দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় ও ব্যবসা থেকে অর্থাগম যোগ। প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন। পুজো পাঠে মন। ... বিশদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণী, ১৫ সেপ্টেম্বর: মোহন বাগানে ‘স্প্যানিশ ব্রিগেড’কে নিয়েই যতই চর্চা হোক, রবিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে রেনবোর বিরুদ্ধে ম্যাচে বাঙালির গোলেই কলকাতা লিগে জয়ে ফিরল মোহন বাগান। জয়ের কারিগর শ্যামনগরের শুভ ঘোষ। গত ম্যাচে এই মাঠে এরিয়ানের কাছে হেরে মুষড়ে পড়েছিল মোহন বাগান শিবির। এদিন কল্যাণীর ঝলমলে ফ্লাডলাইটে খেলে উজ্জ্বল ছটফটে শুভ ঘোষ। ৮ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মোহন বাগান আপাতত লিগ টেবলে ছয় থেকে দুই নম্বরে উঠে এল।
রবিবার মোহন বাগান জয়ের নেপথ্য অবদান কিছুটা বেইতিয়ার হলেও রক্ষণে অগাধ নির্ভরতা দিলেন ড্যানিয়েল সাইরাস। তিনি একটু ঝুঁকে দৌড়ন। অনেকটা দুই প্রধানে খেলে যাওয়া নাইজেরিয়ান স্টপার স্যামি ওমেলোর মতো। মোহন বাগানের নবাগত ত্রিনিদাদ-টোবাগোর এই স্টপার রবিবার সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ খেললেন। ডিস্ট্রিবিউশন, কভারিং প্রশংসনীয়। ‘ফ্রম দ্য বিহাইন্ড’ দলকে লিড করতে পারেন। ডিফেন্সিভ থার্ড থেকে করা তাঁর হেডগুলো বারবার সেন্টার লাইন অতিক্রম করেছে। যার জন্য এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই রেনবো রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে মোহন বাগান। সাইরাসকে বারবার দেখা গেল, দু’হাত তুলে গোটা দলকে আক্রমণে যাওয়ার জন্য উজ্জীবিত করছেন। সদ্য বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে খেলে আসা ত্রিনিদাদ-টোবাগোর অধিনায়ক সাইরাস ডিফেন্স লাইনকে লিড করে উপরে তুলে নিয়ে এলেন। যার ফলে সুহের-বেইতিয়া-ব্রিটোরা স্বচ্ছন্দে আক্রমণে উঠেছেন।
ম্যাচের ৫ মিনিটে সাইরাসের ডান পায়ের একটি স্কুপ বেইতিয়া মুভমেন্টে দেরি করে ফেলেন। রেনবোর গোলরক্ষক অঙ্কুর দাস এগিয়ে এসে বল বিপদমুক্ত করেন। পেনিট্রেটিভ জোনে বেইতিয়া-চামোরোদের খেলা বারবার ধরা পড়ে যাচ্ছে। এদিন স্ট্রাইকার সালভা চামোরোকে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে ফ্রান গঞ্জালেজকে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের ভূমিরায় ব্যবহার করেন কোচ কিবু ভিকুনা। এদিন ডিফেন্সের পাশাপাশি অ্যাটাকের সময় বিপক্ষ বক্সে সাইরাস উঠে গিয়েছেন হেড করতে। তবে সাইরাসের বড় পরীক্ষা বিপক্ষের দ্রুতগতির স্ট্রাইকারদের বিরুদ্ধে। রেনবোর আপফ্রন্টে সেরকম ফুটবলার নেই। ২০ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে উড়ে আসা মাইনাস ধরে রেনবোর বোলানলে কাজিম আমোবি হেলায় পোস্টের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন। ২২ ও ২৮ মিনিটে মোহন বাগান দু’টি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথমবার ফ্রান গঞ্জালেজের ক্রস থেকে নাওরেমের হেড বাইরে যায়। তারপর ব্রিটোর মাইনাস থেকে ওপেন নেট মিস করেন সুহের।
রেনবোর টিডি হিসেবে অভিষেক হওয়া সৌমিক দে রক্ষণ জমাট রেখে খেলার ব্যাপারে প্রাধান্য দিয়েছেন। তারপর ম্যাচ যত এগিয়েছে ততই মোহন বাগান আক্রমণে চাপ বাড়িয়েছে। ফলে আরও গুটিয়ে গিয়েছে লাল-হলুদ জার্সির রেনবো। স্ট্রাইকার সমস্যা তো রয়েছে মোহন বাগানে, পাশাপাশি এদিনও তাদের উইং প্লে কার্যকর হয়নি। ৫৫ মিনিটে মোহন বাগান কোচ রাইট উইং হাফ ব্রিটোকে তুলে নিয়ে তরুণ অ্যাটাকার শুভ ঘোষকে নামান। ৫৮ মিনিটে বেইতিয়ার ফ্রি-কিক থেকে সুহের ওপেন নেট মিস করেন। ৬৬ মিনিটে গোল করে শুভ ঘোষ ‘ডিভিডেন্ড’ দিলেন কোচ কিবু ভিকুনাকে। বেইতিয়ার কর্নার থেকে তিনি বিনা বাধায় হেডে গোল করে মোহন বাগানকে এগিয়ে দেন (১-০)। তবে গোলের আগে রেনবো রক্ষণকে এলোমেলো করে দেন সাইরাস ও ফ্রান গঞ্জালেজ। দীর্ঘকায় দুই বিদেশি ফুটবলারকে রেনবো ডিফেন্ডাররা বক্সে নজর রাখার ফায়দা তুলে নেন সুযোগসন্ধানী শুভ ঘোষ।
এই গোলের কিছুক্ষণ পরেই এদিন ‘অফ কালার’ থাকা লেফট উইং হাফ নাওরেমকে তুলে নিয়ে শেখ ফৈয়াজকে নামান মোহন বাগান কোচ। ৭৬ মিনিটে বেইতিয়ার ফ্রি-কিক থেকে সাইরাসের গোলমুখী শট রেনবো রক্ষণের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসার পর সাইরাসের ফিরতি শট পোস্টের উপর উড়ে যায়। ৭৮ মিনিটে প্রতিআক্রমণে রেনবোর সৈকত সরকার সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। শেষলগ্নে সালভার হেড পোস্টে প্রতিহত হয়।
মোহন বাগান: দেবজিৎ মজুমদার, লালরাম চুলোভা, ড্যানিয়েল সাইরাস, কিমকিমা, গুরজিন্দর কুমার, ব্রিটো (শুভ ঘোষ ৫৫ মি:), ফ্রান গঞ্জালেজ, শেখ সাহিল,নংডাম্বা নাওরেম (শেখ ফৈয়াজ ৭২ মি:), হোসেবা বেইতিয়া (সালভা চামোরো ৮০ মি:), সুহের ভিপি।