লন্ডন, ১৮ জুন: কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে আইপিএলে দুরন্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরেছিলেন আন্দ্রে রাসেল। ইংল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে সেই সাফল্য ধরে রাখাই ছিল তাঁর লক্ষ্য। কিন্তু হাঁটুর চোট এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই রাসেলকে লক্ষ্যচ্যুত করেছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। বিগত তিন বছর ধরেই হাঁটুতে চোট নিয়েই খেলছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই তারকা ক্রিকেটার। চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিলেও ক্রিকেট থেকে দূরে থাকবেন না বলেই তা অগ্রাহ্য করেছেন রাসেল। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরপর তিন ওভার করেন তিনি। মাত্র চার রানের বিনিময়ে রাসেল তুলে নেন দু’টি মূল্যবান উইকেট। কিন্তু ওই বোলিংই তাঁর সর্বনাশের ঘণ্টা প্রথম বাজায়। সাদাম্পটনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডার তাঁকে পাঁচ ওভারের একটি স্পেল করান। আর তাতেই বাড়ে বিপত্তি। রাসেলের হাঁটুর যা অবস্থা তাতে একটানা দু’ওভারের বেশি বল করলেই তাঁর যন্ত্রণা শুরু হওয়ার কথা। চলতি বিশ্বকাপেও তাই হয়েছে। সেই ম্যাচে ব্যাট হাতে মাত্র ১৫ রান করার পরেই আউট হন তিনি। এই পর্বে তাঁর চোখেমুখে ছিল অস্বস্তির ছাপ। ম্যাচের পর হোল্ডারও স্বীকার করেন যে, পাঁচ ওভারের স্পেলে রাসেলকে ব্যবহার করা তাঁর ভুল হয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে রাসেলকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। উল্লেখ্য, সেই ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারে চতুর্থ বলের পরেই খোঁড়াতে থাকেন রাসেল। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবার বল করতে এলেও দু’ওভারের বেশি হাত ঘোরাতে পারেননি তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও একই অবস্থা হয়েছে রাসেলের। ছয় ওভার বল করলেও মাঝেমধ্যেই খোঁড়াতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এই চোট প্রভাব ফেলেছে রাসেলের ব্যাটিংয়ের উপরেও। দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থাকার জন্য যে ফিটনেসের প্রয়োজন তা এই মুহূর্তে নেই তাঁর। এছাড়া অতিরিক্ত টি-২০ ক্রিকেট খেলায় ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলার টেম্পারামেন্ট হারিয়েছেন রাসেল। টি-২০ ফরম্যাটে ১৫ বলে ৫০ করা আর একদিনের ম্যাচে ৫০ বলে ৮০-৯০ রান করার মধ্যে পার্থক্য অনেকটাই। কিন্তু ফিটনেস ও মানসিকতার অভাবের জন্য আইপিএলের সাফল্য বিশ্বকাপে রাসেলের কাছে অধরা।