পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
আয়কর দপ্তরের হিসেব বলছে, গত ২৩ মার্চ পর্যন্ত এ দেশে আয়কর আদায় হয়েছে ১০ লক্ষ ২১ হাজার কোটি টাকা। এদিকে, চলতি বছরে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি আর্থিক বছর প্রায় শেষ হওয়ার মুখে আয়কর বাবদ আদায় পিছিয়ে আছে প্রায় ১৫ শতাংশ। তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস। এই পর্ষদের সদস্য (রাজস্ব) নীনা কুমার ইতিমধ্যেই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছেন সবক’টি আঞ্চলিক অফিসকে। এই ক’দিনে কর আদায়ে যে সবদিক থেকে ঝাঁপাতে হবে, সেই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সারা বছরের কর আদায়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ কর আদায় ৬.৯ শতাংশ কমে গিয়েছে। এটি যে মোটেই সন্তুষ্ট থাকার পরিস্থিতি নয়, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে ওই ট্রেন্ড। অর্থাৎ কেন্দ্রের নিজস্ব রিপোর্টই স্পষ্ট করে দিচ্ছে, আয়কর আদায়ে এবার মোটেই ভালো পরিস্থিতিতে নেই দেশ।
তাহলে কর আদায়ে বাংলার চেহারা কেমন? যে সমসয়সীমা পর্যন্ত কর আদায়ের নিরিখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পর্ষদ সদস্য, সেই ২৩ মার্চ পর্যন্ত সময়ে এ রাজ্যে আয়কর আদায় হয়েছে প্রায় ৪১ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা, এমনটাই জানাচ্ছে আয়কর দপ্তরের সূত্র। গত বছর ওই সময়ের নিরিখে আয়কর আদায় হয়েছিল প্রায় ৩৯ হাজার ২৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি আর্থিক বছরে ২৩ মার্চ পর্যন্ত আয়কর আদায় বৃদ্ধির হার ৭.১ শতাংশ। দপ্তরের সূত্র বলছে, যে টাকা আদায় হয়েছে এখনও পর্যন্ত, তাতে সাধারণ মানুষের থেকে সংগৃহীত করের অঙ্ক প্রায় ১৪ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। কর্পোরেট কর আদায় বা শিল্প থেকে পাওয়া আয়করের অঙ্ক প্রায় ২৭ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সাধারণ করদাতাদের প্রায় দ্বিগুণ টাকা এসেছে শুধু শিল্পসংস্থাগুলির তরফেই। আদায় হওয়া টাকার আওতায় আছে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
আয়কর দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, গত বছরের নিরিখে চলতি আর্থিক বছরে যেটুকু ভালো ফল করেছে কলকাতা সার্কেল, তা হয়েছে শিল্পক্ষেত্রেই। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দপ্তরের কর্তাদের একাংশ বলছেন, গত বছর এ রাজ্য থেকে আয়কর আদায় হয়েছিল প্রায় ৪১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। সূত্রের খবর, এর মধ্যে শিল্পসংস্থাগুলি থেকে কর্পোরেট ট্যাক্স আদায় হয়েছিল প্রায় ২৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। সাধারণ মানুষের থেকে কর বাবদ জমা পড়েছিল প্রায় ১৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সাধারণ আয়করদাতাদের কর বৃদ্ধির হার গত আর্থিক বছরের তুলনায় এ রাজ্যে বাড়েনি ততটা। বরং তা অনেকটাই টেনে নিয়ে গিয়েছে কর্পোরেট ট্যাক্স।
ব্যবসায়ীদের একাংশের কথায়, নোট বাতিলের পর প্রায় আড়াই বছর কেটে গেলেও, তার ক্ষত এখনও শুকায়নি। তার সঙ্গে দোসর হয়েছে জিএসটি’ও। গোটা দেশেই যে সেই সঙ্কট বেড়েছে, তা প্রকাশ পেয়েছে কেন্দ্রের আয়কর আদায়ের ছবিতেই। এ রাজ্যেও যে তার প্রভাব পড়েছে, তা মানছেন দপ্তরের কর্তারাও। বলছেন, শিল্পক্ষেত্রে কর আদায় বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু বিগত বছরগুলির মতো বৃদ্ধি অত দ্রুত হয়নি। তাই এবার সাত শতাংশ বৃদ্ধি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দপ্তরকে। বছর শেষ হওয়া পর্যন্ত সেই অঙ্ক কোথায় গিয়ে পৌঁছয়, সেদিকেই এখন নজর রাখছেন তাঁরা।