কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মন্তেশ্বরের বিডিও বিপ্লব দও বলেন, ওই এলাকার বধূরা সুন্দর নকশি কাঁথার প্রকৃত দাম পান না। জেলা শিল্প কেন্দ্রের মাধ্যমে দিল্লির এক এজেন্ট এখানে এসেছিলেন। তাঁরা নকশি কাঁথা দেখে উৎসাহী। আমরাও সরকারি মেলাগুলিতে কাঁথা বিপণনের চেষ্টা করছি।
দেনুড় পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌসা, ধেনুয়া, গলাতুন প্রভৃতি গ্রামের প্রায় ২০০ জন বধূ নকশি কাঁথা তৈরি করেন। যদিও তাঁরা কাজের সঠিক মূল্য পান না বলে অভিযোগ। এলাকার এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা ওই নকশি কাঁথা কম দামে সংগ্রহ করে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করেন। পঞ্চায়েত প্রধান মকদম শেখ বলেন, কাঁথার উপরে যত বেশি নকশা তোলা যাবে, সেই কাঁথার দাম তত বেশি। প্রচার ও যোগাযোগের অভাবে প্রকৃত ক্রেতারা এখানকার নকশি কাঁথার কথা জানতেই পারেন না। বর্তমানে বিডিও সাহেব এখানকার কাঁথা ভিন জেলা ও রাজ্যে বিপণনের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন। কাজের সঠিক মূল্য পেলে গৃহবধূরা উৎসাহিত হবেন।
জানা গিয়েছে, কাপড়ের কাঁথা শরীরের পক্ষে ভালো। এক একটি কাঁথা ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে সিন্থেটিক, উল বা ফারের কাঁথা বাজারে এসেছে। একশ্রেণীর সৌখিন মানুষ এগুলি বেশি ব্যবহার করছেন। যদিও চিকিৎসকদের দাবি, সিন্থেটিক বা ফারের কাঁথা থেকে নানা চর্মরোগ হতে পারে। সারা বিশ্বে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও, প্রবীণ মানুষদের কাছে আজও সমানভাবে জনপ্রিয় গ্রাম বাংলার কাপড়ের তৈরি নকশি কাঁথা। কিন্তু কোথায় বা কারা এখনও সেই কাঁথা তৈরি করেন, তা অনেকেরই অজানা।
দেনুড় অঞ্চলের কয়েকশো গৃহবধূ বাড়িতে কাজের অবসরে কাপড়ের নকশি কাঁথা বুনতে ভালোবাসে। এর থেকে কিছুটা আয় হয় তাদের। মৌসা গ্রামের গৃহবধূ রোজিনা শেখের স্বামী কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। বাড়িতে কাজে ফাঁকে নকশি কাঁথা বোনেন রোজিনা বিবি। তিনি বলেন, একটা কাঁথা তৈরি করতে চারটি নতুন কাপড় কিনতে হয়। যার দাম এক হাজার টাকা। এছাড়াও সেলাই করা সুতো সহ অন্যান্য সামগ্রী মিলিয়ে ১১০০-১২০০ টাকা খরচ হয়। কাঁথায় গাছ, ময়ূর, প্রভৃতি নকশা করতে বেশি সময় লাগে। কিন্তু এই কাজের সঠিক দাম পাই না।
ওই গ্রামেরই আরএক বধূ রেহানা বিবির স্বামী গ্রামে হকারি করেন। বাড়িতে কাজের অবসরে তিনিও নকশি কাঁথা তৈরি করেন। তিনি বলেন, এলাকার কিছু মানুষ আমাদের কাছ থেকে ১৫০০ থেকে দু’হাজার টাকা দিয়ে কাঁথা কেনেন। তাতে খুব কম টাকা আমাদের লাভ থাকে।