বিদ্যায় অধিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তির পক্ষে দিনটি শুভ। প্রেম-প্রীতিতে আগ্রহ বাড়বে। নতুন ... বিশদ
পুলওয়ামায় জয়েশের জঙ্গিহানার পর সারা বিশ্ব জুড়ে ধিক্কার শুরু হয়ে যায়। বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলি ভারতের পাশে দাঁড়ায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত অতর্কিত হানায় বালাকোটের জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে দেয়। দু’ দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে বদলা নিয়ে পাকিস্তান তাদের অস্ত্রভাণ্ডার থেকে আমেরিকার দেওয়া এফ ১৬ এবং চীনের দেওয়া জে এফ ১৭ যুদ্ধবিমানকে কাজে লাগায়। এই অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাকিস্তান তার চুক্তি ভঙ্গ করেছে। কেননা চুক্তি অনুযায়ী বলা হয়েছে, এই দুটি অস্ত্র তারা কোনওভাবেই ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবে না। সেই চুক্তি লঙ্ঘন করায় পাকিস্তানকে তীব্র তিরস্কার করেছে আমেরিকা ও চীন। তারা পাকিস্তানকে সমঝে দিয়ে বলেছে, আর একপা’ও এগনো যাবে না। সংযত থেকে ভারতের সঙ্গে রফা করতে হবে। এরপরই পাক প্রধানমন্ত্রী যেন সুবোধ বালকের মতো আচরণ করতে থাকেন। যদিও ভারতকে পাল্টা আঘাত দেওয়ার একটা রব উঠেছিল পাকিস্তান জুড়ে। কিন্তু সেই ডাকে সাড়া দেবার মতো ক্ষমতা ইমরান খানের ছিল না। সেটা না ছিল, রাজনৈতিক দিক থেকে। না ছিল, অর্থনৈতিক দিক থেকে। অর্থনৈতিক দিক থেকে পাকিস্তান অনেকটা ডুবন্ত তরীর মতো। চীন বলেছে, আর ধার দেবে না। সারা বিশ্বে পাকিস্তান হন্যে হয়ে ছুটছে টাকার খোঁজে। কেউ যদি ঋণ দেয়। সেদিক থেকে বলতে গেলে পাকিস্তানকে বাঁচিয়ে দিয়ে গেল সৌদি আরব। কিছুদিন আগেই তারা বিরাট অঙ্কের টাকা পাকিস্তানকে ধার দিয়েছে।
এখন একটা প্রশ্ন উঠছে। এটা যুদ্ধ? নাকি যুদ্ধ নয়? দ্বিতীয় প্রশ্ন, এতে ভারতের সত্যিই কি কোনও লাভ হল? প্রথম প্রশ্নটায় তর্কের অবকাশ আছে। কূটনৈতিক বিষয় আছে। তাই সে প্রশ্নের উত্তর এখানে দেওয়া হল না। কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, এই টেনশনের পরিস্থিতিতে ভারতের বহুলাংশে লাভ হল। প্রথমত, পাকিস্তানকে জঙ্গি মদতদাতা রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের সামনে প্রতিষ্ঠা করা গেল। পুলওয়ামার আক্রমণের পর পাকিস্তান প্রমাণ চেয়েছিল। ভারত দ্রুত সেই প্রমাণ দিয়ে সারা বিশ্বের সামনে পাকিস্তানকে অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করে দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, যে চীন সবসময় পাকিস্তানের পাশে থেকেছে, মাসুদ আজহার কিংবা হাফিজ সইদ নিয়ে ভারতের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছে, সেই চীন কিন্তু এবার পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি। এটা লক্ষ্য করার বিষয়। চীনকে পাশে পাওয়ার আশায় পাকিস্তান প্রথমে বীরবিক্রম দেখিয়েছিল। চীনের সাহায্য চেয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু চীন এবার আর পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি। বলা যায়, দাঁড়াবার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। তাহলে চীনও সারা বিশ্বের কাছে সমালোচিত হতো। চীন ততটা মূর্খ নয় বলেই এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে তাকে আরও একা করে দিয়েছে। তাই পাকিস্তানকে বিড়াল তপস্বী সেজে শান্তির বাণী ছড়াতে হয়েছে। তৃতীয়ত, ইসলামিক দুনিয়াও কোনওভাবে পাকিস্তানের পাশে প্রকাশ্যে দাঁড়ায়নি। এমনকী ইসলামিক দেশগুলির জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। আবু ধাবিতে তাদের সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে রেড কার্পেট সম্মান জানিয়েছে। এতে পাকিস্তান সম্মেলন বয়কট করার হুমকি দিলেও তাকে আমল দেয়নি প্রতিনিধি দেশগুলি। সর্বোপরি এই অবস্থায় ভারত অনেকখানি এগিয়ে রইল তার লক্ষ্যের দিকে পৌঁছতে। সেইসঙ্গে লক্ষ্য হল রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন লাভ করা। যে নরম মনোভাব চীন দেখিয়েছে, সেটা বজায় থাকলে বলা যায়, ভারত অচিরেই সেই মর্যাদা লাভ করবে।