গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
গত মরশুমে বার্সেলোনা লা লিগা ছাড়া কিছুই পায়নি। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং কোপা দেল রে’তে ব্যর্থ হয়েছেন আপনারা। তবে আপনি ধারাবাহিকভাবেই ভালো খেলেছেন। ব্যালন ডি’ওরের শেষ ল্যাপে পৌঁছে খেতাবের ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী?
মেসি: চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে লিভারপুলের কাছে হার সব গণ্ডগোল করে দিল। ত্রিমুকুট জয়ের সম্ভাবনা নস্যাৎ হওয়া মাত্রই আমাদের মোটিভেশনে দেখা দিল ঘাটতি। কোপা দেল রে’র ফাইনালে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে আমরা প্রথমার্ধেই হার মেনেছিলাম। বিরতির পরে আমার গোলও কাজে আসেনি। আর ব্যালন ডি’ওরে আমি ফেভারিট কিনা জানি না। এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। শুনছি, এবার নাকি ক্লাব পর্যায়ের পারফরম্যান্স প্রাধান্য পাচ্ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। বিশ্বকাপের বছরগুলিতে ক্লাবের জার্সিতে পারফরম্যান্স সেভাবে গুরুত্ব পায় না। তবে আগেও বলেছি, ব্যক্তিগত খেতাবের থেকে দলের সাফল্যই আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এই মরশুমের শুরুতেই চোট সমস্যা আপনাকে ভোগাচ্ছে। কবে মাঠে ফিরবেন বলে আশা করছেন?
মেসি: এখন অনেকটাই ভালো আছি। অনুশীলনের প্রথম দিনেই চোটটা লাগল। প্রথমে মনে হয়েছিল, তেমন কিছু সিরিয়াস নয়। কিন্তু বাস্তবে এই চোট বেশ ভোগাল। গত কয়েক সপ্তাহ আমি মাঠের বাইরে। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পরেই অনুশীলনে ফিরব। মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি।
লা লিগায় এবার শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি বার্সেলোনার। তিনটি ম্যাচের মধ্যে জয় মাত্র একটি ম্যাচে। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন?
মেসি: একেবারেই না। একাধিক ফুটবলার চোটের কারণে বাইরে। তাই এই ফল। বিলবাওয়ের বিরুদ্ধে হারার মতো মোটেই খেলিনি আমরা। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে পৌঁছে পাস ঠিক হয়নি সেদিন। পরের ম্যাচে রিয়াল বেতিসের চ্যালেঞ্জ সহজেই অতিক্রম করেছিল দল। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে ওসাসুনা আমাদের চমকে দেয়। তবে যা হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। এবার সামনের দিকে তাকাতে হবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের জন্য কি লা লিগা ছেড়ে দিতে চাইবেন?
মেসি: কখনোই নয়। বার্সেলোনা মরশুম শুরু করে সব ট্রফি জয়ের লক্ষ্য নিয়ে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পাওয়ার স্বাদ অবশ্যই আলাদা। অনেক বছর হয়ে গেল বার্সা ইউরোপ সেরা হতে পারেনি। তবে শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেই থামতে চাই না। লা লিগাও আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা।
অ্যানফিল্ডের হার থেকে কী শিক্ষা নিয়েছেন?
মেসি: অ্যাওয়ে ম্যাচে গোল করতেই হবে। না হলে বিদায় অনিবার্য। অ্যানফিল্ডে একটা গোল করতে পারলেই আমরা ফাইনালে পৌঁছাতাম। কিন্তু তা পারিনি। এর আগে যতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি প্রত্যেকবার অ্যাওয়ে ম্যাচে আমাদের গোল ছিল।
ফ্রেঙ্কি ডে জং, আতোঁয়া গ্রিজম্যান, নেটো, জুনিয়ররা এবার বার্সেলোনার জার্সিতে। নতুন দল কীভাবে মূল্যায়ণ করবেন? গতবারের থেকে কি এবারের দলে ভারসাম্য বেশি?
