পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
গত ৯ জুলাই কলকাতায় পাকা সোনা, অর্থাৎ ২৪ ক্যারেট সোনার দর গিয়েছিল ৩৪ হাজার ৬৮৫ টাকা। ১৯ জুলাই ১০ গ্রাম পাকা সোনার সেই দর পৌঁছয় ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকায়। পাকা সোনার দরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গয়নার জন্য ২২ ক্যারেট সোনার দরও। গত শুক্রবার গয়না সোনার দর গিয়েছে প্রতি ১০ গ্রাম ৩৪ হাজার ৪৩০ টাকা। যদিও শনিবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময় পাকা ও গহনা— দু’টি ক্ষেত্রেই সোনার দর কিছুটা কমেছিল। ২৪ ক্যারেটের ১০ গ্রামের দর ছিল ৩৫ হাজার ৫২৫ টাকা। হলমার্কযুক্ত ২২ ক্যারেট গয়না সোনা ছিল ১০ গ্রাম পিছু ৩৪ হাজার ২১০ টাকা।
এদিকে সোনার পাশাপাশি হু হু করে চড়ছে রুপোর দর। ইতিমধ্যেই খুচরো রূপোর কেজি ৪১ হাজার টাকা ছুঁয়েছে। অথচ দিন দশেক আগেও সেই দর ৩৭ হাজার ৮০০ থেকে ৩৭ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিল। এত অল্প সময়ের মধ্যে এতটা দামের লাফ রুপোর বাজারে হয়নি বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি তাঁরা বলছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে রুপোর দর চড়তে পারে আরও।
সোনার দর বৃদ্ধি নিয়ে কতটা বিপাকে পড়তে পারে ব্যবসা? সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনের কথায়, এর ভালো ও খারাপ— দু’টি দিকই আছে। ভালো দিকটি হল, সোনা যতটা অলঙ্কার হিসেবে আদর পায়, ততটাই বিনিয়োগ হিসেবে গুরুত্ব পায়। দাম একটু বাড়লে, সাধারণ মানুষ আশ্বস্ত হন, এর বাজার ভালো যাচ্ছে। এতে ক্রেতারা উৎসাহিত হন এই ভেবে, আগেভাগে কিনলে ঠকবেন না। আবার এর বিপরীত দিকটিও আছে। বাজারে নগদের অভাব ভীষণভাবে। তাই শুধু সোনা নয়, কোনও সেক্টরেই বাজার ভালো যাচ্ছে না। গোটা অর্থনীতিই যদি নষ্ট হয়, তাহলে সোনার বাজার একা টিকে থাকবে, এটা হয় না। আমাদের আশা, সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ করবে, যাতে বাজারে নগদের জোগান বাড়ে। সর্বস্তরের ক্রেতারা বাজারমুখী হন। তাহলে সবার মঙ্গল।
সাম্প্রতিককালে এদেশে শেয়ার বাজার মোটেই ভালো যাচ্ছে না। তবে টাকার দর কিছুটা ভালো। এই অবস্থায় কেন এতটা বাড়ল সোনার দর? ইন্ডিয়া বুলিয়ান অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার প্রেসিডেন্ট পঙ্কজ পারেখের কথায়, দেশে বিদেশি বিনিয়োগের দরজা আরও খুলে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রে সুস্থির সরকার বসেছে। তার দৌলতে টাকার দর ভালো। কিন্তু যেভাবে আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে, তাতে কোথাও বিনিয়োগ করে শান্তি পাচ্ছে না মানুষ। আমেরিকার সঙ্গে চীন, ইরানের মতো দেশগুলির সম্পর্ক খারাপ হওয়ায়, সঙ্কট বাড়ছে। সোনায় বিনিয়োগ চিরকালই ‘নিরাপদ’। তাই অস্থিরতার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনাকেই পছন্দ করছেন লগ্নিকারীরা। তবে ভারতে তা আরও এক ধাপ চড়েছে কেন্দ্রের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তে। রেকর্ড শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ায়, তার বাড়তি বোঝা বইতে হচ্ছে ক্রেতাকেই। তবে পঙ্কজবাবুর কথায়, ‘সেফ হেভেন’ হিসেবে সোনার পাশাপাশি রুপোও জনপ্রিয়। সেই কারণেই রুপোর দরও চড়া। তবে সোনা ও রুপোর দামের মধ্যে একটি সম্পর্ক আছে। পঙ্কজবাবুর কথায়, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বলছে, রুপোর যে দর যায়, সোনার দাম তার চেয়ে ৭০ থেকে ৭৫ গুণ বেশি হয়। কিন্তু এখন তা ৮৫ গুণেরও বেশি। এর থেকেই বোঝা যায়, সোনার দরে এখনও বৃদ্ধির সুযোগ আছে। বাজার কোন দিকে যায়, এখন সেটাই দেখার।