বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
এমনটা নয় যে কেন্দ্রীয় সরকার কন্যাসন্তানদের জন্য কিছুই করেনি। কেন্দ্রেরও আছে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প। শিশুকন্যাদের শিক্ষা এবং জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে আর্থিক সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারও চালু করেছে সুকন্যা সমৃদ্ধি অ্যাকাউন্ট। আসলে, এটি অনেকটা স্বল্পসঞ্চয় প্রকল্পের মতো। আর্থিক সাহায্যের এই সুকন্যা সমৃদ্ধি প্রকল্পে অ্যাকাউন্ট চালু বা টাকা জমানোর নিরিখে এই রাজ্যের স্থান কিন্তু দেশের পাঁচটি রাজ্যের পিছনে—অর্থাৎ ষষ্ঠ স্থানে। লক্ষণীয় যে স্বল্পসঞ্চয়ের ক্ষেত্রে গত অর্থবর্ষে যেখানে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে শীর্ষে ছিল সেখানে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে পিছনেই পড়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন হল, কেন এমন চিত্র? আসলে, ভোটের কথা মাথায় রেখে এখন মোদি সরকার কল্পতরু হলেও তাদের জমানায় স্বল্পসঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বারবার সুদের হারে কোপ পড়েছে। এই জমানায় সাতবার সুদের হার কমানো হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই একাধিক বার সুদের হারে কোপ পড়েছে সুকন্যা সমৃদ্ধিতেও। ফলে, এই অ্যাকাউন্ট খোলা বা সেখানে টাকা জমা রাখার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়েছে অনেকেই। শুধু তাই নয়, শিশুকন্যার ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কতটা আগ্রহী তার ঘটা করে প্রচার চললেও এই অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কোনওরকম কমিশনের ব্যবস্থা করেনি সরকার। ফলে, সাধারণ মানুষকে দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট খোলানোর জন্য এজেন্টরাও গা করেননি। এই কারণে রাজ্যে সুকন্যা সমৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় আসেনি অনেকে। আসলে, কন্যাসন্তানের স্বার্থরক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে তাতে প্রকল্পের আওতাভুক্তদের ঘর থেকে টাকা দিয়ে সুবিধা নিতে হয় না। কিন্তু, সুকন্যা সমৃদ্ধিতে ভবিষ্যতের কথা ভেবে মানুষকে অ্যাকাউন্ট খুলতে বা টাকা জমিয়ে সুবিধা পেতে হয়। আছে জরিমানার ব্যবস্থাও। দিন আনি দিন খাই মানুষের পক্ষে এভাবে টাকা জমানো অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। তাই হয়তো ওই প্রকল্পে আস্থা হারাচ্ছে এরাজ্যের বহু মানুষ। বলা ভালো, রাজ্যে যেখানে গৌরবের সঙ্গে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ইত্যাদি প্রকল্প চলছে সেখানে উল্টো হাওয়া বইছে সুকন্যা সমৃদ্ধিতে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যে এমন একাধিক প্রকল্প নিয়েছে যাতে সরাসরি আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে বহু মানুষ। এই প্রত্যক্ষ আর্থিক সুবিধাদানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তুলনায় রাজ্য অনেকখানি এগিয়ে। এক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সামনে নজির স্থাপন করেছেন। আসন্ন ভোটে তা নিঃসন্দেহে তাঁকে অনেক বড় রকমের মাইলেজ দেবে। সরাসরি আর্থিক সুবিধা না-থাকার কারণেই মোদির সুকন্যা সমৃদ্ধি এই রাজ্যে অন্তত হালে পানি পাচ্ছে না।