বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
ওভালে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে যার শেষ নিদর্শন মিলেছে। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের গোড়ায় জশপ্রীত বুমরাহর বল ওয়ার্নারের ব্যাটে লেগে উইকেট স্পর্শ করে গেলেও বেল পড়েনি। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে মিচেল স্টার্কের ১৪৬ কিলোমিটার গতির ডেলিভারিতে উইকেটে বল লাগা সত্ত্বেও বেল পড়েনি। সেক্ষেত্রে বেঁচে যাওয়া ব্যাটসম্যানের নাম ক্রিস গেইল। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এভাবে বেল না পড়ায় বেঁচে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার কুইন্টন ডি’কক। আবার শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে একই ভাবে নিষ্কৃতি পান নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে। বল উইকেটে লাগা সত্ত্বেও বেল না পড়ার এতগুলি ঘটনায় রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে বিশ্বকাপে।
আইসিসি দাবি করছে, বিশ্বকাপে যে ‘জিং বেল’ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা সাধারণ কাঠের বেলের চেয়ে হাল্কা। তা হলে কেন বেল পড়ছে না, সেই রহস্য থাকছে। তা হলে কি স্টাম্পের ঘনত্ব বেশি হয়ে যাচ্ছে? ইংল্যান্ডের দুই প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন ও মাইকেল ভনের দাবি, অবিলম্বে এই নিয়ে ব্যবস্থা নিক আইসিসি। নাসের হুসেন বলেছেন, ‘প্রথমে সবাই ভেবেছিল, এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু প্রথম ১০ দিনের মধ্যে বিশ্বকাপে পাঁচবার এই ঘটনা ঘটেছে। উইকেটে বল লাগলেও বেল পড়েনি। এটা টুর্নামেন্টের জন্য মোটেই ইতিবাচক নয়। বড় ম্যাচে মোক্ষম সময়ে এভাবে কোনও ব্যাটসম্যান বেঁচে গেলে সেটা হবে অনৈতিক।’ একই ভাবে মাইকেল ভনের দাবি, প্রয়োজনে প্রযুক্তি বদল করা হোক। তিনি বলেন, ‘বেলে আলো জ্বলার দরকার নেই। বল লাগলে বেল পড়াটা ঢের বেশি জরুরি।’
ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি তো রীতিমতো সরব হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গত ম্যাচে বেল না পড়ার কারণে ওয়ার্নারের বেঁচে যাওয়া প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ওয়ার্নারের বেঁচে যাওয়াটা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হতে পারত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটা প্রত্যাশিত নয়। প্রযুক্তি অবশ্যই ভালো। কিন্তু তা যদি বিভ্রাটের কারণ হয়, তবে ভেবে দেখার বিষয়। বেল নিয়েও তেমনটা ঘটছে। বেলে হাত লাগলে আলো জ্বলছে। কিন্তু তাকে ফেলতে গেলে রীতিমতো ধাক্কা দিতে হচ্ছে উইকেটে। কোনও টিম চাইবে না, একটা ভালো বলে ব্যাটসম্যানকে আউট করার পরেও সে ক্রিজে থেকে যাক। আমি অন্তত এরকম কিছু আগে দেখিনি।’ কোহলি আরও বলেন, ‘আমরা স্টাম্প পরীক্ষা করেছি। সবই ঠিকঠাক আছে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? আমার কাছে কোনও ব্যাখ্যা নেই। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে বোলারদের ক্ষেত্রে এটা ঘটেছে, তারা সবাই ফাস্ট বোলার। তাতেও বেল পড়ছে না।’ বিরাটকে সমর্থন করেছেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিনচও। তিনি জানান, ‘এমন ঘটনা একটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। যত বিশ্বকাপ এগচ্ছে, ততই বাড়ছে বেল না পড়ে ব্যাটসম্যানের বেঁচে যাওয়ার ঘটনা। আমি জানি না, বেল কতটা হাল্কা হওয়া উচিত। তবে এটা নিয়ে এখনই ভাবা দরকার। বিশ্বকাপ সেমি-ফাইনাল বা ফাইনালে এভাবে কোনও ব্যাটসম্যান বেঁচে গেলে তার চেয়ে খারাপ কিছু হবে না।’
এদিকে, বিশ্বকাপে খারাপ আম্পায়ারিং নিয়েও বইছে বিতর্কের ঝড়। তাতে আরও মাত্রা জুগিয়েছে এ ব্যাপারে সমালোচনা চাপা দিতে আইসিসি’র বিশেষ নির্দেশিকা। প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি তথা ধারাভাষ্যকার মাইকেল হোল্ডিংকে এমনই একটি চিঠি পাঠিয়েছে আইসিসি। কারণ অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে আগের ম্যাচে খারাপ আম্পায়ারিং নিয়ে সরব হয়েছিলেন হোল্ডিং। তারপরই তাঁকে ই-মেল পাঠিয়ে আম্পায়ারিং নিয়ে মুখ না খোলার নির্দেশ দেয় ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। তারই পালটা জবাবে হোল্ডিং আইসিসি’কে জানান, ‘খারাপকে খারাপ বলার মধ্যে দোষের কিছু নেই। আমি যা বলেছি, ঠিকই বলেছি। এই আম্পায়াররা যদি ফুটবল বিশ্বকাপের রেফারি হত, তবে ফিফা ওদের আর একটা ম্যাচও পরিচালনা করতে দিত না। সাফ বলে দিত, খুব হয়েছে। এবার বাক্স-প্যাটরা বেঁধে বাড়ি যাও। আমি মনে করি, আইসিসি’রও এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত।’