গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
(ডায়মন্ড গ্যাচ, সন্দীপ ওঁরাও) (শুভ ঘোষ)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণী, ১২ সেপ্টেম্বর: টানা দু’টি ম্যাচে জেতার পর কলকাতা লিগে মুখ থুবড়ে পড়ল মোহন বাগান। বৃহস্পতিবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে এরিয়ানের কাছে হেরে লিগ জয়ের দৌড়ে বড় হোঁচট খেল সবুজ-মেরুন। উল্লেখ্য, পিয়ারলেসের কাছে প্রথম হারের স্বাদ পেয়েছিল ভিকুন-ব্রিগেড। ৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট লিগ টেবলে পাঁচ নম্বরে নেমে গেল মোহন বাগান। ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে এরিয়ান সাত নম্বরে উঠে এল। মাঝমাঠ ও রক্ষণ জমাট করেই বাজিমাত কোচ রাজদীপ নন্দীর।
মোহন বাগানের আসল শক্তি উইং প্লে এবং অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হোসেবা বেইতিয়ার গেম কম্পোজ। এদিন এরিয়ানের রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন কোচ রাজদীপ নন্দী, সঙ্গে অফিসিয়াল হিসেবে তাঁর বাবা রঘু নন্দী। এই জুটি অতীতে বড় দলের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে। তাঁরা যথেষ্ট হোমওয়ার্ক করে নেমে মোহন বাগানের আক্রমণের উৎসমুখগুলিকে আটকাতে সফল। রিজার্ভ বেঞ্চের সামনে টানা দাঁড়িয়ে থাকলেন ‘পিতা-পুত্র’। রেফারি-সহকারী রেফারির প্রতি চাপ সৃষ্টি করলেন। যা সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে বিস্ফারিত চোখে দর্শন করে গেলেন মোহন বাগানের স্প্যানিশ কোচ।
কল্যাণীর মাঠ নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। কিন্তু ক্রমাগত বৃষ্টিতে ঘাসের নীচে জলে জমে ছিল। তাতে ভারসাম্য রাখতে হিমশিম খেলেন বেইতিয়ারা। ৮ মিনিটে মোহন বাগান প্রথম গোলের সুযোগ পায়। বক্সের বাঁ-দিক থেকে নাওরেমের নেওয়া শট প্রথম পোস্ট কভার করে প্রতিহত করেন এরিয়ানের গোলরক্ষক সৈয়দ বিন আব্দুল কাদির। একদা মারাদোনার কোচিংয়ে খেলা কুটি অ্যামোলাকে লোন স্ট্রাইকার রেখে খেলা শুরু করে এরিয়ান। ১৪ মিনিটে সেই কুটির লব ট্র্যাকব্যাক করে দারুণ ফিস্ট করে প্রতিহত করেন মোহন বাগান গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদার। ২৫ মিনিটে হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেললেন সালভা চামোরো। এরিয়ানের ডিফেন্ডার সন্দীপ পাত্র একটা ক্লিয়ারেন্স করতে বক্সে পড়ে গেলে সেই বল ধরে সামনে একা গোলরক্ষককে পেয়েও অবলীলায় বল ক্রসপিসের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন!
মোহন বাগানে রাইট উইংয়ে খেলার মতো ফুটবলার বেশি রয়েছে। কিন্তু ম্যাচের শুরু থেকে এই পজিশনে সুরাবুদ্দিন মল্লিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে কিবু ভিকুনা বিরতির পর সুরাবুদ্দিনের জায়গায় নামান ব্রিটোকে। সালভা চামোরো একটু নীচে নেমে বল ধরে অ্যাটাকে উঠলেন। কিন্তু ৬১ মিনিটে রি-অ্যাটাকে এরিয়ানের ডায়মন্ড গ্যাচ গোল করে গ্যালারিকে চুপ করিয়ে দেন। ৬১ মিনিটে কুটির পাস ধরে প্রায় ২৮ গজ দূর থেকে গ্যাচের ডান পায়ের ভলি জালে জড়িয়ে যায় (১-০)। এই গ্যাচকে মঙ্গলবার সই করিয়ে মাঠে নামিয়ে বড় চমক দিলেন এরিয়ান কোচ। গ্যাচই ম্যাচের সেরা। গোলের আগে দেবজিৎ অহেতুক গোললাইন ছেড়ে এগিয়ে ছিলেন। এই গোলের পরই সহজ সুযোগ নষ্ট চামোরোর।
মোহন বাগান গোল খাওয়ার পর গ্যালারি থেকে উঠে এল ইটের বদলে উড়ে এল আপেল! সেই আপেল এরিয়ানের পরিবর্ত ফুটবলার এমানুয়েল কিছুটা খেয়ে ছুঁড়ে দেন নিজেদের রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে। ৭৮ মিনিটে সেদিক থেকেই কুণাল ঘোষের ফ্রি-কিক বক্সে ফলো করে এসে সন্দীপ ওঁরাও’র মাটি ঘেঁষা শট দেবজিতের হাতে লেগে জড়িয়ে যায় (২-০)। ৮৯ মিনিটে মোহন বাগানের হয়ে ব্যবধান কমান পরিবর্ত শুভ ঘোষ। চামোরোকে উদ্দেশ্যে করে ব্রিটো সেন্টার করলেও চামোরো সেই বলের নাগাল পাননি। উল্টে এরিয়ানের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ছিটকে আসা বলে গোল করেন শুভ (২-১)। ম্যাচের শেষ লগ্নে শুভ ঘোষের শট এরিয়ান গোলরক্ষকের হাতে লেগে ক্রসপিসে ধাক্কা খায়। শেষদিকে মোহন বগান প্রতিপক্ষ বক্সে চাপ সৃষ্টি করলেও লাভ হয়নি।
মোহন বাগান: দেবজিৎ, চুলোভা, ফ্রান মোরান্তে (ফ্রান গঞ্জালেজ), গুরজিন্দর, সুরাবুদ্দিন (ব্রিটো), শেখ সাহিল, নংডাম্বা নাওরেম, হোসেবা বেইতিয়া, সালভা চামোরো, সুহের (শুভ ঘোষ)।