বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত মরশুমে সরকারি হিসেবে রাজ্যে ৯০ লক্ষ টনের মতো আলু উৎপাদন হয়েছিল। এবার সরকারি আধিকারিক, ব্যবসায়ী মহল, হিমঘর মালিকরা নিশ্চিত যে উৎপাদন এক কোটি টন ছাড়াবে। কেউ কেউ মনে করছেন, উৎপাদন ১ কোটি ২০ লক্ষ টন ছুঁতেও পারে। এবার আবহাওয়া পুরোপুরি আলু চাষের অনুকূল ছিল। পুরো শীতের মরশুম জুড়ে টানা ঠান্ডা আবহাওয়া ছিল। বৃষ্টি, কুয়াশা বিশেষ হয়নি। অল্পবিস্তর যে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে আলু চাষে সেচের সুবিধা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সহ অন্য প্রধান আলু উৎপাদক রাজ্যগুলিতেও ভালো ফলন হয়েছে।
রাজ্যে যে প্রায় সাড়ে চারশো হিমঘর আছে, তাতে সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৭০ লক্ষ টন আলু মজুত করা যায়। মে মাসে হিমঘর খোলার আগে কিছু পরিমাণ আলু ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদন হলে সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে হিমঘর মালিক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। উৎপাদন এক কোটি টনের আশপাশে থাকা সবদিক দিয়ে ভালো বলে তাঁরা জানিয়েছেন। গত মরশুমে চাষিরা আলুর ভালো দাম পেয়েছিলেন। নতুন আলু ওঠার পর গত বছর মার্চ মাসে চাষিরা ৮-৯ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে পেরেছিলেন। যদিও ওই আলু সংরক্ষণ করে বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। কারণ আলুর দাম গত বছর বিশেষ ওঠেনি। এর জেরে ব্যবসায়ীদের কাছে আলু কেনার টাকার ঘাটতি আছে বলে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন। আলুর ব্যবসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের টাকা অনেক হিমঘর মালিক পরিশোধ করতে পারেননি। ফলে তাঁরা এবার নতুন ঋণ নাও পেতে পারেন।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি উদ্যোগে আলু কেনার দাবি উঠতে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীদের সংগঠনও চাইছে, সরকার সংগ্রহ মূল্য ধার্য করে আলু কিনে হিমঘরে সংরক্ষণ করুক। এতে আলুর বাজার কিছুটা তেজি হবে। এতে চাষিদেরও উপকার হবে। এই প্রসঙ্গে কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপনবাবু জানিয়েছেন, আলু কেনা হবে কি না, সেটা নবান্ন ঠিক করবে। এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলা সম্ভব নয়। সরকারি সূত্রের খবর, সরকারি উদ্যোগে আলু কেনার জন্য বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে। সরকারি সংস্থাগুলিকে এর জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে হবে। বামফ্রন্ট সরকারের সময় একবার ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে আলু কিনে ব্যাপক লোকসান হয়েছিল। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই ঋণ পরিশোধ করতে হয়। বাম আমলে সরকারি উদ্যোগে আলু কিনতে গিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। পরিবর্তনের পর ওই দুর্নীতির তদন্তে সিআইডি-কে দেওয়া হয়।