশ। বিধানসভায় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা এই তথ্য জানিয়েছেন। অপুষ্টির হার কমানোর সাফল্যের পিছনে যে কারণটি কাজ করেছে তা হল এরাজ্যে আইসিডিএস কেন্দ্রগুলি থেকে সকালে শিশুদের আলাদা করে খাবার দেওয়া হয় এবং গরিব পরিবারগুলিকে ২ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তবু, দুঃখজনক বিষয় এই যে এখনও এরাজ্যে ১১,২৬৫ জন শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। তাই রাজ্যে অপুষ্টির হার কমলেও আত্মতুষ্টির কোনও অবকাশ নেই। অপুষ্টিতে আক্রান্ত বাচ্চারা কীভাবে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পেতে পারে সেদিকেও নজর দেওয়াটা জরুরি। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার মারাত্মক অপুষ্টির শিকার শিশুদের জন্য সমস্তরকমের ব্যবস্থা নিতে জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠিয়েছে। ওই শিশুদের পরিবারগুলিকে ১০০ দিনের কাজ, বাংলার বাড়ি, খাদ্যসাথী ইত্যাদি প্রকল্পভুক্ত করার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে পুষ্টিকর খাবারের প্যাকেট দেওয়ার চিন্তাভাবনাটি আছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ৩১ জুলাই পর্যন্ত সাড়ে ১৩ লক্ষাধিক মা এবং ৬০ লক্ষাধিক শিশু আইসিডিএস প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ৫ লক্ষ শিশুর পুষ্টি মাঝারি মাপের। ৫৭ লক্ষ শিশুর পুষ্টি স্বাভাবিক বা ভালো। তবে, মারাত্মক অপুষ্টির শিকার যে ১১,২৬৫ জন শিশু রয়েছে তা যথেষ্টই চিন্তার বিষয়। তাই, ৬ মাস থেকে ৬ বছর পর্যন্ত শিশুকে আইসিডিএস সেন্টারের মাধ্যমে খাবার খাওয়ানোর প্রক্রিয়ায় যাতে এতটুকু ফাঁক না-থাকে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ওই কাজটি যাতে সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে সেজন্য আইসিডিএসের সহায়িকা কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি তরফে কোনোরকম টালবাহানা বা দীর্ঘসূত্রতা যাতে না-থাকে তাও দেখা দরকার। এ ব্যাপারে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। শিশু ও মায়ের খাদ্য নিয়ে যাতে কোনও দুর্নীতি না-হয় তার জন্য নজরদারিটাও জরুরি।
উন্নয়নই যে-রাজ্যের লক্ষ্য, সেখানে অনাহার বা অর্ধাহারের
কারণে মানুষ অপুষ্টিতে ভুগবে বা সেই কারণে রোগাক্রান্ত হবে তা কখনওই কাম্য নয়। তাই রাজ্যে অপুষ্টির হার শুধু কমলেই হবে না, এই কলঙ্ক একেবারে নির্মূলই করতে হবে। দেখতে হবে রাজ্যের একজনও মানুষ যেন অপুষ্টির শিকার না হন। মুখ্যমন্ত্রী বার বার বলেন, তাঁর
সরকার মা-মাটি-মানুষের সরকার। সেই মানুষকে ভালো রাখার জন্য তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে যে কর্মযজ্ঞ চলছে তা তখনই পুরোপুরি সফল হবে যখন প্রতিটি মানুষ পেট ভরে দু’বেলা খেতে পারবে। থাকবে না কারও
অপুষ্টি। নিশ্চয় তাঁর সরকার সেই লক্ষ্যেই আগামী দিনেও এগবে।