পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
(বিদ্যাসাগর, তুহিন দাস-আত্মঘাতী, কোলাডো-২) (তুহিন, রাহুল)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত সোমবার এক শ্রেণির ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকদের তীব্র ধিক্কারের মধ্যে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল আলেজান্দ্রোকে। বৃহস্পতিবার লিগ টেবলের নীচের সারির দল কালীঘাট এম এসের বিরুদ্ধে ৪-২ গোলে জেতার পর সেই কোচের নামেই জয়ধ্বনি। গ্যালারিতে বিশাল ব্যানার-‘আলেজান্দ্রো আপনার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আছে।’ কালীঘাট এমএসের বিরুদ্ধে লাল-হলুদের জয় প্রত্যাশিতই ছিল। তবে ম্যাচের আগে স্প্যানিশ কোচ যে চাপে ছিলেন টিম লিস্ট দেখে তা বোঝা গেল। মোহন বাগান ও পিয়ারলেসের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে সামাদ, বিদ্যাসাগর, কোলাডোকে না রাখলেও এদিন প্রথম একাদশে রেখেছিলেন। শেষোক্ত দু’জনের নামই রয়েছে স্কোরশিটে। তবে এই ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলের সেরা প্রাপ্তি হুয়ান গঞ্জালেস। কখনও বাঁ প্রান্ত থেকে চমৎকারভাবে ভিতরে ঢুকে তিনি প্রতিপক্ষের ত্রাস হয়ে উঠলেন। কখনও ভিতরে ঢুকে মিডল করিডর দিয়ে অপারেট করলেন। লালরিনডিকা রালতে না থাকায় ইস্ট বেঙ্গল মাঝমাঠে প্রথম আধ ঘণ্টা ফাঁকফোঁকর সৃষ্টি হচ্ছিল। লাল-হলুদ থেকে আসা আকাদেমি রোহেপুইয়া ওই জায়গাটি ভরাট করতে ব্যর্থ হন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ময়দান চত্বরে প্রবল বৃষ্টিতে ইস্ট বেঙ্গল মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। হুয়ান কলকাতায় এসেছেন দশ দিন। তার মধ্যেই চমৎকারভাবে মানিয়ে নিলেন নিজেকে। হুয়ানের জন্য ৩৭ মিনিটে গোল খাওয়ার তিন মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফেরে ইস্ট বেঙ্গল।
ভবানী জয়সওয়ালের পরিবর্তে তুহিন শিকদার নেমেই বাঁ পায়ের মাপা শটে এগিয়ে দেন কালীঘাটকে (১-০)। তিন মিনিটের মধ্যে ১-১ করেন বিদ্যাসাগর সিং। হুয়ানের বিপজ্জনক কর্নার বক্সে উড়ে এলে কালীঘাটের গোলরক্ষক সোমনাথ দত্ত ফিস্ট করেন। ফিরতি বলে বিদ্যাসাগরের শট ফিরিয়ে দেন কালীঘাট স্টপার কারামাকো। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় জাল কাঁপান তিনি (১-১)। প্রথম আধ ঘণ্টায় পিন্টু মাহাতো একক প্রচেষ্টায় দু’বার ঢুকে বল তিনকাঠির মধ্যে রাখতে পারেনি। আরেকবার মাঝখান দিয়ে হুয়ানের বাড়ানো বলে কোলাডোর শট বাইরে যায়।
প্রথমার্ধে কিছুটা লড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে কালীঘাটের তরুণরা দাঁড়াতে পারলেন না ইস্ট বেঙ্গলের বিরুদ্ধে। ৪৭ ও ৫৫ মিনিটে হুয়ানের বাড়ানো দু’টি বল থেকে সুবিধাজনক অবস্থায় বল পেয়েও বাইরে মারেন পিন্টু ও বিদ্যাসাগর। ৬০ মিনিটে হুয়ানের কর্নার থেকে পিন্টুর নিরীহ মাইনাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের গোলে ঢুকিয়ে দেন তুহিন দাস (২-১)। ৬৫ মিনিটে দলের তৃতীয় গোল কোলাডোর (৩-১)। ৬৭ মিনিটে কালীঘাটের বিদেশি স্টাইকার কোয়াসি আলেজান্দ্রোকে ফাউল করেন রোহেপুইয়া। রেফারি ইস্ট বেঙ্গলের খেলোয়াড়টিকে হলুদ কার্ড দেখালেও কোয়াসি মেজাজ হারিয়ে পাল্টা মারেন কোয়েসিকে। রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখান তাঁকে। ৮২ মিনিটে রাহুল পাশোয়ান ডান দিক দিয়ে ঢুকে ৩-২ করেন। পরের মিনিটেই পরিবর্ত বোরহার পাস থেকে ৪-২ করেন ম্যাচের সেরা কোলাডো।
মাঠ নিয়ে কথার যুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল কোচ ও শীর্ষ কর্তারা: ম্যাচের পর ইস্ট বেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘এই মাঠ ফুটবলের উপযুক্ত নয়। আমার দল নিয়ে আসতেই ইচ্ছা করে না। সোমবার কল্যাণীতে ম্যাচ। যাওয়া হয়তো ঝক্কির। তবে এর চেয়ে তো খারাপ মাঠ হবে না।’ এর আধ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ইস্ট বেঙ্গলের প্রধান কর্তা দেবব্রত সরকার বলে দেন,‘ময়দানের মাঠগুলির মধ্যে ইস্ট বেঙ্গল মাঠই সেরা। বল তো গড়ায়। কাদায় আটকে থাকে না। মহমেডান তো বটেই মোহন বাগান মাঠের অবস্থা তো এর চেয়ে খারাপ। কোচ কলকাতায় নতুন এসেছেন। এই রকম মাঠেই ধাতস্থ হতে হবে। তবে শীতকালে আমরা নতুন করে মাঠ সংস্কার করব।’ আলেজান্দ্রো বললেন, ‘সোমবার যা হয়েছিল যা অশোভনীয়। এর প্রভাব যাতে দলে না পড়ে সেটার দেখা কর্তব্য ছিল আমার। হুয়ান যেভাবে এই মাঠে মানিয়ে নিয়েছে তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয় ওর জন্য।’ এদিকে, সাংবাদিক সম্মেলনে আইএফএ’কে তোপ দাগেন ইস্ট বেঙ্গল কর্তারা। তাঁরা জানান, ‘ম্যাচের ২০ ঘণ্টা আগে খেলোয়াড়দের ডেকে এবং তিন ঘণ্টা আইএফএ দপ্তরে আটকে রেখে ঠিক করেনি আইএফএ সচিব। আর ম্যানেজার ও গোলকিপার কোচের শাস্তি বড় বেশি হয়ে গিয়েছে। আমরা আইএফএ গভর্নিং বডিতে যাব। প্রয়োজনে আরবিট্রেসনে যেতে পারি।’