বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
২০১৭ সালের ৩ মার্চ ট্রাই নতুন নিয়মে কেবল টিভি দেখার নির্দেশিকাটি জারি করেছিল। তার আগে পর্যন্ত কেবল টিভি ব্যবসায় যে আয় হত, তা ভাগ হত এমএসও (মাল্টি সিস্টেম অপারেটর) এবং এলসিও’দের (লোকাল কেবল অপারেটর) মধ্যে। গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা এই দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ভাগ করে নিত এবং তারই একটি অংশ যেত পে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে। এছাড়াও চ্যানেল বা ব্রডকাস্টারদের আয়ের অন্যতম উৎস টিভির পর্দায় সম্প্রচারিত বিজ্ঞাপন।
কলকাতার একগুচ্ছ এলসিও, সৌমেন রায় এবং অন্যদের তরফে আইনজীবী দেবব্রত সাহারায় ও পিঙ্গল ভট্টাচার্য আদালতকে জানান, ২০১৭ সালে ট্রাইয়ের দেওয়া নির্দেশিকা এই ব্যবসার গোড়ায় আঘাত করেছে। এখন চ্যানেলগুলির তরফে যে দাম ধার্য করা হয়, সেখান থেকে ৮০ শতাংশ টাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী তুলে দিতে হবে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা ব্রডকাস্টারের হাতে। বাকি ২০ শতাংশের মধ্যে ৫৫ ভাগ পাবে এমএসও ও ৪৫ ভাগ পাবে এলসিওরা। কিন্তু, কিসের ভিত্তিতে এই ব্যবসা থেকে হওয়া আয়ে এভাবে হস্তক্ষেপ করা হল, তার কোনও ব্যাখ্যা ট্রাই দেয়নি। কোন যুক্তিতে এলসিও এবং এমসিওদের আর্থিক স্বার্থে এভাবে আঘাত হানা হল, তার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি।
মামলাকারীরা জানান, এলসিওরা নিজেদের স্বার্থেই গ্রাহক সংগ্রহ করেন। কিন্তু, নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী সেই গ্রাহকদের উপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণই থাকবে না। কার্যত সেই গ্রাহকদের তুলে দিতে হবে এমএসওদের হাতে। কারণ, এলসিও নয়, ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী গ্রাহকদের বিলের পরিমাণ নির্ধারণ করবে এমএসওরা। অথচ এই ব্যবস্থারও কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে নয়া ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ২৯ ডিসেম্বর ট্রাই জানায়, ৩১ জানুয়ারির পর থেকে ওই নির্দেশিকা কার্যকর হবে। যা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আদালতের মঙ্গলবারের স্থগিতাদেশ নিয়ে অবশ্য ট্রাইয়ের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ধন্দে আছে কেবল সংস্থাগুলিও। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে যেখানে টিভি দেখার নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার কথা, সেখানে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ তাদের খানিকটা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে।
ট্রাই আশায় ছিল, গোটা দেশে সিংহভাগ দর্শক তাঁদের পছন্দের চ্যানেল বাছাই করে তা কেবল অপারেটরদের হাতে তুলে দেবেন। কিন্তু মঙ্গলবারের স্থগিতাদেশের পর বিষয়টি যে অনিশ্চিত হয়ে পড়ল, তাতে সন্দেহ নেই।