মুম্বই ও নয়াদিল্লি, ২০ আগস্ট (পিটিআই): ডেবিট কার্ডে লেনদেনের দিন কি এবার শেষ করতে চলেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)? ব্যাঙ্কের আর্থিক লেনদেনকে আরও বেশি ডেজিটাল নির্ভর করে তুলতে এমনটাই চাইছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। গতকাল মুম্বইয়ে আয়োজিত এক বাৎসরিক সভায় এসবিআইয়ের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার বলেছেন, ‘ব্যাঙ্কের যাবতীয় লেনদেনে প্লাস্টিক কার্ডের ব্যবহার এবার থেকে বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তভাবনা শুরু হয়েছে। এবং খুব কম সময়ের মধ্যে এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ ডেবিট কার্ডের পরিবর্তে গ্রাহকরা ‘ইয়োনো’ অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের আর্থিক লেনদেন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কুমার। এদিকে, উৎসব মরশুমকে সামনে রেখে গাড়ি-বাড়ির ঋণের উপর বিভিন্ন ছাড় দিল এসবিআই। মঙ্গলবার দিল্লিতে এক বিবৃতি প্রকাশ করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাড়ি-বাড়ি ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনও প্রসেসিং ফিস নেওয়া হবে না গ্রাহকদের কাছ থেকে। গাড়ি-ঋণে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে অনলাইন আবেদেনেও। ব্যাঙ্কের ‘ইয়োনো প্ল্যাটফর্মে’র মাধ্যমে এই আবেদন করতে পারবেন গ্রাহকরা। এক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়ার পাশাপাশি বিশেষ কিছু ছাড় পাওয়া যাবে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। গাড়ি-ঋণে সুদের হার কমিয়ে করা হয়েছে ৮.৭০ শতাংশ। বাড়ি ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার কমে হচ্ছে ৮.০৫ শতাংশ। শুধু তাই নয়, বেতনভোগী গ্রাহকরা পছন্দের গাড়ির মোট মূল্যের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ পাবেন বলে ওই বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে এসবিআই। এর ফলে ধুঁকতে থাকা গাড়িশিল্পের চাকা কিছুটা গতি পাবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। তবে উৎসব মরশুমে ঋণের উপর এই ছাড়ের সময়সীমা কতদিন, তা স্পষ্ট করা হয়নি ওই বিবৃতিতে।
দেশের ব্যাঙ্কিংশিল্পে প্রথম সারিতে রয়েছে এসবিআই। আর্থিক লেনদেনে প্লাস্টিক কার্ডের উপর নির্ভরতা কমাতে দীর্ঘদিন ধরেই পরিকল্পনা করে আসছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। এরজন্য ‘ইয়োনো (ইউ-ওনলি-নিড-ওয়ান)’ পরিষেবার প্রসার ঘটাতে যাবতীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়। কুমার বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে এসবিআইয়ের ডেবিট কার্ড রয়েছে এমন গ্রাহকের সংখ্যা ৯০ কোটি। ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক সংখ্যাও তিন কোটির কাছাকাছি। তবে এসবই এখন অতীত হয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। আমরা চাই, আর্থিক লেনদেনে প্লাস্টিক কার্ডের ব্যবহার কমাতে। ডেবিট কার্ড ছাড়াই আর্থিক লেনদেনে এবার জোর দেওয়া হচ্ছে ‘ইয়োনো প্ল্যাটফর্ম’-এর উপর।’ তিনি জানিয়েছেন, এসবিআইয়ের এই ‘ইয়োনো’ অ্যাপের মাধ্যমেই গ্রাহকরা টাকা তুলতে পারবেন। জমাও দিতে পারবেন। আবার কেনাকাটা করার ক্ষেত্রেও অসুবিধায় পড়তে হবে না গ্রাহকদের। এর জন্য ইতিমধ্যেই গোটা দেশে ৬৮ হাজার ‘ইয়োনো ক্যাশপয়েন্ট’ তৈরি করা হয়েছে। আগামী ১৮ মাসের মধ্যে ‘ক্যাশপয়েন্টে’র সংখ্যা ১০ লক্ষে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে ব্যঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ক্রেডিট কার্ডের বিকল্প হিসেবেও ‘ইয়োনো’ পরিষেবা ব্যবহার করতে পারবেন গ্রাহকরা। কুমার জানিয়েছেন, ‘ইয়োনো প্ল্যাটফর্মে’ই মিলবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের যাবতীয় সুবিধা। এসবিআইয়ের লক্ষ্যই হল, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের পকেট থেকে প্লাস্টিক কার্ডের বোঝা কমিয়ে দেওয়া।