বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বাস্তবের মাটি যখন এতটাই নির্মম হয়ে উঠেছে, তখন হাত পা ছড়িয়ে কাঁদলে কোনও সমাধান মিলবে না। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিল্পায়নের পথেই হাঁটতে হবে। সরকার অভ্যন্তরীণ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু সেটাই সব নয়। আসল সমাধান হল বিনিয়োগ আকর্ষণ। সরকারি বিনিয়োগ সীমাবদ্ধ। অতএব বিনিয়োগ আনতে হবে অভ্যন্তরীণ বেসরকারি ক্ষেত্র এবং বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছ থেকে। বিপুল কর্মসংস্থানের উপযোগী শিল্প-বাণিজ্যে দেশকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ছাড়া বাঁচার রাস্তা নেই। কাজটি নিয়ে গড়িমসি এবং সঙ্কীর্ণ রাজনীতি করার কোনও সুযোগ নেই। এই দুরূহ কাজটি এখনই করতে হবে। কোনও রাজনৈতিক দল বা রাজ্যকে ভালোবাসেন—নিছক এই ছেঁদো যুক্তিতে কোনও লগ্নিকারী কোথাও টাকার থলি নিয়ে হাজির হবেন না। তাঁরা দেখবেন কোন রাজ্যে টাকা ঢেলে ভদ্রস্থ লাভজনক ব্যবসা করা যাবে। জমি এবং শিল্প-বাণিজ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশ তাঁরা যাচাই করবেনই। তারপর দেখবেন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি এবং রাস্তাঘাটসহ সামগ্রিক পরিকাঠামোটি কেমন। কেমন সেখানকার ক্রেতা ও বাজার। তারপর যাচাই করবেন সরকার কতটা আধুনিক হয়েছে এবং লালফিতার দৌরাত্ম্য দূর হয়েছে কি না। তাঁরা আরও নিশ্চিত হতে চাইবেন—রাজনৈতিক তোলাবাজি এবং জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলনের ঝঞ্ঝাট নেই।
অর্থাৎ ভারতের মতো ফেডারেল ব্যবস্থায় লগ্নি আকর্ষণে রাজ্যগুলির ভূমিকা বিরাট। বিদেশি লগ্নির প্রশ্নে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বব্যাঙ্কের র্যাঙ্কিং। সব দেশের শিল্প-বাণিজ্যের সামগ্রিক ছবির তুলনামূলক পর্যালোচনার পরই বিশ্বব্যাঙ্ক এই তালিকা তৈরি করে। দেখা যাচ্ছে, মোদি জমানায় বিশ্বব্যাঙ্কের র্যাঙ্কিংয়ে ভারত অনেক ধাপ এগিয়েছে। অন্যদিকে, ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের র্যাঙ্কিংয়ে পশ্চিমবঙ্গ উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে, মোদি-শাহদের গুজরাতের ঠিক নীচে। সোজা কথায়, প্রতিযোগিতা ভিতরে এবং বাইরে। পশ্চিমবঙ্গসহ প্রতিটি রাজ্যকে এবং দেশকে এগতে হবে এই সুস্থ প্রতিযোগিতায় সুযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে অংশ নিয়ে। বাংলায় এবং দেশে এই যে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট তার থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইটা চালিয়ে যাওয়া—কথায় কথায় কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ জিইয়ে রাখা কোনও সমাধান নয়।