কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
দেশের হয়ে ৪০টি টেস্ট, ৩০৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক এবং ৫৮টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন যুবরাজ। তিনি ছিলেন ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ এবং ২০১১ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। ২০১১ বিশ্বকাপে তিনি ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার পেয়েছিলেন। যুবরাজ বলেছেন, ‘আমি ভাগ্যবান, দেশের হয়ে চারশোর উপর ম্যাচ খেলতে পেরেছি। যখন প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন ভাবতেও পারিনি যে এমন একটা সুযোগ আমার সামনে আসবে।’ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের সেরা তিনটি মুহূর্ত হল— ২০১১ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রডকে ছ’বলে ছটি ছক্কা মারা (ডারবানের কিংসমিডের এই ম্যাচে তিনি ম্যাচের সেরা হন) এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে প্রথম শতরান (লাহোর, ২০০৪) করা। যুবরাজ বলেছেন, ক্রিকেটের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল একাধারে ভালোবাসা ও ঘৃণার। আমার কাছে ক্রিকেটের মূল্য কী ছিল, তা এভাবে এককথায় বলে বোঝানো যাবে না। ক্রিকেটই আমাকে লড়াই করতে শিখিয়েছে। আমি যতবার না সফল হয়েছি, তার থেকেও বেশিবার বোধহয় ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু, আমি কখনই হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নই।’ আর তাই মারণ রোগ ক্যান্সারের হাত থেকেও তিনি হাসিমুখেই বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
আন্তজার্তিক ক্রিকেটে তাঁর হাতেখড়ি সৌরভ গাঙ্গুলির অধিনায়কত্বেই। দিনটি ছিল ২০০০ সালের ৩ অক্টোবর। সেদিনই ভারতের জার্সি গায়ে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিকে খেলতে নামে যুবরাজ। ভারত ম্যাচটি জিতেছিল আট উইকেটে। টেস্ট ক্রিকেট তাঁর অভিষেক হয় ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। দেশের হয়ে তিনি শেষ টেস্ট এবং একদিনের ম্যাচটি খেলেছেন যথাক্রমে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ইংল্যান্ড এবং ২০১৭ সালের ৩০ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেক হয় ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে। দেশের হয়ে শেষ টি-২০ ম্যাচটি খেলেন ২০১৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
বীরেন্দ্র সেওয়াগ আক্ষেপ করেছেন, ‘ফেয়ারওয়েল ম্যাচ’ খেলার সুযোগ তিনি পাননি। যুবরাজ জানিয়েছেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল ইয়ো ইয়ো টেস্টে ব্যর্থ হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের জন্য একটা ফেয়ারওয়েল ম্যাচের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু আমি ইয়ো ইয়ো টেস্টে ফেল করিনি। তবে, ফেয়ারওয়েল ম্যাচ পেলাম না বলে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। ভি ভি এস লক্ষ্মণ, রাহুল দ্রাবিড়ের মতো গ্রেটরাও তো এই সুযোগ পায়নি!’
আইপিএলে ১৩২টি ম্যাচ খেলা যুবরাজ ২০১৫ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছে রেকর্ড ১৬ কোটি টাকা দর পেয়েছিলেন। সেই যুবরাজকেই এবারের (২০১৯) আইপিএলে মাত্র এক কোটি টাকায় কিনেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। খেলেছেন মাত্র চারটি ম্যাচে। তখনই বুঝে যান এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর সময় এসেছে। তাই, ক্রিকেটের জোরে ‘অর্জুন’(২০১২) এবং ‘পদ্মশ্রী’ (২০১৪) সম্মানে ভূষিত হওয়া যুবি অবসরের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা এদিন সেরেই ফেললেন।
কে কী বলছেন
বিরাট কোহলি: পাজি, দেশের হয়ে দুর্দান্ত কেরিয়ারের জন্য অভিনন্দন জানাই। তুমি আমাদের প্রচুর সাফল্য এবং স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছ। বাকি জীবন এবং সবকিছুর জন্য শুভেচ্ছা রইল।
স্টুয়ার্ট ব্রড: কিংবদন্তি! অবসর জীবন উপভোগ কর।
কেভিন পিটারসেন: অবসর জীবন শুভ হোক! দারুণ উল্লেখযোগ্য কেরিয়ার! প্রচুর সাফল্য আবার বেশ কিছু ব্যর্থতা! নীল জার্সি গায়ে তোমার ধৈর্য্য, সাহস ও প্রতিভার সাক্ষর রয়েছে। ভালোবাসা রইল।
বীরেন্দ্র সেওয়াগ: খেলোয়াড় আসবে, যাবে। কিন্তু, যুবরাজের মতো ক্রিকেটার অত্যন্ত বিরল। অনেক খারাপ সময় কাটিয়ে উঠেছে। মারণ রোগ এবং বিপক্ষ বোলারকে শাসন করে অসংখ্য হৃদয় জয় করেছে। অনেকের কাছেই ও অনুপ্রেরণা। শুভেচ্ছা রইল।
গৌতম গম্ভীর: অসাধারণ কেরিয়ারের জন্য অভিনন্দন প্রিন্স! তুমি ছিলে সাদা বলে খেলা দেশের সেরা ক্রিকেটার। তোমার কেরিয়ারকে সম্মান জানাতে বিসিসিআইয়ের উচিত ১২ নম্বর জার্সিটি সংরক্ষণ করা। ইস, তোমার মতো যদি ক্রিকেটটা খেলতে পারতাম! ধন্যবাদ!
সাইনা নেহওয়াল: ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন! আমরা তোমাকে খুব মিস করব! তুমি আমাদের স্মরণীয় মুহূর্ত এবং দুরন্ত জয় উপহার দিয়েছ। আগামী জীবনের জন্য প্রচুর শুভেচ্ছা রইল!
বিজেন্দর সিং: ক্রিকেট মাঠে তোমার অভাব অনুভব করব।
ভি ভি এস লক্ষ্মণ: যুবির সঙ্গে খেলা সত্যিই দারুণ আনন্দের! ক্রিকেটের ইতিহাসে তুমি অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবেই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। লড়াকু মেজাজ ও প্রতিভার জোরে তুমি আমাদের সকলের কাছেই অনুপ্রেরণা। গুড লাক!
মহম্মদ কাইফ: ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা ম্যাচ উইনারদের অন্যতম! বাইশ গজে লড়াকু ক্রিকেট মেলে ধরে দেশকে প্রচুর সাফল্য এনে দিয়েছে। দেশের জন্য যা করেছে, তার জন্য সকলেই গর্বিত!