মেসি: গতবারের থেকে ভারসাম্য বেশি না কম তা বোঝা যাবে মরশুম শেষ হওয়ার পর। ২০১৮-১৯ মরশুমে বার্সেলোনা যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। এবার মাঝমাঠ এবং আপফ্রন্টে গভীরতা অবশ্যই বেড়েছে। তবে তা মাঠে প্রমাণ করতে হবে। সাফল্য না পেলে এই দলকেও কেউ শক্তিশালী বলবে না।
নেইমারকে ফেরানোর চেষ্টা ব্যর্থ হল বার্সেলোনার। ব্রাজিলিয়ান তারকাটি ন্যু ক্যাম্পে এলে কি আপনি খুশি হতেন? বার্সা ম্যানেজমেন্ট কি নেইমারকে ফেরানোর জন্য আন্তরিকভাবে ঝাঁপিয়েছিল?
মেসি: অবশ্যই। নেইমারের মতো বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে পেলে আমাদের শক্তি অনেকটাই বাড়ত। সহজ হত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ। আমি জানি, ওকে এখানে ফেরানোর বিরুদ্ধে কারা রয়েছে। কিংবা নেইমার কাদের জন্য বার্সেলানা ছেড়েছিল। তবে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এখন শুধুমাত্র দল নিয়েই ভাবতে চাই। আর ক্লাব ওকে পাওয়ার জন্য কতটা আন্তরিক ছিল তা আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা কীভাবে এগিয়েছে তা’ও আমার অজানা। তাই এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জায়গায় আমি নেই। শুধু এটা বলতে পারি, বার্সেলোনার ফেরার জন্য নেইমার প্রচণ্ড আগ্রহী ছিল।
নেইমারের সঙ্গে কি আপনার এই ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে?
মেসি: ট্রান্সফার নিয়ে কথাবার্তা শুরু হওয়ার পর নেইমারের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। আমি চোট পেয়ে ছিটকে গেলাম আর ও প্যারিসের ক্লাবটির হয়ে অনুশীলনে নামল। তাই আর যোগাযোগ হয়নি। তবে নেইমার শেষ পর্যন্ত এখানে না আসায় আমি হতাশ নই। ওকে ছাড়া আমরা একাধিক ট্রফি জিততেই পারি।
ক্লাব প্রেসিডেন্ট বার্তোমেউ বলেছেন, ইচ্ছে হলে আগামী মরশুমে আপনি অন্য ক্লাবে খেলতেই পারেন। চুক্তি অনুযায়ী আগ্রহী ক্লাবকে ট্রান্সফার ফি দিতে হবে না। এটা কি সত্যি? ২০২০’তে কি আপনার গায়ে অন্য ক্লাবের জার্সি দেখা যাবে?
মেসি: পেশাদার ফুটবলার হিসেবে চুক্তির গোপনীয়তা রক্ষা করা আমার কর্তব্য। তবে এটা বলতেই পারি যে, বার্সেলোনায় দীর্ঘদিন থাকার ইচ্ছে অবশ্যই রয়েছে। এটাই আমার সেকেন্ড হোম। তবে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি পছন্দ করি না। নিজেকে কোনও বিজয়ী দলের সদস্য হিসেবে দেখতেই ভালো লাগে। শুধুমাত্র অর্থ কিংবা চুক্তির ক্লজ আমার কাছে শেষ কথা নয়। এছাড়া অনেক কিছুই রয়েছে যা আমায় সেরা পারফরম্যান্স মেলে ধরতে মোটিভেট করে। এখন আমার লক্ষ্য ক্লাবকে সাফল্য এনে দেওয়া। আর বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারটি বাবাই দেখাশোনা করছেন।
সম্প্রতি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বলেছেন, আপনার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যেতে তিনি রাজি। আপনি কি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন?
মেসি: রোনাল্ডোর সঙ্গে আমার কোনও সমস্যা নেই। আমরা বন্ধু হতে না পারি, শত্রুই নই। ও আর আমি কখনো ড্রেসিং-রুম শেয়ার করিনি। কোনও পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে দেখা হয়েছে দু’জনের। কথাবার্তাও বলেছি। আমরা একে অপরকে ভালো খেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করি। তাই ওর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারতে আমি রাজি।