বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
এই বিষয়টি সামনে আসা মাত্র হাতে যেন চাঁদ পেয়েছে বিরোধীরা। সমবেতভাবে সব দলেরই এক কথা, সত্যিটা সামনে এসে গিয়েছে। আটকে রাখা যায়নি। আজ ষষ্ঠ দফার ভোট, আগামী রবিবার সপ্তম দফা। ঠিক তার মুখে এমন একটা নিবন্ধ আন্তর্জাতিক স্তরের একটি ম্যাগাজিনে প্রকাশ হওয়ার খবরে বস্তুতই চাপে পড়েছে বিজেপি। এবং নরেন্দ্র মোদি। গত লোকসভা নির্বাচনে মোদির স্লোগান ছিল, তিনি আচ্ছে দিন নিয়ে আসবেন। সব কা সাথ সব কা বিকাশ। চলতি ভোটের সলতে পাকানোর শুরুতেও তিনি বিকাশেই জোর দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের বাজার যত গরম হয়েছে, ততই বিরোধীদের আক্রমণের উপর মনোনিবেশ করেছেন মোদি। এর প্রধান কারণ অবশ্যই রাজনৈতিক মেরুকরণ। যার নেপথ্য কারিগর অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর সাফল্য, তিনি মোদি-বিরোধিতাকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, মোদি আর বিকাশে মন দিতে পারছেন না। হয় মমতার পাঠানো মিষ্টি কিংবা থাপ্পড়েই তাঁকে সীমাবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি রাহুল গান্ধী তাঁর ভাষণে এখন দ্বিতীয় সারিতে চলে গিয়েছেন। বাংলায় মোদি প্রায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করছেন এবং পাশাপাশি চলছে মমতাকে তোপ। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণের বিষয়বস্তু হয়ে গিয়েছে হিন্দুত্ব বনাম ধর্মনিরপেক্ষতা। টাইম ম্যাগাজিনের এই ইস্যু মোদি-বিরোধিতার মঞ্চে মমতাকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাল, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, সাধারণ মানুষের মধ্যেও কি এর একইরকম প্রভাব পড়বে? আর দু’দফা ভোট বাকি। বহু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র... রয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বারাণসীও। শিক্ষিত মানুষ অবশ্যই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন। ভোট দেওয়ার আগে ভাববেনও। কিন্তু একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। এটা লোকসভা ভোট। কেন্দ্রীয় সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী বাছাইয়ের কঠিন পরীক্ষা। যে ভোটারকে টাইম ম্যাগাজিনের নিবন্ধ দু’বার ভাবতে বাধ্য করবে, তাঁর জন্য চিন্তাভাবনার খোরাক আরও আছে। সবার আগে সেই ভোটার ভাববেন, যে দলের জন্য তিনি ইভিএমের বোতাম টিপছেন, তারা আদৌ সরকার গঠনের মতো জনমত জোগাড় করতে পারবে তো? আঞ্চলিক দলগুলি বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতটা প্রভাবশালী হয়, লোকসভায় তার থেকে কয়েক কদম পিছনে শুরু করে তারা। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রশেখর রাওদের মতো রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে মানুষ গত এক দশকে বিশ্বাস হারায়নি। এই মুহূর্তে যা ভোটের হালচাল, তাতে অন্যরকম হবে না বলেই বিভিন্ন রাজ্যের আঞ্চলিক শাসক দলগুলির দাবি। সাম্প্রতিক এই ঘটনাক্রমে মোদির যদি চূড়ান্ত ড্যামেজ হয়, তাহলে কংগ্রেস তথা প্রস্তাবিত মহাজোটের দলগুলির দাপট ইভিএমে আরও বাড়বে। মোদি যতই আত্মবিশ্বাস দেখান, শেষমেশ ওই দাবি ভোটযন্ত্র পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন না। বিরোধীরা আপাতত সেই ভরসাতেই নতুন উদ্যমে তেড়েফুঁড়ে নেমেছে। এই টাইম ম্যাগাজিনেই কিন্তু আর একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে... অর্থনীতির সংস্কারের ক্ষেত্রে মোদিই ভারতের সেরা বাজি। যে ভোটার মনে করেন, মোদিকে দিয়ে সংস্কার সম্ভব, তিনি কিন্তু এতেও প্রভাবিত হতে পারেন। ফল কী হবে? অপেক্ষা ২৩ মে’র।