পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
বিরাট কোহলি: একা বিরাট কোহলি ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে দেবে, এমনটা ভাবা উচিত নয়। ব্যক্তিগত নৈপুণ্য অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু শুধু তা দিয়েই চ্যাম্পিয়ন হওয়া যায় না। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিরাটের পাশাপাশি বাকিদেরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপে বিরাট অবশ্যই স্তম্ভ। আশা করি, ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে ভিকে ছন্দেই থাকবে। কিন্তু বিরাট নির্ভরতা যেন ভারতকে গ্রাস না করে। ২০০৭ ছাড়া বাকি সব বিশ্বকাপেই আমি রান পেয়েছিলাম। কিন্তু এই ট্রফির স্বাদ পাওয়ার জন্য ২০১১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। সেবার টিম ইন্ডিয়া বিশ্বসেরা হয়েছে দলগত সংহতির জোরেই।
নম্বর ফোর: চার নম্বর নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এই পজিশনে ব্যাট করার জন্য ভারতীয় দলে একাধিক ব্যাটসম্যান রয়েছে। বিশ্বকাপের আগে অনেকেই এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমি তাঁদের দলে নই। চার নম্বর একটি ব্যাটিং পজিশন মাত্র। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়। পরিস্থিতি বিচার করে সেকেন্ড ডাউনে ব্যাটসম্যান নামানো উচিত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের ছেলেরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। প্রত্যেকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনও বটে। তাই শুধু চার কেন, ছয় ও আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ম্যাচ জেতানোর লোক টিম ইন্ডিয়ায় রয়েছে। শুধু পরিস্থিতি বিচার করে প্রয়োজনীয় ব্যাটসম্যানকে নামাতে হবে।
ব্যাটিং সহায়ক উইকেট: দু’টি নতুন বল ব্যবহার এবং ইংল্যান্ডের ফ্ল্যাট পিচ অবশ্যই বোলারদের কাছে দুঃস্বপ্ন। সদ্যসমাপ্ত ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট বোঝা যাবে। বল পুরানো না হলে রিভার্স স্যুইং সম্ভব নয়। একদিনের ক্রিকেটে রিভার্স স্যুইং হতে আপনি শেষ কবে দেখেছেন? আমাদের খেলার সময় একটা নতুন বল ব্যবহার হত। ফলে ২৮-৩০ ওভার থেকেই বোলাররা রিভার্স স্যুইং করাতে পারত। কোনও কোনও বোলার তো তারও আগে এই ধরনের ডেলিভারি করে চমকে দিত। ডেথ ওভারে বল নরম হত। পাশাপাশি রংও বদলে যেত। সেই চ্যালেঞ্জ সামলানোর জন্য ব্যাটসম্যানরা লড়াই করেছে। আর এখন বল নরমই হয় না। ফলে রান তোলা অনেকটাই সহজ। ফ্ল্যাট পিচে সাদা কোকাবুরা বল মুভ করে না। আর ইদানীং ইংল্যান্ডের পিচ ব্যাটসম্যানদের কাছে স্বর্গ। একটা দল ৩৫০ রান করেও জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছে না। পরে ব্যাট করে ৪৫ ওভারের মধ্যে সেই রান তুলে দিচ্ছে প্রতিপক্ষ। এরকম চলতে থাকলে আখেরে ক্ষতি ক্রিকেটেরই। এই ব্যাপারে সবাইকেই ভাবতে হবে। বোলিং সহায়ক উইকেট তৈরি করা কিংবা একটা নতুন বল ব্যবহারের নিয়মে ফিরে গেলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। না হলে তো বোলারদের কিছুই করার থাকছে না।
কুলদীপ ও চাহাল: এই বিশ্বকাপে রিস্ট স্পিনারদের পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা সহজে খেললেও কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের উপর আমার ভরসা রয়েছে। এই সিরিজের কথা ভুলে দিয়ে বোলিং উপভোগ করুক দু’জনে। তাহলেই হবে। মানছি, অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা ওদের ভালো খেলেছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ইংল্যান্ডের মাটিতেও তারই পুনরাবৃত্তি হবে। মুরলীধরন সাধারণত দু’রকম ডেলিভারি করত।
ট্র্যাডিশনাল অফ স্পিন ও দুসরা। ব্যাটসম্যানরা তা বুঝতেও পারত। কিন্তু তাতে কি মুরলীর উইকেট সংখ্যা কমেছে? অবশ্যই নয়। বল কতটা ঘুরবে বা বাঁক খাবে সেই হিসাব ব্যাটসম্যানরা সবসময় করতে পারে না। ধরুন আপনি ভাবলেন বল ঘুরবে চার ইঞ্চি। সেই অনুযায়ী ব্যাট বাড়ালেন। কিন্তু আপনাকে অবাক করে বল আট ইঞ্চি ঘুরল। তখন তো বিট হওয়া বা উইকেট দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। পেসারদের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। আপনি জানেন, সে আউট স্যুইঙ্গার করে। বল অফ স্টাপের আশেপাশে পড়ে বেরিয়ে যাবে। তা সত্ত্বেও তো কিপার বা স্লিপের হাতে খোঁচা দিয়ে ব্যাটসম্যানরা প্যাভিলিয়নে ফেরে। তাই কুলদীপ ও যুজবেন্দ্র এই বিশ্বকাপে প্রতিপক্ষকে ভুলের ফাঁদে ফেলবে বলেই আমার বিশ্বাস।
তারুণ্য ও অভিজ্ঞতা: ভারতীয় দলে ভারসাম্যের অভাব নেই। আট-দশ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছে এমন অনেকেই রয়েছে। পাশাপাশি কুলদীপ-লোকেশ রাহুল, চাহাল, হার্দিক, যশপ্রীত বুমরাহদের মতো প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন ক্রিকেটারের উপস্থিতি টিম ইন্ডিয়ার সম্পদ। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপে ভারতের ভালো ফলের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।