ম্যাঞ্চেস্টার, ১০ জুলাই: মার্টিন গাপটিলের থ্রো স্টাম্প ভেঙে দিতেই যেন বুক ভেঙে গেল কোটি কোটি ভারতীয়ের। কারণ, জয়ের আশার শেষ সলতে মহেন্দ্র সিং ধোনি রান আউট! নায়ক থেকে মহানায়ক হওয়ার প্রত্যাশা পূরণ করতে না পেরে ‘ক্যাপ্টেন কুল’-এর চোখে জল! হতাশায় ভারতীয় সমর্থকদেরও যেন গলা বুঁজে এসেছে। অনেকেই চোখের জল সংবরণ করতে পারলেন না। কপালে হাত ধোনির জীবনের ছায়াসঙ্গী সাক্ষীরও। হতাশায় কপালে হাত রহিত, কোহলি সহ গোটা ভারতীয় শিবিরের। শেষ বিশ্বকাপে দেশের নীল জার্সি গায়ে যখন ধীর পায়ে মাঠ ছাড়ছেন ধোনি, তখন অনেকেই অস্ফূটে কুর্নিশ করলেন ভারতীয় ক্রিকেটের লড়াকু মানুষটিকে। সিঁড়ি বেয়ে ড্রেসিংরুমে ঢোকার সময় সতীর্থরাও করতালি দিয়ে তাঁর লড়াইকে অভিনন্দন জানালেন। কোচ রবি শাস্ত্রী এগিয়ে গিয়ে পিঠ চাপড়ে দিলেন। পরে অধিনায়ক বিরাট কোহলির মুখেও শোনা গেল রবীন্দ্র জাদেজা ও ধোনির মধ্যে ১১৬ রানের পার্টনারশিপের ভূয়সী প্রশংসা। যদিও তাতে শেষরক্ষা হয়নি। স্বপ্নভঙ্গের হতাশা বুকে নিয়েই স্টেডিয়াম ছাড়তে হয়েছে হাজার হাজার ভারতীয় সমর্থককে। ‘মেন ইন ব্লু’র এই ব্যর্থতা হজম করতে যেন কষ্ট হচ্ছিল মাঠে উপস্থিত শচীন তেন্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ভি ভি এস লক্ষ্মণদের।
প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলি জানালেন, ‘দু’দিন ব্যাপী এই সেমি-ফাইনালের প্রথমার্ধ ছিল অবশ্যই আমাদের। আমরা খুবই ভালো খেলেছি। আমরা যা চেয়েছি, তাই করতে পেরেছি। আমরা নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ২৩৯ রানে (আট উইকেটে) আটকে রাখতে পেরে ভেবেছিলাম, এই রান তোলা সম্ভব। কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু, ওরা দুর্দান্ত বল করে ম্যাচে তফাৎ গড়ে দিল। ৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটেরই চরম মাসুল দিতে হল আমাদের। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বোলিং স্কিল আমাদের যে চাপে ফেলে দিয়েছে, সেই চাপ কাটিয়ে আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি। জাড্ডু আর এমএস দুর্দান্ত লড়ল। দু’টি ম্যাচে জাড্ডু দারুণ পারফরম্যান্স করল। কিন্তু, নিউজিল্যান্ডের বোলাররা চাপের মধ্যেও ঠান্ডা মাথায়, অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে ঠিক জায়গায় বলটা রাখতে পেরেছে। সবচেয়ে বড় কথা উইকেট তুলে নিতে পেরেছে। আমাদের শট নির্বাচনও যথাযথ হয়নি। ফলে ওরা আমাদের আরও চাপের মুখে ফেলে দিতে পেরেছে। নক-আউটে অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে লড়াই করতে পেরেছে। যোগ্য দল হিসেবেই নিউজিল্যান্ড জিতেছে।’