কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
অখিলেশ যাদব ও মায়াবতীর ঘোষণা অনুযায়ী, লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে উভয় দলই ৩৮টি করে আসনে প্রার্থী দেবে এবং একে অন্যের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারও করবেন। এই জোটে কংগ্রেসকে নেওয়া হয়নি। মাত্র দুটি আসন ছাড়া হয়েছে কংগ্রেসকে। আমেথি ও রায়বেরিলি। অর্থাৎ সোনিয়া ও রাহুলের আসন। এই জোটের ঘোষণাকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্বাগত জানিয়েছেন। দুই দলই কিছুদিন আগে স্থির করেছিল জোটবদ্ধ হতে হবে। সেই কৌশল নিয়েই তাঁরা এগিয়েছেন।
অখিলেশ ও মায়াবতী কংগ্রেস সম্পর্কে বলেছেন, আমাদের মনে হয় না কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক থেকে আমাদের কোনও লাভ হবে। কারণ বিগত উপনির্বাচনগুলিতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সুতরাং, আমাদের দু’দলের জোটই মোদিকে হারানোর জন্য যথেষ্ট। তাঁদের দাবি, এই জোটের ফলে নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের ঘুম উড়ে যাবে। তা সত্ত্বেও এই পথে আসল যে বিষকাঁটা রয়েছে তার নাম দিল্লির ময়ূর সিংহাসনে কে বসবেন? অখিলেশ এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, মায়াবতীজি প্রধানমন্ত্রী হলে আমি তাঁকে সমর্থন করি। প্রশ্ন হচ্ছে—তাহলে বাকি জোট শরিকদের কী হবে? কারণ, এটা তো ঠিক যে কেবলমাত্র সপা-বসপা মিলে বিজেপিকে আছাড় মেরে ফেলে দিলেও দু’জনে মিলে সরকার গড়তে পারবে না। সেক্ষেত্রে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে ধরলে মায়াবতীকে প্রধানমন্ত্রীকে হিসেবে সমর্থনদানকারীদের তালিকাও তৈরি রাখা দরকার।
মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারকে সমর্থন দিলেও উত্তরপ্রদেশে এই জোটে তাদের নেয়নি বুয়া-ভাতিজা। তবে, বসপা-সপার জোট নিয়ে এখনই বিরাট কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি কংগ্রেস। যদিও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ বলেছেন, বিজেপিকে হারাতে দেশজুড়ে জোটের প্রয়োজন। অন্য পক্ষে এই জোটকে গুরুত্ব দিতে নারাজ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেনছে, যারা একে অপরকে পছন্দ করে না, তারা আবার কি না মহাজোটের কথা বলছে! এটা দুর্নীতি, নৈরাজ্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার জোট।
আর যাঁকে গিলোটিনে চড়াতে লোকসভা ভোটের আগে এত তৎপরতা, সেই প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, বিরোধীরা চায় দুর্বল সরকার। যাতে অবাধে লুটেপুটে খাওয়া যায়। তাদের একমাত্র প্রতিপক্ষ আমি। কারণ আমি চাই মজবুত সরকার। যতই সম্মিলিত হয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করা হোক মনে রাখবে চৌকিদারকে আটকানো যাবে না। জোটের চরিত্রদের একের পর এক কেলেঙ্কারি সামনে আসছে। দেখুন এরপর কী হয়! বিরোধীরা যে জোট করছে তার একমাত্র কারণ হল দুর্নীতি।
গলা ফাটিয়ে মোদি যাই বলুন না কেন, বিগত কয়েকটি বিধানসভা ভোটে বিজেপি বাহিনীর মার্কশিটে অনেকগুলি লাল কালি ঢেরা পড়ে গিয়েছে। তারপর থেকেই দেশজুড়ে মোদি-বিরোধী একটা চোরাস্রোতও উঠেছে। তা সত্ত্বেও বলা যায়, এমন বিচ্ছিন্নভাবে জোট করলে কোনও লাভ হবে না। কারণ, অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, গাঁটছড়ার সরকারে এত বেশি ব্ল্যাকমেলের রাজনীতি চলে যে, তা স্থায়ী হয় না, স্থায়ী হওয়া অসম্ভবও। বহু রাজ্যে, এমনকী কেন্দ্রেও এরকম জোট সরকারের ভূরি ভূরি নমুনা আছে, কোনোটাই মানুষকে মজবুত সরকার দিতে পারেনি। সে কারণেই সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটেই মানুষ ভরসা রেখেছে। এগারোজনের বোঝাপড়ায় ফুটবল খেলা আর দেশের সরকার চালানো এক কথা নয়।