লিডস, ২১ আগস্ট: ঘরের মাঠে অ্যাসেজ সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামছে ইংল্যান্ড। দুই ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে বড় বাধা হয়ে উঠেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ। এজবাস্টন টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি দলকে দুরন্ত জয় এনে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেও স্মিথ অসাধারণ ব্যাটিং করেন। তবে জোফ্রা আর্চারের বাউন্সারে গুরুতর চোট পাওয়ায় তিনি দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করতে পারেননি। এই ম্যাচেও তাঁকে ঝুঁকি নিয়ে খেলাতে চায়নি অস্ট্রেলিয়া। ফলে ইংল্যান্ডের সামনে সিরিজে সমতা ফেরানোর কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেল মনে করছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
বল বিকৃতিকাণ্ডের জেরে এক বছরের জন্য নির্বাসিত ছিলেন স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার। কয়েক মাস কম নির্বাসনদণ্ড ভোগ করতে হয়েছিল ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টকেও। তিন জনেই টেস্ট দলে কামব্যাক করেছেন। তবে স্মিথের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন অস্ট্রেলিয়ার অ্যাসেজ জেতার সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই এখন দেখার, তৃতীয় টেস্টে স্মিথের অভাব কীভাবে সামাল দেয় অজি টিম ম্যানেজমেন্ট। লর্ডসে দ্বিতীয় ইনিংসে ‘কনকাশান সাব’ হিসাবে স্মিথের জায়গা খেলেছিলেন মার্নাস লাবুশানে। বেশ ভালো ব্যাট করেছিলেন তিনি। তৃতীয় টেস্টে তিনিই খেলবেন। তবে জোফ্রা আর্চারের বিষাক্ত বাউন্সারে স্মিথ চোট পাওয়ার পর দুই দলের পেসারদের মধ্যে মনস্তাত্বিক একটা লড়াই শুরু হয়েছে। তার প্রভাব হয়তো পড়বে তৃতীয় টেস্টে। তবে অস্ট্রেলিয়ার কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার বলেছেন, ‘স্মিথ অধ্যায় পুরানো ঘটনা। আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে। মনে হয় না, দুই দলের পেসাররা বাউন্সারের লড়াইয়ে মাতবে।’
অস্ট্রেলিয়া এই ম্যাচে নামাচ্ছে দলের তিন তারকা পেসার প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউডকে। আসলে, ১৮ বছর পর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাসেজ সিরিজ জেতাটাকেই পাখির চোখ করেছে অস্ট্রেলিয়া। তাই কোচ ল্যাঙ্গার কোনওভাবেই চাইছেন না, লিড হাতছাড়া করতে। তাই ক্রিকেটারদের ফোকাস ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে, ইংল্যান্ডের ওপেনার জ্যাসন রয় অনুশীলনের সময় চোট পান। তাঁর কনকাশান টেস্ট হয়। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার মার্কাস ট্রেসকোথিক থ্রো-ডাউন দিচ্ছিলেন জ্যাসনকে। তখনই তিনি চোট পান। কোনও ঝুঁকি না নিতেই জ্যাসনের কনকাশান টেস্ট হয়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যান্ডের ওপেনারটির খেলতে কোনও সমস্যা নেই।
অ্যাসেজ সিরিজে টানা আটটি টেস্ট জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে জয়ের খরা কাটানোর সেরা সুযোগটা হয়তো জো রুটরা পেয়ে যেতে পারেন এই ম্যাচেই। ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ওপেন করবেন জ্যাসন রয় ও ররি বার্নস। তিনে নামবেন জো রুট। এই ম্যাচে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে হবে রুটকে। মিডল অর্ডারে ইংল্যান্ডের বড় ভরসা অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। তবে জো ডেনলি, জস বাটলার, জনি বেয়ারস্টোর মতো ব্যাটসম্যান আছেন, যাঁরা প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে দিতে পারবেন। তিন পেসার সম্ভবত ক্রিস ওকস, জোফ্রা আর্চার এবং স্টুয়ার্ট ব্রড। চোটের কারণে নেই জেমস অ্যান্ডারসন। একমাত্র স্পিনার হিসাবে খেলতে পারেন জ্যাক লিচ। হেডিংলে বরাবরই পেসারদের স্বর্গরাজ্য। এবারও তার অন্যথা হবে না বলেই মত দুই দলের। সেক্ষেত্রে পেসাররই হয়তো তৃতীয় টেস্টের ভাগ্য গড়ে দেবেন।