বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
এই প্রশ্ন প্রথমে বিস্ময়, তারপর অভিমান, আপাতত ক্ষোভ হয়ে অযোধ্যায় আছড়ে পড়ছে। এতদিনে প্রধানমন্ত্রীর আসার সময় হল! তিনি তো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলেই রামমন্দির তৈরির উদ্যোগ নেবেন। তার কী হল? মোদি হয়তো এই সব প্রশ্নেরই সম্মুখীন হতে চলেছেন আগামী বুধবার। ১ মে। ওইদিন, ভোটের মুখে তিনি অযোধ্যায় আসছেন প্রচারে। কেউ ক্ষোভ উগরে দিতে গেলে পাশের জন চাপা দিতে চাইছেন, ক্ষোভ কিন্তু ‘রামজন্মভূমিতে’ এমন একটা জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট চাইছে, অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সমাধানসূত্র খুঁজতে। কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এমন কোনও রায় সর্বোচ্চ আদালত মনে হয় দেবে না, যার ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। পাশাপাশি এই ইস্যুতে কেন্দ্র এবং রাজ্য অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ সরকারকেও অত্যন্ত দায়িত্বশীল হতে হবে। ঘটনাচক্রে কেন্দ্র এবং রাজ্য, দুয়েরই ক্ষমতায় বিজেপি। বিষয়টির গুরুত্ব মোদি বিলক্ষণ বোঝেন বলেই তিনি স্পষ্ট বলে রেখেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দেবে, সেই মতো সরকার কাজ করবে।
ভোটের বাজারে তাঁর প্রচারে এবার অনেক বেশি সংস্কার এবং এনডিএ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি। জিএসটির ধাক্কা সামলে বিজেপি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল। এমনকী নোট বাতিল নিয়েও সমালোচনার ঝড় বিরোধীদের প্রচারেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে এর প্রভাব এখনও রয়েছে, তবে তা আগের মতো প্রকাশ্যে নেই। এই আশাতেই আপাতত বুক বেঁধে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী মোদি ছুটে চলেছেন। প্রতিদিন তিন থেকে চারটি জনসভা, রোড শো। রাফাল ইস্যু ভোটের ময়দানে দৌড় শুরু করার পর বেশ কয়েক মাস শুধু রাহুল গান্ধীকে তীক্ষ্ণ জবাব দিয়েই দিন গুজরান করছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দিন কয়েক হল, আক্রমণের পুরো অভিমুখটাই তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। তার কারণ একটাই, রাহুল গান্ধী যে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে ডানা মেলেছিলেন, সেই গতি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্তিমিত হয়েছে। বরং মোদি বিরোধিতাকে চরমে পৌঁছে দিয়ে ভোটযুদ্ধে মমতা যেভাবে নেমেছিলেন, তার পারদ নিত্য চড়ছে। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় শেষমেশ বাংলায় এক প্রকার ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেই মোদি ক্ষান্ত থাকছেন না, দিল্লিতে বসে সাক্ষাৎকার দিলেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আক্রমণ করছেন বিজেপি বিরোধী মহাজোটের মধ্যমণি মমতাকে। কিন্তু অযোধ্যায় ভোট প্রচারে গিয়েও কি সংস্কার বা উন্নয়নের প্রশ্নে তিনি ভোটের অস্ত্রে শান দিতে পারবেন? রামলালার মন্দির হবে কি না, এই প্রশ্নে যে এলাকা থেকে নির্বাচনী সমীকরণ শুরু হয়, সেই অযোধ্যায় কি শুধু উন্নয়নে চিঁড়ে ভিজবে? সেখানে কিন্তু মানুষ অপেক্ষায় রয়েছে জবাবের। মোদির জবাব। গত পাঁচ বছর ধরে বহু প্রশ্ন জমে রয়েছে অযোধ্যার মনে। এবার প্রতীক্ষা বুধবারের।