পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অবশেষে ভারতের চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে উপযুক্ত সংগত করে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্স—অর্থনৈতিক অবরোধের হুমকির কথা শুনিয়ে। আচমকা ইমরান খান প্রশাসন নানা স্তরের ৪৪ জন জঙ্গিনেতাকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে আছে জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারের এক ভাই এবং এক শ্যালক। ওইসঙ্গে মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের জামাত-উদ-দাওয়া এবং তার শাখা সংগঠন ফালাহ-ই-ইনসানিয়াত ফাউন্ডেশনের কয়েকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার পাকিস্তান যে ৭০টি নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা প্রকাশ করেছে তাদের ভিতরে এই দুটিরও নামোল্লেখ রয়েছে। পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার অব্যবহিত পরেই তার কৃতিত্ব দাবি করেছিল জয়েশ। তারা এক ভিডিও প্রকাশ করে এও বলেছিল, আত্মঘাতী জঙ্গি আদিল দার তাদেরই লোক। সারা পৃথিবী জানে, জয়েশ প্রধান হল কান্দাহার বিমান অপহরণের পাণ্ডা মাসুদ আজহার। যে-দুষ্কৃতী এখনও জামাই আদরে কাটাচ্ছে পাকিস্তানে, যেমন রয়েছে মুম্বইয়ে সিরিয়াল বিস্ফোরণের মাথা দাউদ ইব্রাহিম। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পাক প্রশাসন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নড়াচড়া করতে বাধ্য হতেই আর-এক দফা মিথ্যাচার শুরু করেছে পাকিস্তানের সেনা বিভাগ। তারা দাবি করেছে, পাকিস্তানে নাকি জয়েশ-ই-মহম্মদ বলে কিছু নেই! কিন্তু, হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশারফ। দুবাই থেকে একটি পাক সংবাদ টিভি চ্যানেলকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে মোশারফ কবুল করেছেন, তাঁর সময়কালে পাক সেনা এবং গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশে জয়েশ-জঙ্গিরা একাধিক বার ভারতের অভ্যন্তরে নাশকতা ঘটিয়েছে! তা সত্ত্বেও মোশারফ প্রশাসন যে ওই কুখ্যাত সংগঠনটির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি তাও স্বীকার করেছেন তিনি। সম্প্রতি পাকিস্তানে জয়েশের বিরুদ্ধে ইমরান প্রশাসন পদক্ষেপ করছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মোশারফ। প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট আরও দাবি করেছেন, জয়েশ তাঁকেই দু’বার হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গি সংগঠন জয়েশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াটা জরুরি ছিল। সেটা অবশেষে হচ্ছে জেনে আমি খুশি।’’
মোশারফকে কেউ কখনও অন্তত ভারতবন্ধু বলবে না। ভারতের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন কথা বলা তাঁর পক্ষে সম্ভবই নয়। অতএব তাঁর এই স্বীকারোক্তি বিশ্বাসযোগ্য। পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে এইকথা তিনি কোনও ভাবেই বলতে পারতেন না। ওই দেশের বাইরে আছেন বলেই তাঁর পক্ষে এই প্রায়শ্চিত্ত করা সম্ভব হচ্ছে। বর্তমান সেনাপ্রধান কামর জাভেদ বাজওয়ার পক্ষে মোশারফ সাহেবের এই স্বীকারোক্তি উড়িয়ে দেওয়া কঠিন হবে। এর দ্বারা পাক সেনা বিভাগ আন্তর্জাতিক মহলে আর-এক দফা নিন্দিত হবে। ধরা পড়ে যাচ্ছে, জঙ্গিদমনে ইমরান প্রশাসনের যাবতীয় ‘উদ্যোগ’ এক দুর্বল চিত্রনাট্য মাত্র। কারণ, এই উদ্যোগের কলকাঠি নড়ছে জেনারেল বাজওয়ার মর্জিমতো। অতএব পাকিস্তান আছে পাকিস্তানেই—‘শান্তির নয়া দূত’ ইমরান খানের প্রশাসন সম্পর্কেও সতর্ক থাকতে হবে ভারতকে, পূর্ববৎ।