গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
মঙ্গলবার সকালে সল্টলেক স্টেডিয়ামের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে দলের অনুশীলনে বেশ খোশমেজাজে ছিলেন আলেজান্দ্রো। মিডিয়ার সঙ্গে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলেন। কলকাতার খাওয়া-দাওয়া ছিল তাঁর চর্চার বিষয়। এই শহরের সঙ্গে মাদ্রিদের মিল খুঁজে পেয়েছেন তিনি। খুবই প্রাণবন্ত দুটি শহর। দুই শহরের ফুটবল অনুরাগীরা যথেষ্ট আকর্ষণীয়। একই সঙ্গে কলকাতার খাবার দারুণ প্রিয় হয়ে উঠেছে আলেজান্দ্রোর কাছে। যেমন চুটিয়ে রসগোল্লা খেয়েছেন। মাংস, ডাল, লুচির সঙ্গে তাঁর বেশ ভাব জমে গিয়েছে। তবে বিদেশি কোচের এখন ইলিশ মাছ খাওয়া হয়ে ওঠেনি। ফুরফুরে মেজাজে থাকা আলেজান্দ্রো এদিন বললেন, ‘ম্যাচটা জয়ের লক্ষ্যেই খেলব। আমার দল লক্ষ্যে স্থির। সেমি-ফাইনালে ওঠার পর অন্য তিনটি দলই ট্রফি জয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে। আমরাও প্রস্তুত। তবে আমার ফুটবল দর্শন একটু অন্যরকম। জীবনে অনেক ম্যাচ জিতেছি, আবার হেরেছিও। জিতলে আবেগ আমাকে তাড়া করে না। তাই হারলেও জীবন থেমে যাবে না।’
প্রতিপক্ষ গোকুলামের খেলা দেখেননি আলেজান্দ্রো। তবে কেরলের দলের প্রধান গোলগেটার ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর স্ট্রাইকার মার্কাস জোসেফকে নিয়ে ময়দানে দারুণ চর্চা চলছে। ইতিমধ্যেই তাঁর নামের পাশে আট গোল রয়েছে। এই প্রসঙ্গে লাল-হলুদ কোচ সাফ বলেন, ‘বিপক্ষের সেরা ফুটবলারকে আটকাতে আমার যা পরিকল্পনা রয়েছে তা গোপনই থাক না। ম্যাচেই দেখতে পাবেন আমরা কতটা কী করতে পারি। তবে একজন প্লেয়ার সবসময় ম্যাচের রঙ বদলে দিতে পারে না। টিমগেমই হল আসল ব্যাপার।’
এই টুর্নামেন্টকেই বলেছিলেন আই লিগের প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট। এখন কী বলবেন? আলেজান্দ্রোর উত্তর, ‘প্রস্তুতি হলেও আমাদের লক্ষ্য, প্রতিটি ম্যাচ জেতা। ফুটবলারদের সবসময় একশো শতাংশ সেরাটা দিতে বলি। সেটা ঠিকঠাক হলেই তো সঠিক প্রস্তুতি বলা যায়।’ ইস্ট বেঙ্গল ও গোকুলাম, দুটি দলই ডুরান্ড কাপে অপরাজিত রয়েছে। তাই সেমি-ফাইনালে জিততে দুটি দলই আত্মবিশ্বাসী।
ইস্ট বেঙ্গল প্রায় চোটমুক্ত। একমাত্র অভিজিৎ সরকারের চোট রয়েছে। চোট সারিয়ে দলে ফিরে স্প্যানিশ অ্যাটাকার জেমি স্যান্টোস কোলাডো ইস্ট বেঙ্গলের বড় ভরসা। গোলের মধ্যে রয়েছেন টগবগে তরুণ বিদ্যাসাগর সিং। যিনি তিন ম্যাচে পাঁচ গোল করেছেন। গোকুলামের আক্রমণ সামাল দিতে মঙ্গলবার রক্ষণ সংগঠনে বেশি জোর দিয়েছেন আলেজান্দ্রো। তিনি বললেন, ‘কোলাডো খেললে পুরো দলটার খেলাই উন্নত হয়।’ সেমি-ফাইনালে দুই স্প্যানিশ কোচের লড়াই। তবে আলেজান্দ্রো তা মনে করেন না। তিনি মনে করেন, ফুটবলাররাই ম্যাচে আসল পার্থক্য গড়তে পারে। সেমি-ফাইনালে দুটি দলই তিন বিদেশি নিয়ে মাঠে নামছে। ইস্ট বেঙ্গলে যেমন বোরহা, কাসিম, কোলাডো রয়েছে। গোকুলামের তিন বিদেশি হলেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর ডিফেন্ডার আন্দ্রে এতিনি, ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ব্রুনো পেলিসেরি ও স্ট্রাইকার মার্কাস জোসেফ। তবে চোটের জন্য নেই গতবার মোহন বাগানে খেলে যাওয়া উগান্ডার ফরোয়ার্ড হেনরি কিসেকা। বুধবার সকালেও সল্টলেক প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে ক্লোজ ডোর ট্রেনিং করবে গোকুলাম।
মঙ্গলবার সকালে দুটি দলই সল্টলেক স্টেডিয়ামের অনুশীলন মাঠে প্র্যাকটিস করেছে। সোমবার বিকেলে ইস্ট বেঙ্গলের প্র্যাকটিস ভালো করে পর্যবেক্ষণ করেছেন গোকুলামের কোচ ফার্নান্দো ভালেরা। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য, ইস্ট বেঙ্গলের রক্ষণ। ডুরান্ড কাপে এখনও পর্যন্ত বিদেশি স্ট্রাইকারের বিপক্ষে খেলেননি ইস্ট বেঙ্গলের ডিফেন্ডাররা। ভালেরা বলেন, ‘আমরা টিমগেমের উপর জোর দিই। তাই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। ওদের রক্ষণের ভুলের ফায়দা তুলতে হবে।’
ইস্ট বেঙ্গলের প্রথম একাদশ হতে পারে, রালতে, কমলপ্রীত, বোরহা, আসির আখতার, অভিষেক আম্বেকর, কাসিম আইদারা, লালরিনডিকা রালতে, পিন্টু মাহাতা, ব্র্যান্ডন, কোলাডো, বিদ্যাসাগর সিং।
সল্টলেক স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু বিকেল তিনটে থেকে।
সরাসরি সম্প্রচার স্টার স্পোর্টস ৩, স্টার স্পোর্টস ১ বাংলা, হটস্টার।