রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
এই যখন পরিস্থিতি তখন কিছু আশার আলো দেখাল সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)। খেলাধুলোর প্রতি ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়াতে তারা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। যেমন স্কুলে রোজকার একটি পিরিয়ড খেলার জন্য বরাদ্দ থাকতে হবে। ওইসঙ্গে আরও একটি অভিনব পদক্ষেপ নেওয়া হল: ধরা যাক কিছু ছেলেমেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কারণে দশম বা দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় বসতে পারল না। পরীক্ষা চলাকালীনই তাদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল। দুটি সূচির সংঘাতের বিষয়টি জানিয়ে বোর্ডে আবেদন করা হলে ওই ছেলেমেয়েদের জন্য পরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। সিবিএসই সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, বোর্ডের পরীক্ষার পর কিন্তু ফল প্রকাশের নির্দিষ্ট আগেই এই আবেদন করতে হবে। তাহলে পরীক্ষার্থী এবং বোর্ড উভয়ের পক্ষে সুবিধাজনক কোনও এক সময়ে ওই পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে এবছরই নয়জন পরীক্ষার্থীকে এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই সুযোগ পাকাপাকিভাবে সর্বত্রই চালু করতে চায় সিবিএসই। এই বিশেষ সুবিধার কথা সমস্ত পড়ুয়াকে জানিয়ে দেওয়ার জন্যও স্কুলগুলিকে বলা হয়েছে। সিবিএসই-র এই প্রশংসনীয় পদক্ষেপের প্রতি শিক্ষামহলের একাংশের সমর্থন দেখে আশা জাগছে।
পশ্চিমঙ্গসহ সারা দেশে এই যুগান্তকারী পদক্ষেপ অনুসৃত হওয়া উচিত। তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলো চালিয়ে যেতেও ভরসা পাবে ছেলেমেয়েরা। তাদের প্রতি অভিভাবকদেরও সমর্থন বাড়বে। উপযুক্ত সংখ্যায় ক্রীড়া-প্রতিভা খুঁজে বের করতে হলে খেলাধুলো সম্পর্কে দীর্ঘদিনের নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তন ঘটানো জরুরি। ক্রিকেট বাদ দিলে বিশ্ব ক্রীড়া-মানচিত্রে ভারত একটি বামন দেশ মাত্র। অলিম্পিকস অনেক বড় ব্যাপার, এশিয়ান গেমসেও আমাদের দীনতা অত্যন্ত প্রকট। হকিতেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারেনি ভারত। ফুটবলেও পিছতে পিছতে আমরা পিছড়ে বর্গের মধ্যেও পিছড়ে বর্গ হয়ে গিয়েছি। অলিম্পিকস এবং এশিয়াডে ভারতের পদকসংখ্যা দেখলে মনে হবে দেশটি বোধহয় জনবিরল! বাস্তবটা উল্টো। অথচ পাশের দেশ চীন ক্রীড়াক্ষেত্রে এখন এক বিরাট বিস্ময়—সব দেশকে পিছনে ফেলে শুধুই এগচ্ছে। ক্রীড়াকে তারা নিছক ‘খেলা’ হিসেবে আর দেখে না, ক্রীড়া তাদের কাছে এখন বৃহৎ ‘শিল্প’ (ইন্ডাস্ট্রি) বলেই গুরুত্ব পাচ্ছে। ক্রীড়াকে অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই আঁকড়ে ধরেছে চীন। রূপায়িত হচ্ছে বিরাট পরিকল্পনা। ২০২৫ সালের ভিতরে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলাই চীন সরকারের লক্ষ্য। আমাদেরও উচিত, নোংরা রাজনীতির খেলা ছেড়ে ক্রীড়া ক্ষেত্রের উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া। যাতে নিত্যনতুন ক্রীড়া প্রতিভা খুঁজে বের করে যথাযথরূপে তাদের বিকাশ ঘটানো সম্ভব হয়। কৃতীদের উপযুক্ত প্রাপ্যও (আর্থিক পুরস্কার, চাকরি, বাড়ি, সামাজিক মর্যাদা প্রভৃতি) মেটাতে হবে। পরিকল্পনা সার্থক করে তুলতে প্রেরণা চাইই চাই। সিবিএসই যে ইতিবাচক মনোভাব দেখাল তাকে হাতিয়ার করে ভারতে শিক্ষা ও ক্রীড়ার মণিকাঞ্চন যোগ ঘটানোই হোক তবে আগামী ভারতের লক্ষ্য।