গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
সংবাদে প্রকাশ, খুব শীঘ্রই জমা পড়তে পারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত ষষ্ঠ পে কমিশনের রিপোর্ট। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এনিয়ে বৈঠক করেছেন বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, খুব শীঘ্রই জমা দেব বেতন কমিশনের রিপোর্ট। নবান্ন সূত্র জানিয়েছে, রিপোর্ট জমা পড়ার পর তা খতিয়ে দেখে দ্রুত যাতে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। এমনকী জুলাই মাস থেকে যাতে তা রূপায়িত করা যায়, তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ডিএ বৃদ্ধি এবং ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে বেতন কাঠামোর বৈষম্য এই ক্ষোভে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। যে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ফল হচ্ছে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের পোস্টাল ব্যালটের ভোটে ৩৯টিতেই পরাজিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরকম একটা পরিস্থিতিতে ক্ষোভের আগুন ঠান্ডা করতে বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে চাইছে শাসকদল। কারণ, সামনে রয়েছে পুরসভা ও তারপর রয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের মতো অগ্নিপরীক্ষা।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ুক, তারপর যতটা সামর্থ্য সেই অনুযায়ী ভাবব। কেউ বঞ্চিত হবে না। কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, সবুজশ্রী, খাদ্যসাথী, স্বাস্থ্যসাথী সহ অনেক প্রকল্প গরিব মানুষের জন্য চালাতে হচ্ছে। এত কিছু বিনা পয়সায় দেওয়ার পর টাকার জোগাড় করতে হবে তো! এগুলো তো মানুষের ন্যায্য অধিকার। সে সব বাতিল করে তো আর দিতে পারব না।
সংবাদে প্রকাশ, এর আগে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কাছে রাজ্যের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির জন্য অর্থ দাবি করা হলে, তা খারিজ হয়ে যায়। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে বেতন বৃদ্ধি বাবদ অর্থ দাবি করা না হলেও, রাজস্ব ঘাটতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তারা যেন বেতন বৃদ্ধিজনিত চাপের বিষয়টি মাথায় রাখে, তার অনুরোধ করা হয়েছিল সরকারের তরফে। এই অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুমেয় ২০১৯-’২০ থেকে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছর পর্যন্ত বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে হলে বাড়তি ৮৫,৪৫৭ কোটি টাকা খরচ করতে হবে রাজ্য সরকারকে।
সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে এই অবস্থায় অস্ত্রশস্ত্রহীনভাবে যুদ্ধে নামার মতোই পে কমিশনের বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত সুপারিশ কার্যকর করা। কারণ, সরকারের সামনে প্রকৃত লড়াই হচ্ছে রাজস্বের আমদানি ও খরচের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। রাজ্য সরকারি কর্মীদের ক্ষতে মলম লাগিয়ে ভোট টানতে গিয়ে হঠাৎ করে বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অথবা বেতন কাঠামো অপরিবর্তিত রাখা দু’টোই ব্যুমেরাং হতে পারে। প্রথম ক্ষেত্রে আরও বেশি ঋণের বোঝা চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে এতদিনের ধূমায়িত ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে সরকারের অলিন্দেই।