কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
ব্যাঙ্কে গিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে, এমন অভিযোগ অনেকেই করেন। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। চেক ভাঙাতে অহেতুক দেরি, বা ডেবিট কার্ডের কারচুপি— নানা সমস্যায় জর্জরিত বহু গ্রাহক। ব্যাঙ্কের তরফে যেসব গ্রাহক হয়রানির শিকার, সুবিচার পেতে তাঁদের সেই ব্যাঙ্কের শাখাতেই আবেদন করতে হয়। সেখানে সুরাহা না মিললে, আবেদন করা যায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কে। এবার থেকে ওই একই সুবিধা পাওয়া যাবে ডিজিটাল লেনদেনেও। ডিজিটাল লেনেদেনের সংখ্যা দেশজুড়ে বাড়ছে, তার সঙ্গে বাড়ছে সেই সংক্রান্ত কারচুপি বা প্রতারণাও। এই বৈদ্যুতিন লেনদেন নিয়ে অভিযোগ উঠলে, এতদিন পর্যন্ত তার বিচার পাওয়ার তেমন পোক্ত জায়গা ছিল না। এবার সেই সুযোগই করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে আরবিআই।
কোন কোন ক্ষেত্রে আরবিআই ওম্বুডসম্যানে অভিযোগ জানাতে পারবেন গ্রাহক? আরবিআই জানিয়েছে, গ্রাহকের ওয়ালেট বা কার্ডে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত না দেওয়া, অবৈধ ফান্ড ট্রান্সফার, পেমেন্ট হতে গিয়েও হয়নি- এমন ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত আসা, প্রিপেড পেমেন্ট ইনস্ট্রুমেন্টের আরবিআই গাইডলাইন মেনে কাজ না করা বা যুক্তিযুক্ত কারণ থাকা সত্ত্বেও গ্রাহকের কাছে টাকা ফেরত না দেওয়া, মোবাইলের মাধ্যমে কোনও রকম লেনদেনে সমস্যায় গ্রাহকের ক্ষতি, ইউপিআই, ভারত বিল পেমেন্ট সিস্টেম, ভারত কিউআর কোড, ইউপিআই কিউআর কোড সংক্রান্ত আর্থিক সমস্যা প্রভৃতি। অর্থাৎ অনলাইনে বা মোবাইলে বা কার্ডের মাধ্যমে যে কোনও পেমেন্টের ক্ষেত্রে যদি কোনও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন গ্রাহক, তাহলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানানো যাবে। তবে সবার আগে যেখানে ক্ষতি হয়েছে, সেখানে অভিযোগ জানাতে হবে। যদি এক মাসের মধ্যে সদুত্তর না থাকে বা সুরাহা না পাওয়া যায়, তাহলে আরবিআই ওম্বুডসম্যানে অভিযোগ জানানো যাবে। কেউ যদি ডিজিটাল লেনেদেন সংক্রান্ত কারণে মানসিক চাপ বা হেনস্তার শিকার হন, তাহলেও তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন, জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
এমনিতেই ব্যাঙ্কের পরিষেবার বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ ওঠে। সেখানে হয়রানির বিরুদ্ধে আরবিআই অম্বুডসম্যানে যে অভিযোগ যায়, গত এক বছরে তা জমে পাহাড় হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সর্বশেষ হিসেব বলছে, গত এক বছরে সরকারি ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে মোট অভিযোগ জমা পড়েছে ১ লক্ষ ১ হাজার ৯৬৫টি। বেসরকারি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ ৪২ হাজার ৪৪১টি। বিদেশি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে জমা পড়েছে ৩ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ। যে অভিযোগগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে, তার মধ্যে সবার আগে রয়েছে এটিএম, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড। কার্ড দিয়ে টাকা তোলার সময় হাতে টাকা না আসলেও, ব্যাঙ্কের তরফে টাকা কেটে নেওয়ার মতো অভিযোগ যেমন আছে, তেমনই ক্রেডিট কার্ডের তরফে অস্বাভাবিক বিলিং বা কারচুপির অভিযোগ আছে। এই সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা ৩৬ হাজার ২৫০টি। অভিযোগের দ্বিতীয় ধাপে আছে ভুল বুঝিয়ে কোনও ব্যাঙ্কের কোনও পরিষেবা জোর করে গ্রাহককে গছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি। এই সংক্রান্ত অভিযোগের পরিমাণ ৩২ হাজার ৯০০টি। এসবের পাশাপশি ডিজিটাল লেনদেনে প্রতারণার বহর যেভাবে বাড়ছে, তাতে এই অভিযোগের সংখ্যা যে কয়েক গুণ বেড়ে যাবে তাতে সন্দেহ নেই, বলছে সংশ্লিষ্ট মহল।
ডিজিটাল লেনদেন সংক্রান্ত ওম্বুডসম্যান
যত টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হচ্ছে, তত টাকা ক্ষতিপূরণ মিলতে পারে। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ২০ লক্ষ টাকা ছাড়াবে না।
যদি কেউ মানসিক যন্ত্রণা ও হেনস্তার অভিযোগ আনেন, তাহলে তিনি শুধু সেই কারণেই সর্বাধিক এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।
যদি ওম্বুডসম্যানের বিচার বা রায় অভিযোগকারী বা অভিযুক্তের পছন্দ না হয়, তাহলে তার পরেও বিচার চাওয়ার রাস্তা খোলা রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেক্ষেত্রে বিচারের ভার নেবে অ্যাপিলেট অথরিটি।
লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগটি আগে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখানে এক মাসের মধ্যে সুরাহা না হলে, তখন আরবিআই’তে অভিযোগ দায়ের করা যাবে।
শর্তাবলি সাপেক্ষে যে কেউ অভিযোগ করতে পারেন। তার জন্য কোনও খরচ নেই।
এ রাজ্যের কোনও অভিযোগ জানাতে দরখাস্ত, ডাকযোগে চিঠি বা ই-মেল বা ফ্যাক্স পাঠাতে হবে ডালহৌসির রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অফিসের ঠিকানায়।