ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
গত এপ্রিলে বোর্ড মিটিংয়ের পর ক্লাবের সাবেক কর্তাদের সঙ্গে কোয়েসের সম্পর্ক তলানিতে চলে যায়। ভেঙে দেওয়া হয় টেকনিক্যাল কমিটি। এই মুহূর্তে কোয়েস চেয়ারম্যান অজিত আইজ্যাকের সঙ্গে ক্লাব সভাপতি ছাড়া আর কারও যোগাযোগ নেই। দলগঠন ভালো না হওয়ায় ক্লাবের সিইও মাঠেই আসেন না। তাই কোয়েস নিযুক্ত কোচ আলেজান্দ্রোই কালক্রমে হয়ে উঠেছেন ‘সুপার বস’। এনরিকে, জবি, লালডানমাওইয়া রালতে, চুলোভা দল ছাড়ায় শক্তিহীন হয়ে পড়ে ইস্ট বেঙ্গল। নতুন বিদেশিরা যোগ্য বিকল্প হয়ে উঠতে পারেননি। ক্রেসপি, মার্কোসদের মতো নতুন বিদেশিদের আনা হয় দেরি করে।
কোচ হিসাবে যথেষ্ট স্বাধীনতা পেলেও সময়মতো অনুশীলন শুরু করাননি আলেজান্দ্রো। লিগের ১২টি দলের মধ্যে সবথেকে পরে ইস্ট বেঙ্গলের প্র্যাকটিস শুরু হয়। ক্লাব গত তিন মাসে যা অনুরোধ করেছে তা কানেই তোলেননি স্প্যানিশ কোচ। শতবর্ষের জন্য মরশুমের প্রথম প্র্যাকটিস সেশনটি ইস্ট বেঙ্গল মাঠে করার আরজি তিনি রাখেননি। ক্লাবের শততম প্রতিষ্ঠা দিবসের পতাকা উত্তোলনে খেলোয়াড়দের আমন্ত্রণ জানানো হলেও প্রত্যাখান করেন কোচ। গত ১ আগস্ট শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের সূচনা লগ্নে তাঁকে মঞ্চে ডাকা হলেও ওঠেননি। মাঝপথেই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান। সিনিয়রিটির ট্র্যাডিশন ভেঙে তিনি বোরহাকে ক্যাপ্টেন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বছরেই বোরহাকে অধিনায়কত্ব দিতে চাননি ক্লাব কর্তারা।
লিগে একটি ম্যাচ লাল-হলুদ জার্সি গায়ে খেলে অবসর নিতে চেয়েছিলেন বাইচুং ভুটিয়া। খেলতে চেয়েছিলেন লিগের প্রথম ম্যাচটি। লাল-হলুদের শতবর্ষে ইস্ট বেঙ্গলকে শেখ জামাল ট্রফিতে বিশেষ ভাবে চেয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবল কর্তারা। ক্লাবের এই দুটি ‘বার্তাকেই’ খারিজ করে দিয়েছেন আলেজান্দ্রো।
টিমের ৩০ জন খেলোয়াড়কে দেখে নেওয়ার জন্য ছয়-সাতটি ম্যাচই যথেষ্ট। মোহন বাগান ম্যাচ ছিল মরশুমের সপ্তম। পিয়ারলেস ম্যাচ নবম। লিগ টেবলে দু’টি উপরের দিকে দলের বিরুদ্ধে সামাদ, কোলাডো, বিদ্যাসাগর সিংদের বাদ দিয়ে প্রথম একাদশ গড়ায় ষষ্ঠ রাউন্ডের পর ইস্ট বেঙ্গল পাঁচ নম্বরে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্লাব মাঠে প্র্যাকটিস বন্ধ করে যুবভারতীতে মাঠ ভাড়া নিয়ে অনুশীলন করেন কোচ আলেজান্দ্রো। আই লিগ শুরু হওয়ার পর তিনি আর ক্লাবমুখো হননি। তখন থেকেই ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। ফেব্রুয়ারিতে টেকনিক্যাল কমিটি থেকে আলভিটোকে সরিয়ে দেওয়ার পর স্প্যানিশ কোচ সাবেক কর্তাদের আরও বিষ নজরে।
গত বছর আই লিগে দু’টি ডার্বি জিতলেও ইস্ট বেঙ্গল আশা জাগিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। আই লিগের শেষ ম্যাচ খেলে দমদম বিমানবন্দরে নেমে তিনি বলেছিলেন,‘সেকেন্ড হওয়াটাও অ্যাচিভমেন্ট।’ সমর্থকদের আনা মিষ্টি ও কেক খেয়েছিলেন তৃপ্তি ভরে। তবে এই প্রসঙ্গে ইস্ট বেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারের কটূক্তি বোধহয় আলেজান্দ্রো এখনও ভুলতে পারেননি। তবে মিডিয়ার সামনে সচিবের এভাবে মুখ খোলাও উচিত হয়নি।
শীতকালে আলেজান্দ্রো প্র্যাকটিস করাননি ইস্ট বেঙ্গল মাঠে। তখন বিভিন্ন স্কুলগুলিকে স্পোর্টসের জন্য ভাড়া না দিয়ে মাঠ সংস্কারের কাজ অবশ্যই করা উচিত ছিল ইস্ট বেঙ্গল কর্তাদের।
গত ২৮ জুলাই কুমারটুলিতে শতবার্ষিকী পদযাত্রার মঞ্চে কিংফিসারের লোগো রাখা এবং ওই সংস্থার লোগো দেওয়া দশ হাজার জার্সি বিলি করে কোয়েস কর্ণধার অজিত আইজ্যাককে আরও চটিয়েছে ইস্ট বেঙ্গলের সাবেক কর্তারা।